img

গাজা উপত্যকার দখল নেবে যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

প্রকাশিত :  ০৪:৪৮, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

গাজা উপত্যকার দখল নেবে যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে হোয়াইট হাউসে স্বাগত জানিয়েছেন। তার দ্বিতীয় মেয়াদে এটিই প্রথম কোনো বিদেশি নেতার সফর। কিন্তু মঙ্গলবারের (৪ ফেব্রুয়ারি) বৈঠকটি বিতর্কিত করে ট্রাম্পের এক বক্তব্য।

সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, নেতানিয়াহুর সঙ্গে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার ভবিষ্যৎ এবং ফিলিস্তিনিদের উপত্যকা থেকে অন্যত্র সরানো নিয়ে আলোচনা করেন ট্রাম্প। ওই আলোচনায় আবারও গাজা নিয়ে উচ্চাভিলাষী প্রস্তাব দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ওই ধরনের প্রস্তাব তিনি যুদ্ধবিরতির পর থেকে দিয়ে আসছেন।

ট্রাম্প বলেন, গাজার একটি গ্যারান্টি হলো- তারা (ফিলিস্তিনিরা) শেষ পর্যন্ত মারা যাবে। একই জিনিস (যুদ্ধ) আবার ঘটতে চলেছে । এটা বারবার ঘটেছে এবং এটা আবার ঘটতে চলেছে। তাই আমি আশা করি, আমরা এমন কিছু করতে পারব যে- সেখানে (গাজায়) তারা ফিরে যেতে চাইবে না। কে ফিরে যেতে চাইবে? সেখানে তারা মৃত্যু এবং ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই পেয়েছে।

ট্রাম্প আরও প্রস্তাব দেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো গাজাকে জনশূন্য করে দখল করা। এরপর আগামী কয়েক বছরে এখানে মনোরম পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। তিনি বলেন, আমি একটি দীর্ঘমেয়াদি মালিকানার কথা বলছি। আমি দেখতে পাচ্ছি এর মাধ্যমে সম্ভবত সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে দুর্দান্ত স্থিতিশীলতা আসবে।

তিনি আরও বলেন, এটি হালকাভাবে নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত না। আমি যাদের সাথে কথা বলেছি তারা সবাই এই ধারণাটি পছন্দ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র সেই জমির মালিক হবে, উন্নয়ন করবে এবং হাজার হাজার কর্মসংস্থান তৈরি করবে।

এর আগেও ট্রাম্প একই ধরনের প্রস্তাব দেন। গত জানুয়ারির শেষ দিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের মিসর ও জর্ডানে পাঠানোর কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার মতে, গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের মিসর এবং জর্ডানে স্থানান্তরিত করা উচিত।

ট্রাম্প বলেছিলেন, আমরা মিসর ও জর্ডান দেশের জন্য অনেক কিছু করি এবং তারা এটি করবে। এর আগেও ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির পর ট্রাম্প গাজা ‘খালি’ করার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছিলেন। তার মতে, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে মিসর বা জর্ডানের মতো ‘নিরাপদ’ স্থানে স্থানান্তর করা উচিত।


আন্তর্জাতিক এর আরও খবর

img

কর্নেল সোফিয়াকে ‘জঙ্গিদের বোন’ বলে বিতর্কের মুখে বিজেপি মন্ত্রী

প্রকাশিত :  ০৯:১২, ১৪ মে ২০২৫

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে ভারতের অপারেশন সিঁদুরের অন্যতম মুখ ছিলেন কর্নেল সোফিয়া কুরেশি। কিন্তু মুসলিম হওয়ায় তাকে ‘জঙ্গিদের বোন’ (অর্থাৎ পাকিস্তানের বোন) বলে বিতর্ক তৈরি করেছেন ভারতের মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বিজয় শাহ। তার এই মন্তব্যের জন্য বিজেপির সমালোচনা করছে তৃণমূল ও কংগ্রেস।

সোমবার ইন্দোরে এক জনসভায় ভাষণে তিনি এই মন্তব্য করেন। 

কংগ্রেস এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও শেয়ার করেছে। তাতে বিজয় শাহ বলছেন, ‘সিঁদুর মুছে আমাদের বোন-মেয়েদের অসম্মান করেছে জঙ্গিরা। আমরা পালটা জবাব দেওয়ার জন্য তাদের বোনকেই পাঠিয়েছি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘পেহেলগামে জঙ্গিরা ধর্ম জানতে জামাকাপড় খুলিয়ে পরীক্ষা করেছে। তারপর গুলি করে মেরেছে। মোদি নিজে তো সেকাজ করতে পারবেন না। তাই জঙ্গিদের সম্প্রদায়েরই বোনকে পাঠিয়েছেন শাস্তি দেওয়ার জন্য।’ 

বিজেপি নেতার এই মন্তব্যের সমালোচনা করে অবিলম্বে তাকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের দাবি তুলেছে তৃণমূল। তারা জানিয়েছেন, এটাই বিজেপির আসল রূপ। ওরা বিদ্বেষে এতটাই ব্যস্ত যে ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাকেও বিষাক্ত ধর্মান্ধতার শিকার হতে হচ্ছে। বিজেপির যদি এতটুকুও লজ্জা থাকে, তাহলে কর্নেল সোফিয়া ও দেশের সশস্ত্র বাহিনীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুক।  

একই সুরে কংগ্রেস, ভারতের কন্যা কর্নেল সোফিয়াকে নিয়ে গোটা দেশ গর্বিত। কিন্তু, বিজেপি নেতা তাকে নিয়ে অত্যন্ত অসম্মানজনক মন্তব্য করেছেন। এটা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর অপমান। এরপরই বিজেপিকে উদ্দেশ করে কংগ্রেসের কটাক্ষ, বিজয় শাহ নিজেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করেন। এখন বিজেপি কি তার পদত্যাগ চাইবে? এই ধরনের জঘন্য মানসিকতার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও শীর্ষ বিজেপি নেতারা কি ক্ষমা চাইবেন? নাকি বিজয় শাহকে পুরস্কৃত করা হবে?  

প্রসঙ্গত, ভিডিওতে কোথাও সোফিয়ার নাম করেননি মন্ত্রী। কিন্তু, তিনি যে বারবার কর্নেলকেই নিশানা করেছেন, সে ব্যাপারে নিশ্চিত কংগ্রেস নেতৃত্ব।  

তবে বিজেপি নেতা বিজয় শাহ সমোলাচনার মুখে বলেছেন, তার মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, কাশ্মীরের পেহেলগামে কথিত সন্ত্রাসী হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দেশটির অভ্যন্তরে হামলা চালায় ভারত। ‘অপারেশন সিঁদুর’ শীর্ষক অভিযানে পাকিস্তানের অন্তত ৩৫ নাগরিকের মৃত্যুসহ বেশ কিছু ক্ষতি হয়। এর জবাবে পাকিস্তানও ভারতের অভ্যন্তরে ‘বুনিয়ানুম মারসুস’ অভিযান পরিচালনা করে। এতে ভারতেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই দেশ। এরপর থেকেই ৮৭ ঘণ্টার যুদ্ধে উভয়পক্ষই বিজয়ী দাবি করে আসছে। ভারতীয় সেনাদের বিজয়গাথা মুখে মুখে ফিরছে দেশটির জনগণের।

সূত্র: নিউজ১৮