img

শুল্ক আরোপ: অতঃপর পিছু হটলেন ট্রাম্প

প্রকাশিত :  ০৪:১২, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

শুল্ক আরোপ: অতঃপর পিছু হটলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে শুল্ক আরোপ এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন । অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার ঠেকাতে দেশ দুটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সমঝোতার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর বিশ্বে স্টক মার্কেটে মন্দা দেখা দেয়। শুধু তাই নয়, বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে, ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের পর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেনবাউম শুল্ক স্থগিত করার বিষয়ে সমঝোতায় আসেন।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, মেক্সিকো ১০ হাজার সেনা পাঠানোর জন্য রাজি হয়েছে। কানাডাও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নেবে। এছাড়া, মেক্সিকো ও কানাডা ফেনটানিলের মতো মাদক পাচার ঠেকাতে সহযোগিতা করবে।

ট্রাম্প বলেন, শুল্ক আরোপ নিয়ে চূড়ান্ত চুক্তির জন্য আলোচনা চলবে। তিনি চীনের সঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আলোচনা করবেন, যাতে নতুন শুল্ক আরোপ এড়ানো যায়।

কানাডা, চীন ও মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রের বড় তিনটি বাণিজ্যিক অংশীদার। গত শনিবার কানাডা, মেক্সিকো ও চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপের আদেশ দেন ট্রাম্প। শনিবার এ-সংক্রান্ত তিনটি পৃথক নির্বাহী আদেশে সই করেন ট্রাম্প। এ আদেশ স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। 

অর্থনীতি এর আরও খবর

img

গরীব ঋণ নিল, ঋণও রইল—রিকশাও গেল! বড়লোক চিল করে রেডিসনে—এটাই কি নিয়ম?

প্রকাশিত :  ১০:৫২, ১৪ মে ২০২৫

সকালবেলা শহর জেগে ওঠে; কিন্তু সেই জাগরণ সবার জন্য সমান নয়। কেউ উঠে এসির ঠাণ্ডায়, কেউ উঠে ভাঙা চালার নিচে। একজনের সকাল শুরু হয় কফি আর সংবাদপত্র হাতে, অন্যজনের শুরু হয় ভাঙা ছাতার তলায়—বুকভরা ঋণ আর মনের হাজারো দুশ্চিন্তা নিয়ে। এই বৈষম্যের শহরে সূর্য একই হলেও ভাগ্য একেবারে আলাদা।  

শহরের একপাশে বড়লোকদের চিন্তা চলে—\"কীভাবে ব্যাটারিচালিত রিকশার বাজারে মুনাফা বাড়ানো যায়!\" তারা বিদেশ থেকে রিকশা আমদানি করে, ফ্যাশনেবল ডিজাইন করে গরীবের কাছে বিক্রি করে। কাস্টমসে শুল্ক দেয়, মুনাফা গুণে নেয়, নাম দেয় \"ব্যবসা\"।  

অন্যপাশে একজন গরীব মানুষ, যে দিনের পর দিন পায়ে হেঁটে শেষ সম্বল জড়ো করে কিংবা এনজিওর উচ্চসুদের ঋণ নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা কিনেছে। সে স্বপ্ন দেখে—এই রিকশাই তাকে বাঁচাবে। ভাবে, \"মেয়েটাকে স্কুলে পাঠাব, বউকে একদিন চিকেন খাওয়াব, ভাঙা চালা বদলে দেব।\"  

কিন্তু বাস্তব নিষ্ঠুর। কয়েকদিন না যেতেই ট্রাফিক পুলিশ থানার সামনে হুঁশিয়ারি দেয়:  

\"এই রিকশা অবৈধ! লাইসেন্স নেই—ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ!\"  

রিকশা জব্দ করে নিয়ে যায়; থানায় জমা হয়, মামলা হয়।  

পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটি চোখে পানি নিয়ে বলে,  

\"স্যার, ঋণ করে কিনেছি… এটা ছাড়া সংসার চলে না…\"  

কিন্তু কেউ মন গলায় না। কেউ বলে না, \"এই দিনমজুরের পাশে দাঁড়াও!\" রিকশা গেল, ঋণ রয়ে গেল।  

ওদিকে সেই বড়লোক, যে রিকশা আমদানি করে বিপুল মুনাফা করে সে এখন রেডিসনের সুইমিংপুলের পাশে মদের গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছে:  

\"In retro mood—rickshaw nostalgia!\"

পেছনে আরামকেদারা, সামনে সিগারেট—চিল! 

প্রশ্ন ওঠে:  

যে রিকশা বানাল, সে \'উদ্যোক্তা\'; আর যে চালাল, সে \'অবৈধ\'?  

যে টাকা গুণল, তার \'মুনাফা\'; আর যে ঘাম ঝরাল, সে \'ঝামেলা\'?  

রাষ্ট্র শুধু বড়লোকের ব্যবসা রক্ষার জন্য?  

আইন শুধু গরীব দমনের হাতিয়ার?  

নীতিনির্ধারকদের চোখে শুধু ধনীদের স্বার্থ?  

একজন গরীব সম্মান নিয়ে বাঁচতে চাইল—কেন তাকে লাঞ্ছিত হতে হয়?  

রিকশা গেল, আয় বন্ধ হল, কিন্তু ঋণ রয়ে গেল।  

শুধু টাকা নয়—  

তার স্বপ্ন ভাঙল, ভরসা হারাল, মানসিক শক্তি নিঃশেষ হল।  

কেউ কি জিজ্ঞাসা করে?

এই পরিবার এখন কী খাবে?  

শিশুটির স্কুলের খরচ জোগাবে কে?  

অন্ধকারে নতুন করে দাঁড়াবে কীভাবে?  

এই অন্যায় কতদিন? 

গরীবের ঘাম \'অবৈধ\' আর স্বপ্ন \'আবর্জনা\' হওয়ার দিন শেষ কবে?  

এটি শুধু আর্থিক বৈষম্য নয়—এটি শ্রেণীভিত্তিক অবিচার,  

মানবাধিকারের লঙ্ঘন,  

রাষ্ট্রের নীরব ষড়যন্ত্র।  

চূড়ান্ত প্রশ্ন:

এই দেশে গরীবের বেঁচে থাকার অধিকার আছে কি?  

নাকি তারা শুধু \'ব্যবহারযোগ্য\'—ভোটের সংখ্যা, শ্রমের যন্ত্র?  

সময় এসেছে প্রতিবাদের: 

গরীবের কান্নাকে গুরুত্ব দেওয়ার।  

চিলের বিরুদ্ধে কান্নার সংগ্রাম গড়ে তোলার।  

স্বপ্ন:

একটি সমাজ যেখানে রিকশাওয়ালার মুখে সম্মান,  

আর বড়লোকের চিলের মধ্যেও ন্যায়বোধ থাকবে।


লেখক : রেজুয়ান আহম্মেদ