img

বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকের তথ্য ও মানচিত্র নিয়ে চীনের আপত্তি

প্রকাশিত :  ১৮:০০, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকের তথ্য ও মানচিত্র নিয়ে চীনের আপত্তি

বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তর ও পাঠ্যপুস্তকে এশিয়ার মানচিত্রে অরুণাচল এবং চীনের দখলে থাকা ‘আকসাই চীন’কে দেখানো হয়েছে ভারতের অংশে। তবে চীনের দাবি, এগুলো অরুণাচল ও কাশ্মীর নয়, এটি ‘জ্যাংনান’ এবং ‘আকসাই চীন’, যা চীনের অংশ। বাংলাদেশের এ ক্ষেত্রে তথ্য বিভ্রাট হয়েছে দাবি করে চিঠি দিয়েছে দেশটি। এ ছাড়া হংকং ও তাইওয়ানকে চীনের অংশ না দেখিয়ে আলাদা করে বাণিজ্যের বিষয়টি উল্লেখ করায় সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বেইজিং। 

বাংলাদেশের জরিপ অধিদপ্তরের মানচিত্রের পাশাপাশি ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এবং স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ভুল তথ্য নিয়ে চীন ও ভারত সীমান্ত ইস্যুতে গত নভেম্বরের শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকাকে জানায় বেইজিং। 

দেশটি বলছে, মানচিত্রে অরুণাচলের অংশকে ভারতের দেখানো হয়েছে, তা চীনের জ্যাংনান। আর কাশ্মীরের যে অংশটিকে ভারতের দেখানো হয়েছে, তা জিংজিয়াং প্রদেশের আকসাই চীন, যা দীর্ঘদিন ধরে চীনের দখলে রয়েছে। ‘জ্যাংনান’ এবং ‘আকসাই চীন’ বহু বছর ধরেই চীনের অংশ– এমন দাবি করে বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে বেইজিং। 

এর পাশাপাশি নবম শ্রেণির বইয়ে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য-সংক্রান্ত বিষয়ে হংকং এবং তাইওয়ানের সঙ্গে বাণিজ্য আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে চীন একই চিঠিতে বলেছে, হংকং ও তাইওয়ান চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

বিষয়টি নিয়ে চীন নিজেদের আপত্তির কথা বেশ কিছুদিন আগে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা। নাম না প্রকাশের শর্তে তিনি সমকালকে বলেন, পাঠ্যবইয়ে কিছু লেখা ও মানচিত্র নিয়ে চীনের আপত্তি ছিল। এ নিয়ে একাধিকবার ঢাকার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে দেশটি। চীনের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। তবে তারা এমন সময় বিষয়টি জানিয়েছে, ততদিনে নতুন বই ছাপার প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেছে। আগামীতে বিষয়গুলোকে আমলে নেওয়া হবে বলে তাদের জানানো হয়েছে। বেইজিং ঢাকাকে প্রতিশ্রুত ‘এক চীন নীতি’ বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে এতে অটল থাকতে আহ্বান জানিয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে পাঠ্যবইয়ে এগুলো এভাবেই ছাপা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের আগে এ বিষয়গুলো নিয়ে কখনও আপত্তি তোলেনি চীন। তবে শেখ হাসিনার পতনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনে বিষয়টি সামনে এনেছে। আর এসব বই এতদিন ভারতেই ছাপা হতো।

এ বিষয়ে জানতে ঢাকার চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে দূতাবাসের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, চীন ও ভারতের সীমান্ত কখনোই মীমাংসিত হয়নি। জ্যাংনান সব সময়ই চীনের অংশ ছিল, যা একটি অনস্বীকার্য মৌলিক সত্য। তাই চীনের ভূখণ্ডে তথাকথিত ‘অরুণাচল প্রদেশ’ স্থাপন করা অবৈধ।

এদিকে জ্যাংনান নিয়ে চীনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, এটি প্রথম নয়, চীন এমন চেষ্টা অনেক দিন ধরে করছে। চীনের দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে ভারত। অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে ও থাকবে। 

ঢাকায় চীনের এক কূটনীতিক সমকালকে বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সীমান্ত কখনোই ভাগাভাগি হয়নি। এটি এখনও অমীমাংসিত। বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকে মানচিত্রের সংশোধনের বিষয়টি নিয়ে সরকারের সঙ্গে কাজ করছি। আশা করছি, এটি সমাধানে পথ খুঁজে পাব। এটির সমাধানে আমরা সঠিক মানচিত্র বাংলাদেশকে দিয়েছি।


শিক্ষা এর আরও খবর

img

এবার দাখিল পরীক্ষার সূচি পরিবর্তন, নতুন রুটিন প্রকাশ

প্রকাশিত :  ১০:২২, ২৬ মার্চ ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১০:২৪, ২৬ মার্চ ২০২৫

এসএসসির পর এবার ২০২৫ সালের দাখিল পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে। এরইমধ্যে সময়সূচি পরিবর্তন করে নতুন রুটিন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। সংশোধিত সময়সূচি অনুযায়ী, আগামী ১০ এপ্রিল থেকে দাখিল পরীক্ষা শুরু হবে।

আজ বুধবার (২৬ মার্চ) মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসানের স্বাক্ষরিত নতুন সময়সূচি প্রকাশ করা হয়।

পরীক্ষার নতুন রুটিন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আগের সূচির তুলনায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে।

১. বাংলা প্রথম পত্র: পূর্বনির্ধারিত ২০ এপ্রিলের পরীক্ষা এক দিন পিছিয়ে ২১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে।

২. উচ্চতর গণিত (তত্ত্বীয়): পূর্বনির্ধারিত ১২ মে’র পরিবর্তে এখন ১৫ মে অনুষ্ঠিত হবে।

এ দুটি পরিবর্তন ছাড়া আগের রুটিনের অন্যান্য তারিখ ও সময় অপরিবর্তিত রয়েছে।

তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ১৬ মে থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হবে। শিক্ষার্থীদের অবশ্যই ২০ মের মধ্যে ব্যবহারিক পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে।

২০২৫ সালের দাখিল পরীক্ষা ১০ এপ্রিল শুরু হবে, যেদিন এসএসসি পরীক্ষাও শুরু হবে। প্রথম দিনে পরীক্ষার্থীরা কুরআন মাজিদ ও তাজভিদ বিষয়ের পরীক্ষা দেবে।

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার মোট ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেবে। একই সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে।

পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার নতুন রুটিন সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং সংশোধিত তারিখ অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে। বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরীক্ষায় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সকল পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষার হলে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা পরিচালনার জন্য ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। প্রশ্নফাঁসসহ যেকোনো অনিয়ম রোধে বিশেষ নজরদারি থাকবে। শিক্ষার্থীদেরও সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পরীক্ষার সর্বশেষ আপডেট ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে শিক্ষার্থীদের বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট নিয়মিত পরিদর্শনের অনুরোধ করা হয়েছে।