img

গাজা নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা ‘জাতিগত নিধন’র সামিল

প্রকাশিত :  ০৬:০২, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৬:০৭, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

গাজা নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা ‘জাতিগত নিধন’র সামিল

গাজাবাসীদের স্থানান্তর ও ফিলিস্তিনি উপত্যকাটির অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা ‘জাতিগত নিধন’র সামিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। 

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদক ফারনাজ ফাসিহির গাজা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে এ উত্তর দেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

আজ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদক ফারনাজ ফাসিহির প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজার জনসংখ্যা স্থানান্তর এবং ফিলিস্তিনি উপত্যকার উন্নয়নে ট্রাম্পের পরিকল্পনা ‘জাতিগত নিধন’র সামিল হবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) নিউইয়র্ক টাইমসের জাতিসংঘ ব্যুরো প্রধান ফাসিহি আর জানান, গুতেরেস বলেছেন,‘ ট্রাম্পের পরিকল্পনা চিরকালের জন্য একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনাকে অসম্ভব করার ঝুঁকি তৈরি করেছে। ’

এর আগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে গাজা নিয়ে ন্যক্কারজনক মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা ‘দখল’ করবে এবং এটি পুনর্গঠন করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেবে। তিনি বলেন, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া এই উপত্যকা পুনর্নির্মাণ করে ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটানো হবে, যা বিপুলসংখ্যক কর্মসংস্থান ও আবাসন সৃষ্টি করবে।    

ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র গাজা দখল করবে এবং আমরা এটিকে পুনর্গঠন করব। আমরা সেখানে থাকা বিপজ্জনক বোমা ও অন্যান্য অস্ত্র ধ্বংস করব, বিধ্বস্ত ভবনগুলো সরিয়ে ফেলব, মাটি সমান করব এবং এমন একটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাব যা মানুষকে বিপুল কর্মসংস্থান ও বাসস্থান দেবে।’  

তবে তিনি স্পষ্ট করেননি, এই কর্মসংস্থান কার জন্য হবে, কারণ তিনি একইসঙ্গে গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দেওয়ার পক্ষেও অবস্থান নিয়েছেন।    

তিনি বলেন, ‘আমি নাটকীয় কিছু বলতে চাই না, মজার কিছু বলতেও চাই না।’ এরপর তিনি গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ বানানোর ইচ্ছার কথা জানান এবং বলেন, ‘এটি একেবারে অপূর্ব হতে পারে।’   

তিনি আশা প্রকাশ করেন, বর্তমান গাজা যুদ্ধবিরতি একটি দীর্ঘমেয়াদী শান্তির দিকে নিয়ে যাবে, যা ‘রক্তপাত ও হত্যাযজ্ঞ স্থায়ীভাবে বন্ধ করবে।’   


img

২ দিনের সফরে পাকিস্তানে এরদোগান

প্রকাশিত :  ০৫:৪৫, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বিমানবন্দরে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। ছবি: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক্স হ্যান্ডেলে থেকে নেওয়া

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের আমন্ত্রণে দুই দিনের সরকারি সফরে ইসলামাবাদে পৌঁছেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ঊচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল। খবর জিও নিউজ, সামা টিভির

গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে রাওয়ালপিন্ডির নূর খান এয়ারবেসে অবতরণ করেন এরদোগান। বিমানবন্দরে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান পাকিস্তানের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এ সময় সেখানে ছিলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, ফার্স্ট লেডি আসিফা ভুট্টো, উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ, তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারারসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। 

তুরস্কের প্রেসিডেন্টের আগমন উপলক্ষে ২১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে সম্মাননা জানানো হয়। এর আগে  পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশের সময় তার বিমানকে এসকর্ট করে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর জেট ফাইটার। প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সঙ্গে তার স্ত্রী, তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনে এরদোগানসহ উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন। 

দুই শিশু ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত হয়ে প্রেসিডেন্ট এরদোগান ও ফার্স্ট লেডিকে ফুলের তোড়া উপহার দেন। বিমানবন্দরের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সামরিক ব্যান্ডের পরিবেশনা এবং পাকিস্তান ও তুরস্কের জাতীয় পতাকা হাতে শিশুদের উচ্ছ্বাস ছিল, যা দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতীক হয়ে ওঠে।  

দুই দিনের সফরে প্রেসিডেন্ট এরদোগান ও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেবেন। সফরের মূল অংশ হিসেবে পাকিস্তান-তুরস্ক উচ্চ পর্যায়ের কৌশলগত সহযোগিতা পরিষদের (এইচএলএসসিসি) সপ্তম বৈঠকে সহ-সভাপতিত্ব করবেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান ও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ। 

এই বৈঠকের পর একটি যৌথ ঘোষণা দেওয়া হবে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে। দুই নেতা এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনেও বক্তব্য রাখবেন। প্রেসিডেন্ট এরদোগান পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান-তুরস্ক বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরামেও ভাষণ দেবেন। এতে উভয় দেশের শীর্ষ বিনিয়োগকারী, করপোরেট সংস্থা ও ব্যবসায়ী নেতারা অংশ নেবেন।  

প্রসঙ্গত, এইচএলএসসিসি পাকিস্তান ও তুরস্কের মধ্যে সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী প্ল্যাটফর্ম, যা কৌশলগত দিকনির্দেশনা প্রদান করে এবং যৌথ কমিটিগুলোর কার্যক্রম তদারকি করে। এই পরিষদ বাণিজ্য, বিনিয়োগ, ব্যাংকিং, সংস্কৃতি, পর্যটন, জ্বালানি, প্রতিরক্ষা, কৃষি, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে। 

এর আগে ছয়টি এইচএলএসসিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ ১৩-১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে ইসলামাবাদে আয়োজিত হয়েছিল।