img

চোখের পাতা কাঁপে কেন? বিজ্ঞান কি বলে?

প্রকাশিত :  ১২:০০, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

চোখের পাতা কাঁপে কেন? বিজ্ঞান কি বলে?

চোখের পাতা কাঁপা বা লাফানো নিয়ে অনেক কুসংস্কার প্রচলিত আছে আমাদের দেশে। হঠাৎ চোখ কেঁপে ওঠা বা লাফিয়ে ওঠাকে খারাপ কোনো অঘটনের সঙ্গে তুলনা করে থাকেন অনেকেই। যদিও এর কোনোটাই সত্যি নয়। চোখের পাতা কাঁপার রয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক কারণ। মূলত আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যার কারণে এমনটা হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত-

১. মানসিক চাপের কারণে

চোখের পাতা কাঁপতে পারে মানসিক চাপের কারণেও। প্রতিদিনের নানা সমস্যার কারণে মানসিক চাপ আসা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সেখান থেকে দেখা দিতে পারে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা। চোখের পাতা কাঁপা বা লাফানো মানসিক চাপের লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পেতে পারে।

২. ঘুমের অভাব হলে

সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন সাত-আট ঘণ্টা ঘুম জরুরি। ব্যস্ততার কারণে অনেক সময় প্রয়োজনীয় ঘুম হয় না অনেকেরই। যে কারণে থেকে যায় ঘুমের ঘাটতি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ কারণেও ক্লান্তি থেকে চোখের পাতা লাফাতে পারে। সেজন্য দরকার পরিমিত ঘুম। এতে চোখের পাতা লাফানোর সমস্যা সেরে যাবে।

৩. চোখের সমস্যার কারণে

চোখের সমস্যার কারণেও এটি হতে পারে। দৃষ্টিগত কোনো সমস্যা থাকলে সে কারণে চোখের ওপর চাপ পড়ে। যেমন ধরুন অনেকক্ষণ ধরে টিভি, কম্পিউটার, কিংবা ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে তা দৃষ্টিতে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই চোখের পাতা কাঁপার সমস্যা থেকে বাঁচতে এ ধরনের অভ্যাস সীমিত করুন।

৪. অতিরিক্ত ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল গ্রহণ করলে

অতিরিক্ত ক্যাফেইন বা অ্যালকোহল গ্রহণের অভ্যাস রয়েছে কারও কারও। এর ফলেও চোখের পাতা কেঁপে উঠতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল অতিরিক্ত সেবন করলে মিয়োকোমিয়া হতে পারে। তাই এ ধরনের অভ্যাস বাদ দেওয়াই উত্তম।

৫. পুষ্টির ভারসাম্যহীনতা

আমাদের শরীরের জন্য সঠিক পুষ্টি জরুরি। অনেক সময় শরীরে পুষ্টির ভারসাম্য না থাকলে সে কারণে চোখ লাফাতে পারে। বিশেষ করে কারও শরীরে যদি ম্যাগনেসিয়ামের অভাব হয় তাহলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এ ধরনের সমস্যা এড়াতে এবং সেইসঙ্গে সার্বিকভাবে সুস্থ থাকতে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার প্রতিদিন খাওয়ার অভ্যাস করুন।

img

রোজায় গর্ভবতী নারীদের করণীয়

প্রকাশিত :  ১২:৫৯, ১৪ মার্চ ২০২৫

সলমানদের জন্য রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ। গর্ভাবস্থায় রোজা রাখা যাবে কি না—এ নিয়ে অনেক হবু মা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগে থাকেন।

গর্ভস্থ শিশুর মেধা বিকাশ ও বেড়ে ওঠা অনেকাংশে নির্ভর করে গর্ভবতীর সঠিক পুষ্টিপ্রাপ্তির ওপর। এ সময় রোজা রাখা যাবে কি না, তা নির্ভর করে হবু মা ও তাঁর গর্ভস্থ শিশুর সুস্থতার ওপর। এছাড়া ইসলাম ধর্মে গর্ভবতীর রোজা রাখার ওপর শিথিলতা রয়েছে। 

গর্ভবতীরা কখন রোজা রাখতে পারবে?

গর্ভকালীন প্রথম তিন মাস শিশুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গঠিত হয়। তাই এ সময় মায়ের শরীরে সঠিক মাত্রার পুষ্টি সরবরাহ জরুরি। তাই পুষ্টিবিদের মতে, গর্ভের প্রথম তিন মাস রোজা না রাখাই ভালো। তবে রাখতে চাইলেও ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত প্রচুর পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।

মধ্যবর্তী ৩ মাস বা সেকেন্ড ট্রাইমেস্টার এ মা ও গর্ভস্থ শিশুর কোনো শারীরিক জটিলতা না থাকলে এ সময় মায়ের রোজা রাখতে কোনো বাধা নেই। তবে তার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

তবে প্রথম তিন মাসের মতো শেষ তিন মাসও বেশ স্পর্শকাতর সময়। এ সময় শিশুর দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে, তাই সঠিক নিয়মে খাওয়াদাওয়া ও পুষ্টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ সময় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া রোজা না রাখাই ভালো।

গর্ভবতী রোজা রাখলে করণীয়

সাহরি ও ইফতারে পুষ্টিকর খাবার: গর্ভবতী অবস্থায় রোজা রাখলে অবশ্যই ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে ফলমূল, শাকসবজি, ফলের রস দিয়ে তৈরি শরবত বেশি করে খেতে হবে। যাতে করে মা ও শিশু দুইজনের পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত হয়।

প্রচুর পানি পান: গর্ভবতী মায়েদের ইফতার ও সাহ্‌রিতে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। গর্ভাবস্থায় যাতে কোনভাবেই পানিশূন্যতা তৈরি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।

চাকরিজীবী গর্ভবতী: গর্ভাবস্থায় রোজা রেখে বাসার বাইরে দীর্ঘসময় যাদের ডিউটি করতে হয়, তারা ইফতারের সময় ওরস্যালাইন বা ডাবের পানি খেতে পারেন। এতে পানিশূন্যতা ও দুর্বলতা কমবে। বাসার তৈরি খাবার যতটা খাওয়া যায় ততটাই ভালো।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম: গর্ভাবস্থায় রোজা রাখলে দুশ্চিন্তামুক্ত ও প্রশান্ত থাকতে হবে, বিশ্রামের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে হবে এবং পরিশ্রম কমিয়ে দিতে হবে। বিশেষ করে সম্ভব হলে দিনে দুই ঘণ্টা বিশ্রাম ও রাতে আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।

যা খাবেন: গর্ভবতী মায়েরা সাহরিতে খাদ্যতালিকায় খেজুর, বাদাম, দুধ, ডিম, ওটমিল, ফলমূল, ভাত, সবজি খাবেন। আর ইফতারে খেজুর, শরবত, ফল, স্যুপ, ভাত, মাছ, মাংস, ডাল ইত্যাদি খেতে পারেন। কোনভাবেই ভাজাপোড়া খাওয়া উচিত হবে না।

চিকিৎসকের পরামর্শ: যেকোনো গর্ভবতীই রোজা রাখার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া উচিত। এছাড়া রোজা রাখার সময় কোন সমস্যা হলে বা কোন ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলা উচিত।