কুয়াশাচ্ছন্ন ঢাকায় নামতে না পেরে ফ্লাইট গেল সিলেট-কলকাতা
প্রকাশিত :
০৫:৫৭, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
মধ্যরাত থেকেঘন কুয়াশার কারণে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আকাশ ঝাপসা ছিল। স্পষ্টভাবে রানওয়ে না দেখতে পেরে ৬টি ফ্লাইট অবতরণ করতে পারেনি বিমানবন্দরে। এর মধ্যে ৩টি ফ্লাইট সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও ওপর ৩টি কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়ে অবতরণ করে।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর জানায়, কুয়াশার কারণে মধ্যরাত ফ্লাইট চলাচল ব্যাহত হয়। এসময় অনেক ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ে উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারেনি।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) মধ্যরাত আড়াইটা থেকে সোমবার সকাল ৯ পর্যন্ত চলে এই অবস্থা।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, মধ্যরাতে কুয়েত সিটি থেকে আসা কুয়েত এয়ারওয়েজের ২টি ফ্লাইট ও ওমানের মাস্কাট থেকে আসা সালাম এয়ারের ফ্লাইটটি ঢাকায় নামতে না পেরে কলকাতায় চলে যায়। পরবর্তীতে সকাল ৯টার পর তারা ঢাকায় অবতরণ করে।
এদিকে ঘন কুয়াশার মধ্যরাত থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত প্রায় ১৬টি ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ে ঢাকায় অবতরণ করতে পারেনি। তাদের মধ্যে রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুবাই, মাস্কাট, রোম, জেদ্দা ফ্লাইট, এমিরেটস এয়ারলাইন্সের দুবাই, গাল্ফ এয়ারের বাহরাইন, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের দুবাই, দোহা, শারজাহ, জেদ্দা, সিঙ্গাপুর, ড্রুক এয়ারের পারো থেকে আসাসহ আরও বেশ কয়েকটি রুটের ফ্লাইট।
শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইমলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘন কুয়াশার জন্য কয়েকটি ফ্লাইট ডাইভার্ট করে সিলেট ও কলকাতা পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে (সকাল ১০ টায় রিপোর্টটি লেখার সময়) ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে একসঙ্গে অনেক ফ্লাইট উড্ডয়ন ও অবতরণের অপেক্ষায় থাকায় বিমানবন্দরের রানওয়েতে কিছুটা ট্রাফিকের সৃষ্টি হয়েছে।
জানুয়ারির শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘন কুয়াশা ও শীত অনুভূত হচ্ছে। কুয়াশা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সংগ্রাম দত্ত: বাংলাদেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলে থাকা উল্লুক (Western Hoolock Gibbon) ও চশমাপরা হনুমান (Phayre’s Langur) এর সংখ্যা পাচার, বিদ্যুৎপৃষ্ট, সড়কে মারা যাওয়া, খাদ্য সংকট, বনাঞ্চল দখল ও উজাড় হওয়া ইত্যাদির কারণে আশঙ্কাজনকভাবে কমছে।
প্রাইমেটস ইন পেরিল: দ্য ওয়ার্ল্ডস টুয়েন্টিফাইভ মোস্ট এনডেঞ্জারড প্রাইমেটস’ (২০২৩-২৫) শীর্ষক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে এই তথ্য এসেছে।
প্রতিবেদনে বিশ্বের সবচেয়ে বিপন্ন ২৫টি প্রাইমেটের উল্লেখ আছে। এর বাইরে আরও বেশ কিছু প্রাইমেটের নাম প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলো বিপন্ন বলে বিবেচিত। এগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের উল্লুক ও চশমাপরা হনুমান রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চশমাপরা হনুমানের বিস্তার বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলে সীমিত হয়ে পড়েছে। প্রজাতিটির সঠিক সংখ্যার নির্ভরযোগ্য হিসাব পাওয়া যায় না। তবে ধারণা করা হচ্ছে, গত তিন প্রজন্মে প্রজাতিটির সংখ্যা ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। বাংলাদেশ ও ভারতে শিকারসহ বাসস্থান ধ্বংসের কারণে এই প্রজাতির অনেকগুলো ইতিমধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এ ছাড়া পাচার, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া ও সড়কে মারা যাওয়ার কারণে এই প্রজাতিটি হারিয়ে যাচ্ছে। প্রজাতিটি দুই দশক ধরে আইইউসিএনের বিপন্ন প্রজাতির লাল তালিকায় রয়েছে।
২০২৫ সালে জার্মান প্রাইমেট সেন্টারের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সিলেটের বনাঞ্চলে মাত্র ৪৮৪টি চশমাপরা হনুমানের অস্তিত্ব আছে। হবিগঞ্জের সাতছড়ি, রেমা-কালেঙ্গা এবং মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া, আদমপুর, পাথারিয়া ও সাগরনাল বনে এসব হনুমান টিকে আছে।
‘প্রাইমেটস ইন পেরিল’ শীর্ষক প্রকাশিতব্য প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল (আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম), মিয়ানমারের ইরাবতী ও চিন্দুইন নদীর পশ্চিম অঞ্চলে উল্লুক দেখা যায়। আবাসস্থল ক্রমাগত ধ্বংস হওয়া, শিকার ও চোরাচালান এই প্রাণীর অস্তিত্বের জন্য প্রধান হুমকি। বাংলাদেশ ও ভারতে প্রাণীটির সংখ্যা কমছে। তবে মিয়ানমারে প্রাণীটির সংখ্যা স্থিতিশীল বলে ধরা যেতে পারে। প্রজাতিটি রক্ষায় সব প্রচেষ্টা নিতে হবে। এই উল্লুক আইইউসিএনের বিপন্ন প্রজাতির লাল তালিকায় রয়েছে। ২০০৮ সালের ‘প্রাইমেটস ইন পেরিল’ তালিকার প্রথম ২৫ টির মধ্যে উল্লুক ছিল।
২০২০ সালে উল্লুক নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের এক গবেষণায় দেখা যায়, ১৯৮০ সালে দেশে উল্লুকের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার। সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ৪৬৮টিতে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের উল্লুকের বসবাস উপযোগী জায়গা আছে মাত্র ২৯৪ বর্গকিলোমিটার।
এই গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাবিবুন নাহার বলেন, একসময় দেশের ২২টি বনে উল্লুক পাওয়া যেত। ১০টি বন থেকে এখন উল্লুক বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে যাওয়া, পাচার ও সামাজিক বনায়নকে এই দুই প্রজাতির প্রাইমেটের জন্য হুমকি মনে করেন হাবিবুন নাহার। তিনি বলেন, উল্লুক ও হনুমান গাছের ওপর থাকে। তাদের খাদ্য গাছের পাতা। তাই গাছ না থাকলে তারা টিকে থাকবে না।
উল্লুক হলো গিবন (হাইলোবাটিডি) পরিবারের দুইটি প্রজাতির প্রাণীর সাধারণ নাম।
উল্লুক গিবন জাতের প্রাইমেটদের মধ্যে আকারে দ্বিতীয় বৃহত্তম। বৃহত্তমটি সিয়ামাং। এদের দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০ হতে ৯০ সেন্টিমিটার, এবং ওজন ৬ হতে ৯ কেজি। পুরুষ উল্লুক আর মেয়ে উল্লুক আকারে প্রায় একই সমান হলেও এদের গাত্রবর্ণের মধ্যে বেশ পার্থক্য রয়েছে। পুরুষদের গায়ের রং কালো কিন্তু দর্শনীয় সাদা ভ্রু রয়েছে। অন্যদিকে মেয়ে উল্লুকের সারা গায়ে আছে ধূসর-বাদামী লোম। গলা ও ঘাড়ের কাছে লোমগুলো আরো বেশি কালো। এছাড়া মেয়ে উল্লুকের চোখ ও মুখের চারপাশে গোল হয়ে সাদা লোমে আবৃত থাকে যা অনেকটা মুখোশের মতো দেখায়।
প্রায় ছয়/সাত মাসের গর্ভাবস্থা শেষে শিশু উল্লুকের জন্ম হয়। জন্মের সময় এদের গায়ে ঘোলাটে সাদা লোম থাকে। ছয় মাস পর তা লিঙ্গ অনুসারে কালো বা বাদামি ধূসর রং ধারণ করে। জন্মের ৮ থেকে ৯ বছর পর একটি উল্লুক প্রাপ্তবয়স্ক হয়। উল্লুকের আয়ুষ্কাল ২৫ বছর।
উল্লুকরা মূলত বিভিন্ন ধরনের ফল ও ডুমুর খায়। তবে পতঙ্গ, ফুল, কচি পাতা ইত্যাদিও খায়।
উল্লুক সাধারণত সামাজিক হয়ে থাকে এবং পরিবারবদ্ধভাবে বসবাস করে। একটি পরিবারে মা ও বাবা উল্লুকসহ তিন-চারটি বা এর বেশিও উল্লুক থাকতে পারে। এরা উঁচু গাছের মাথায় থাকতে পছন্দ করে। লম্বা হাত ও পায়ের সাহায্যে এরা এক গাছ থেকে আরেক গাছে যাওয়া-আসা করে। উচ্চস্বরে শব্দ করে এরা নিজেদের এলাকা থেকে অন্য উল্লুকদের সরিয়ে রাখে এবং পরিবারের সদস্যদের অবস্থান নির্ধারণ করে। উল্লুক পরিবারগুলো তাদের এলাকা ও এর সীমানা রক্ষা করে চলে এবং প্রায়ই উল্লুক পরিবারগুলোর মধ্যে সীমানা ও খাদ্যের উৎসের অধিকার নিয়ে বিরোধ ও ঝগড়া হয়।
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব বৃহত্তর সিলেট ও দক্ষিণ-পূর্ব চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার বন ছাড়াও ভারত (উত্তর-পূর্বাংশ), মিয়ানমার (পশ্চিমাংশ) এবং চীনেও (দক্ষিণাংশে) উল্লুক দেখা যায়। তবে অধুনা বাংলাদেশের সিলেটের একমাত্র মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়ার বনেই রয়েছে বিপন্ন প্রজাতির উল্লুক (Hoolock Gibbon)। বর্তমানে পৃথিবীজুড়ে এ উল্লুক বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। লাউয়াছড়ার বনেও এদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমছে।
গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সময়ে উল্লুকের প্রজাতিতে অনেক পরিবর্তন হয়েছে।
চশমাপরা হনুমান ( Phayre\'s Leaf Monkey) ও বৈজ্ঞানিক নাম (Trachypithecus phayrei) হচ্ছে হনুমানের একটি বিশেষ জাত। এর অন্য নাম ফ্যায়র্স ল্যাঙ্গুর (Phayre\'s Langur)। কালো হনুমান বা কালা বান্দর নামেও পরিচিত।
বাংলাদেশে মহাবিপন্ন চশমাপরা হনুমান। বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
চশমাপরা হনুমান আকারে অনেক ছোট। এদের দেহের তুলনায় লেজ বড় হয়ে থাকে। স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে চশমাপরা হনুমান মাথা থেকে লেজের গোড়া পর্যন্ত লম্বায় ৫৫-৬৫ সেন্টিমিটার; লেজ ৬৫-৮০ সেন্টিমিটার। গায়ের লোমের রং মেটে বাদামি থেকে কালচে বাদামি। পেট আর বুকের রং সাদাটে। চোখের চারপাশের লোম সাদা রঙের হয়ে থাকে বলেই মনে হয় চশমা পরে আছে। মুখের রংও হয় সাদা। প্রাপ্তবয়স্ক চশমাপরা হনুমানের মাথার লোম বেশ বড় হয়, দেখলে পরচুলা পরে আছে বলে মনে হয়। হাত-পায়ের রং কালো হয়ে থাকে। বাচ্চা রং হয় সাদা, গোলাপি আর বাদামির মিশ্রণে।
অন্য হনুমানের চেয়ে এরা লাজুক প্রকৃতির। দিনের বেলায় ঘন বনের ছায়াযুক্ত স্থানে বিচরণ করতে পছন্দ করে। সহজে এরা মাটিতে নামে না।
এরা দল বেঁধে চলাফেরা করলেও সহসা এদের চোখে পড়ে না। দলে বাচ্চাসহ সাত-আটটি হনুমান থাকে একটি পুরুষ হনুমানের নেতৃত্বে। তবে দলে কোনো পুরুষ হনুমান দলপতি হবার যোগ্যতাসম্পন্ন হয়ে উঠলে বিদ্যমান পুরুষ দলনেতা অনেক সময় নেতৃত্ব বজায় রাখতে মা হনুমানকে দ্রুত ঋতুমতি করার জন্য বাচ্চাদের মেরে ফেলে। এই পরিকল্পনায় আগের দলপতির বংশ নাশের একটি পরিকল্পনাও থাকে এই হত্যাকান্ডে।
চশমাপরা হনুমান গাছের কচি পাতা, ফুল, ফল, বীজ, কীটপতঙ্গ, পাখির ডিম খেয়ে জীবনধারণ করে। পানির চাহিদা মেটাতে এরা শিশির লেগে থাকা পাতা চাটে অথবা পানিবহুল লতাগুল্ম খায়।
জানুয়ারি থেকে এপ্রিল প্রজননকাল। স্ত্রী ১৫০-২০০ দিন গর্ভধারণের পর একটি বাচ্চা প্রসব করে। গড়ে প্রতি দু’বছরে একবার বাচ্চা দেয়। বাচ্চারা ৪-৫ মাস বয়স থেকেই শক্ত খাবার খাওয়া শুরু করে। পুরুষ ৫-৬ ও স্ত্রী ৩-৪ বছর বয়সে প্রজননক্ষম হয়। আয়ুষ্কাল প্রায় ২০ বছর। পুরুষ হনুমান প্রজনন বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করে।
চশমাপরা হনুমান বৃক্ষবাসী, কখনই মাটিতে নামে না। ঘুম, চলাফেরা, খাবার সংগ্রহ, খেলাধুলা, বিশ্রাম সবকিছু গাছেই সম্পন্ন করে। সচরাচর একটি শক্তিশালী পুরুষের নেতৃত্বে ১০-১৫টি একটি দলে বিচরণ করে। চশমাপরা হনুমান চিরহরিৎ বনের প্রাণী। সাধারণত বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, চীন, থাইল্যান্ড, লাওস প্রভৃতি দেশে দেখা যায় এদের। বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তবর্তী বন, বিশেষ করে লাউয়াছড়া, রেমা-কালেঙ্গা, সাতছড়ি, পাবলাখালি, কাপ্তাইয়ের বনে চশমাপরা হনুমান দেখতে পাওয়া যায়। তবে বাংলাদেশের জঙ্গলগুলো ছোট আর ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় চশমাপরা হনুমান আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে।
সিলেটে বনবিভাগের প্রায় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৭১৪ একর জমির মধ্যে প্রায় ৫৮ হাজার একরই বেদখলে রয়েছে। নতুন করেও বেদখল হচ্ছে অনেক জমি। প্রায় এক তৃতীয়াংশ জমি বেদখলে থাকলেও তা উদ্ধারে বনবিভাগের তৎপরতা সামান্যই বলে \"দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড\" গত ১১ এপ্রিল ২০২১ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে । অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে
একশ্রেণীর প্রভাব প্রতিপত্তিশালী লোকজন অবৈধভাবে দখল করে জনবসতি স্থাপনের কারণে বিগত অর্ধশত বছরে সিলেট বনাঞ্চলের পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্ট বনাঞ্চলের আয়তন ১ হাজার ১৫২ বর্গ কিলোমিটার থেকে মাত্র ১৩৫ বর্গকিলোমিটারে নেমে এসেছে বলে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় খবর বেরিয়েছে। যা\' বন্যপ্রাণি ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি।
লাউয়াছড়া বনাঞ্চলসহ মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা ও জুড়ী বনাঞ্চলে ও হবিগঞ্জ জেলার রেমা কেলেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বিগত বছরগুলোতে চশমাপরা হনুমান এর মৃত্যুর খবর বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রকাশ পেয়েছে।
বিগত পাঁচ দশকে উপর লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ( যা এক সময়ে ভানুগাছ পাহাড় ) এ একশ্রেণীর প্রভাব প্রতিপত্তিশালী গোষ্ঠী সঙ্ঘবদ্ধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে
বনাঞ্চলে ঢুকে বনাঞ্চলের বিভিন্ন মূল্যবান গাছ,বাঁশসহ বনাঞ্চলের মূল্যবান গাছ কেটে উজাড় করেছে। এসব কার্যকলাপের জড়িত অনেকে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক ও জনপ্রতিনিধি বনে বড় বড় রাজনৈতিক দলের নেতা সেজেছেন বলে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ইতিপূর্বেই খবর বেরিয়েছে।
সঙ্ঘবদ্ধ প্রভাবশালী গোষ্ঠী বনাঞ্চল দখল করে বসতি স্থাপন, রিসোর্ট ও চা বাগান তৈরি, বনজ সম্পদ ধ্বংস করার কারণে বন্যপ্রাণীরে খাদ্য সংকট দেখা দেয়ায় বন্যপ্রাণী খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে ছুটি আসছে। অনেক সময় মানুষের হাতে বা সড়কে গাড়ির চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বেশিরভাগই মানুষের হাতে ধরা পড়ছে।
শ্রীমঙ্গল থানার বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে বাসা বাড়িতে, ক্ষেতের ফসলে, মাঠে ও ঝোপঝাড়ে বিষাক্ত সাপসহ বিভিন্ন ধরনের বন্য প্রাণী ধরা পড়ার খবর পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন- শ্রীমঙ্গল দীর্ঘ দেড় যুগের উপর শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও তার আশপাশ এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন রকমের প্রায় সাত শতাধিকের উপরে বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে স্থানীয় বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে জানা গেছে।