img

নতুন ৫ দাবি যোগ করে আলটিমেটাম ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের

প্রকাশিত :  ১৬:২৩, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

নতুন ৫ দাবি যোগ করে আলটিমেটাম ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের

এক মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরুসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। পূর্বঘোষিত আলটিমেটাম প্রত্যাহার করলেও পাঁচ দফা দাবিতে নতুন করে আবারও ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা। 

আজ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সাড়ে ছয়টায় ঢাকা কলেজে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে নতুন এই আলটিমেটাম ঘোষণা করেন তারা।

ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, সাত কলেজের সামনে দিয়ে ঢাবির পরিবহন চলাচল করতে পারবে না, এমন সিদ্ধান্ত থেকে আমরা সরে এসেছি। আমরা চাই না এ বিষয় নিয়ে নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ুক।

 সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, চূড়ান্ত কোনো সমাধান এখনো হয়নি। আমরা মনে করছি যাদের কারণে আমাদের সহপাঠীরা আহত হয়েছেন তাদের সুষ্ঠু বিচার না করে কোনো সমাধান সম্ভব নয়। দেশের কথা চিন্তা করে এবং অস্থিতিশীল পরিবেশ যাতে তৈরি না হয় সেজন্য পূর্বঘোষিত আলটিমেটাম সাত শিক্ষার্থীরা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তবে যারা আঘাত করেছে তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম বহাল থাকবে।

কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী জাকারিয়া বারী বলেন, যারা আমাদের ভাইদের রক্ত ঝরিয়েছে তাদের সঙ্গে কীসের সমাধান। আমরা এমনি এমনি তাদের রক্ত ডিঙিয়ে সমাধান করতে পারি না। তাছাড়া স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠনে ১৫ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছি এবং ১ তারিখ থেকে সকল প্রকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বিশেষ করে ক্লাস এবং পরীক্ষা শুরুর ব্যবস্থা করতে হবে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ভাঙচুর এবং থানা ঘেরাও কর্মসূচি আমরা প্রত্যাহার করেছি।

এছাড়া আহত ও প্রো-ভিসির কার্যালয়ে অপমানের শিকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে সমাধান বের করার চেষ্টা কররা হবে বলেও জানান তারা।

এক মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরুসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি

 ১. শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের রূপরেখা দিতে হবে।

 ২. এক মাসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মধ্যদিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করতে হবে।

 ৩. পূর্বঘোষিত রুটিনের মধ্যদিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা চলমান রাখতে হবে।

 ৪. বিশ্ববিদ্যালয় কার্যক্রম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সব বর্ষের শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

 ৫. সংকট নিরসনে শিক্ষার্থী, সাত কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের কমিটিসহ অন্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে দুইদিনের মধ্যে টেবিলটকের আয়েঅজন করতে হবে।  

শিক্ষা এর আরও খবর

img

আবরার ফাহাদ হত্যায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৫ জনের যাবজ্জীবন বহাল

প্রকাশিত :  ০৬:১৫, ১৬ মার্চ ২০২৫

বহুল আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৫ জনের যাবজ্জীবনের আদেশ বহাল রাখা হয়েছে।

রোববার (১৬ মার্চ) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে বি রুমি, জহিরুল ইসলাম সুমন, নূর মোহাম্মদ আজমী, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার সুমাইয়া আজিজ উপস্থিত ছিলেন।

আসামিপক্ষে আইনজীবী মাসুদ হাসান চৌধুরী, আজিজুর রহমান দুলু উপস্থিত ছিলেন। আদালতকক্ষে আবরার ফাহাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিই বিভাগ, ১৩তম ব্যাচ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার অপু (মেকানিক্যাল ইঞ্জনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির (ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ), সদস্য মোজাহিদুর রহমান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাজেদুর রহমান মাজেদ (এমএমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), খন্দকার তাবাক্কারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল, ১৭তম ব্যাচ), মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), এস এম নাজমুস সাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মিজানুর রহমান (ওয়াটার রিসোসের্স, ১৬ ব্যাচ), শামছুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল) এবং এসএম মাহামুদ সেতু (কেমিকৌশল)।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ৫ আসামি হলেন— বুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (১৪তম ব্যাচ, সিই বিভাগ), গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না (মেকানিক্যাল, তৃতীয় বর্ষ), আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), সদস্য আকাশ হোসেন (সিই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) ও মোয়াজ আবু হোরায়রা (সিএসই, ১৭ ব্যাচ)।

এর আগে আজ বেলা ১১টায় আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের রায় ঘোষণা শুরু হয়। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা শুরু হয়। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান রায় পাঠ করে শোনান।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষ হয়। তার আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয়। গত বছরের অক্টোবর মাসে এ মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স দ্রুত শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এ উদ্যোগ নেন।

২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স ও মামলার নথি হাইকোর্টে আসে। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে ৬ হাজার ৬২৭ পৃষ্ঠার ডেথ রেফারেন্স ও মামলার যাবতীয় নথি হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পাঠানো হয়। এরপর আসামিরা দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে ফৌজদারি আপিল ও জেল আপিল করেন। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে তা অনুমোদনের জন্য মামলার যাবতীয় কার্যক্রম উচ্চ আদালতে পাঠাতে হয়। দণ্ডিত আসামিরা উচ্চ আদালতে ফৌজদারি আপিল এবং জেল আপিল করতে পারেন।

২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালত আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবনের আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরদিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। মাত্র ৩৭ দিনে তদন্ত শেষ করে একই বছরের ১৩ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান।