img

বাংলাদেশ হাইকমিশনে নো ভিসা-পাসপোর্ট ফি হ্রাস, ওসমানী বিমানবন্দর আন্তর্জাতিকীকরণ ও সিলেট প্রদেশ বাস্তবায়নের দাবিতে লন্ডনে স্মারকলিপি প্রদান

প্রকাশিত :  ১৯:২৩, ০২ মার্চ ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৯:২৯, ০২ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশ হাইকমিশনে নো ভিসা-পাসপোর্ট ফি হ্রাস, ওসমানী বিমানবন্দর আন্তর্জাতিকীকরণ ও সিলেট প্রদেশ বাস্তবায়নের দাবিতে লন্ডনে স্মারকলিপি প্রদান

লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশনে গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকে’র পক্ষ থেকে নো ভিসা ও পাসপোর্টের ফি কমানো, ওসমানী বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিকীকরণ ও সিলেট প্রদেশ বাস্তবায়নসহ প্রবাসীদের ১০ দফা দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

২৭ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে নবনিযুক্ত হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম এর সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এই দাবিগুলো উপস্থাপন করেন।

প্রবাসীদের ১০ দফা দাবির মূল বিষয়সমূহ:

১. নো ভিসা ও পাসপোর্টের ফি কমানো,

২ ওসমানী বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তর,

৩. যুক্তরাজ্য থেকে সিলেটে বিমানের পাশাপাশি অন্যান্য এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ,

৪. অতিরিক্ত বিমান ভাড়া হ্রাস,

৫. বাংলাদেশের ব্যাংকিং কার্যক্রমে প্রবাসীদের পাসপোর্টকে আইডি হিসেবে গ্রহণের ব্যবস্থা,

৬. প্রবাসীদের জন্য এনআইডি কার্ড সার্ভিস সহজ করা,

৭. প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ,

৮. বাংলাদেশে প্রবাসীদের সম্পত্তির নিরাপত্তা জোরদার করা,

৯. সিলেট বিভাগকে একটি পৃথক প্রদেশ হিসেবে বাস্তবায়ন করা,

১০. হাইকমিশনের কনস্যুলার সেবার মানোন্নয়ন ও সহজীকরণ।

প্রবাসীদের সম্পত্তি ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা

প্রবাসীদের সহায় সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারকে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। 

বিশেষ করে, প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ডাকাতি ও বিভিন্ন হয়রানি প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা আরও জোরদার করার দাবি জানানো হয়।

ওসমানী বিমানবন্দর আন্তর্জাতিকীকরণ ও বিমান ভাড়া কমানোর দাবি

ওসমানী বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তরিত করার দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে সিলেটে বিমানের পাশাপাশি অন্যান্য এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট চালু করতে হবে। একই সঙ্গে, বিমানের ভাড়া কমানো এবং যাত্রীসেবা উন্নত করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।

সিলেট প্রদেশ বাস্তবায়নের যৌক্তিকতা তুলে ধরা

সিলেটকে পৃথক প্রদেশ করার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে নেতারা বলেন, ১৮৭৫ সালে ব্রিটিশ সরকার বেঙ্গল প্রদেশ থেকে জোরপূর্বক সিলেটকে আসামের সঙ্গে যুক্ত করে। পরে ১৯৪৭ সালে গণভোটের মাধ্যমে সিলেট আবার পূর্ব বাংলার সঙ্গে যুক্ত হলেও, শিক্ষা, প্রশাসন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সিলেটের প্রতি বৈষম্য বজায় থাকে।

তারা আরও বলেন, সিলেট অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন ও প্রশাসনিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। প্রাকৃতিক সম্পদ, পর্যটন ও রেমিট্যান্সে শীর্ষে থাকা সিলেটবাসীর ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে সিলেটকে একটি স্বতন্ত্র প্রদেশ হিসেবে ঘোষণা করা উচিত।

হাইকমিশনের সেবার মানোন্নয়নের দাবি

হাইকমিশনের কনস্যুলার সার্ভিসের মানোন্নয়নের দাবি জানিয়ে বলা হয়, কনস্যুলার সার্ভিস বেজমেন্টে থাকায় প্রবীণ ও প্রতিবন্ধী প্রবাসীদের জন্য সেবা গ্রহণ করা কষ্টকর। তাই এটি উপরের কোনো ফ্লোরে স্থানান্তর করার আহ্বান জানানো হয়।

এছাড়া, হাইকমিশনের মাধ্যমে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

সাক্ষাতে উপস্থিত ছিলেন: এই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকে’র কেন্দ্রীয় কো-কনভেনর মসুদ আহমদ, কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব ড. মুজিবুর রহমান, গ্রেটার সিলেট এর  প্রাক্তন চেয়ারপার্সন নুরুল ইসলাম মাহবুব,  সাবেক সাধারণ সম্পাদক ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা  সৈয়দ আব্দুল কাইয়ুম কয়সর, সাউথ ইস্ট রিজিওনের কনভেনর হারুনুর রশিদ, কো-কনভেনর জামাল হোসেন, সদস্য সচিব মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, জয়েন্ট কনভেনর আব্দুর রহিম রঞ্জু, ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সায়েম করিম।

তবে, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কনভেনর এবং সিনিয়র সাংবাদিক মোহাম্মদ মকিস মনসুর অসুস্থতার কারণে উপস্থিত থাকতে পারেননি, তবে টেলিফোন কনফারেন্সের মাধ্যমে পুরো বৈঠকের খোঁজখবর রাখেন এবং দাবির প্রতি তার সমর্থন জানান।

সিলেটবাসীর স্বার্থ রক্ষায় চলবে আন্দোলন

সভায় গ্রেটার সিলেট কমিউনিটির নেতারা জানান, সিলেটের উন্নয়ন ও প্রবাসীদের ন্যায্য দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তারা হাইকমিশনারকে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে, কমিউনিটির উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ

সংগঠনটির পক্ষ থেকে হাইকমিশনার আবিদা ইসলামকে লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য ইফতার মাহফিলে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়।

কমিউনিটি এর আরও খবর

img

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরাবর জাসদের স্মারকলিপি: বাংলাদেশের জঙ্গীবাদী ধর্মীয় চরমপন্থীদের অভ্যুত্থান মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান

প্রকাশিত :  ১৭:৪০, ২৪ মার্চ ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৯:৪৭, ২৪ মার্চ ২০২৫

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য জাসদের প্রতিনিধি দল আজ ২৪ মার্চ সোমবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে । স্মারকলিপিতে তারা বাংলাদেশের চলমান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী চরম মৌলবাদী জঙ্গিদের  অভ্যুত্থান ও এর ফলে উদ্ভূত সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এতে উল্লেখ করা হয়, সরকারি চাকরির কোটা ব্যবস্থার বিরোধিতার আন্দোলনের ছদ্মাবরণে এই অভ্যুত্থান শুরু হয়ে বর্তমানে দেশজুড়ে সহিংসতা, সংখ্যালঘু নির্যাতন ও ধর্মনিরপেক্ষতা বিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও যুক্তরাজ্যসহ বৈশ্বিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন এবং দেশটির গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন বিদ্রোহীদের দখলে। অভ্যুত্থানের পর থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সংখ্যালঘুদের উপাসনালয় ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে হামলা এবং শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের সরকার এই ঘটনা প্রতিরোধে ব্যর্থ নয়, বরং একে সক্রিয়ভাবে উৎসাহিত করছে। আমরা জোরালোভাবে অনুরোধ করছি যে, যুক্তরাজ্য হাইকমিশন এই অভিযোগসমূহ তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করুক। 'ধর্মনিরপেক্ষতা' শব্দটি বাংলাদেশের সংবিধান থেকে মুছে ফেলার অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে (ICT) ব্যবহার করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর সভাপতি হাসানুল হক ইনুসহ ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক নেতাদের বিচারিক হত্যার পরিকল্পনা একটি চরম বিচারিক প্রহসন। ICT, যা ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত হয়েছিল, এখন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।

জাসদ নেতৃবৃন্দ যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি অভ্যুত্থানকে নিন্দা জানানো, দায়ী ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা, একটি স্বাধীন তদন্ত, মানবিক সহায়তা প্রদান এবং নির্যাতিতদের রাজনৈতিক আশ্রয় নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নের অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে অভ্যুত্থান-সমর্থিত শক্তিগুলো কোনো ধরনের সহায়তা না পায়।

স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন জাসদের সভাপতি মতিউর রহমান মতিন, যুক্তরাজ্য জাসদের কার্যকরী সভাপতি এডভোকেট মুজিবুল হক মনি, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান এবং কবি সালমা বেগম।

কমিউনিটি এর আরও খবর