img

ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নৃশংস পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল: ফলকার টুর্ক

প্রকাশিত :  ১২:২৯, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৫:০৭, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নৃশংস পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল: ফলকার টুর্ক

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক বলেছেন, জনবিরোধিতার মুখে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে পরিকল্পিত নৃশংস পদক্ষেপ নিয়েছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে টুর্কের এমন বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের সময় আওয়ামী লীগের সহিংস কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বাংলাদেশের সাবেক সরকার এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত ছিল। ক্ষমতায় থাকার জন্য সাবেক সরকার ক্রমাগত সহিংস পথ ব্যবহার করে পদ্ধতিগতভাবে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করেছিল।

ফলকার টুর্ক বলেন, ‘বিক্ষোভ দমন করার কৌশলের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জ্ঞাতসারে, তাদের সমন্বয় ও নির্দেশনায় শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচার গ্রেপ্তার ও আটক এবং নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যে সাক্ষ্য এবং প্রমাণ সংগ্রহ করেছি, তা ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সহিংসতা এবং নিশানা করে হত্যার এক উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরে। যা সবচেয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার মধ্যে পড়ে এবং যা আন্তর্জাতিক অপরাধের শামিল বলেও বিবেচিত হতে পারে।’

প্রাণহানির ঘটনাগুলো নিয়ে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় গত সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশে একটি প্রতিনিধিদল পাঠায়। ওই প্রতিনিধিদলে ছিলেন মানবাধিকারবিষয়ক তদন্তকারী, একজন ফরেনসিক চিকিৎসক এবং একজন অস্ত্র বিশেষজ্ঞ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার তদন্তকাজে ব্যাপক সহযোগিতা করেছে। যেখানে যেখানে প্রবেশাধিকার চাওয়া হয়েছে, সেখানে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে এবং যথেষ্ট নথিপত্র সরবরাহ করেছে।

বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত মৃত্যুর তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া গুলিতে বিদ্ধ হয়েছেন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ ছিল শিশু। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।


img

সরকার উৎখাতে গৃহযুদ্ধের পরিকল্পনা: হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা

প্রকাশিত :  ১৫:৪৬, ২৭ মার্চ ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৭:২৯, ২৭ মার্চ ২০২৫

বর্তমান সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র ও গৃহযুদ্ধের পরিকল্পনার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলাটি দায়ের করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।  এ তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসিম উদ্দীন খান।

জসিম উদ্দীন খান জানিয়েছেন, ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ নামে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের জুম মিটিংয়ে গৃহযুদ্ধের পরিকল্পনা ও সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ায় এই মামলা করা হয়েছে।

গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর অনলাইনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ গঠন করা হয়। সেখানে সরকারের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় আনার পরিকল্পনা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। সিআইডির তদন্ত অনুযায়ী, ওই বৈঠকে ৫৭৭ জন অংশ নেন এবং শেখ হাসিনার সব নির্দেশ পালনের বিষয়ে একমত হন।

মামলায় দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ড. রাব্বি আলমকে। এছাড়া অনলাইন বৈঠকে অংশ নেওয়া আরও ৫০৩ জনকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সিআইডির ভাষ্য অনুযায়ী, বৈঠকের ভয়েস রেকর্ড পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বৈধ সরকারকে শান্তিপূর্ণভাবে দেশ পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না—এমন বক্তব্য এসেছে আলোচকদের কাছ থেকে। সরকার উৎখাতের জন্য গৃহযুদ্ধের ডাক দেওয়া হয় এবং ষড়যন্ত্রমূলক রাষ্ট্রদ্রোহের উপাদান স্পষ্টভাবে পাওয়া গেছে।

সেই সঙ্গে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম মিটিংয়ে বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার জন্য গৃহযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধের সুস্পষ্ট উপাদান রয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলাটি দায়ের করলে আদালত তা আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

জাতীয় এর আরও খবর