img

ভারত-পাকিস্তান থেকে এলো ৩৭ হাজার টন চাল

প্রকাশিত :  ১৪:২১, ০৫ মার্চ ২০২৫

ভারত-পাকিস্তান থেকে এলো ৩৭ হাজার টন চাল

ভারত ও পাকিস্তান থেকে আমদানি করা ৩৭ হাজার ২৫০ টন চালের দুটি চালান চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। এর মধ্যে পাকিস্তান থেকে ২৬ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন এবং ভারত থেকে ১১ হাজার মেট্রিক টন চাল কেনা হয়েছে।

বুধবার (৫ মার্চ) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ইমদাদ ইসলামের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, জি টু জি ভিত্তিতে পাকিস্তান থাকে আমদানি করা ২৬ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন আতপ চাল নিয়ে এমভি সিবি এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের (প্যাকেজ-০৫) আওতায় ভারত থেকে আমদানি করা ১১ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল নিয়ে এমভি এইচটি ইউনাইট জাহাজ দুটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে।

জাহাজ দুটিতে রক্ষিত চালের নমুনা পরীক্ষা শেষে আজই খালাসের কার্যক্রম শুরু হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

অর্থনীতি এর আরও খবর

img

২৫ মার্চ ২০২৫: বৈশ্বিক ও স্থানীয় অস্থিরতায় শেয়ার বাজারের সম্ভাব্য পরিস্থিতি

প্রকাশিত :  ১৯:৫৬, ২৪ মার্চ ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ২০:০১, ২৪ মার্চ ২০২৫

রেজুয়ান আহম্মেদ

২০২৫ সালের ২৫ মার্চ বিশ্বের শেয়ার বাজারগুলি একটি জটিল ও অনিশ্চিত দিনের সম্মুখীন হতে পারে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার আভাস, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, জলবায়ু সংকট এবং প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের গতিশীলতা বিনিয়োগকারীদের সতর্কতা বাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দিনে বাজারের অস্থিরতা বৃদ্ধি পেতে পারে—বিশেষত বাংলাদেশের মতো উদীয়মান বাজারে, যেখানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও রপ্তানি-নির্ভর খাতগুলির উপর অতিরিক্ত চাপ বিদ্যমান।  

১. বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট: মন্দার আভাস ও সুদের হার

২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ এবং ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের সুদের হার-সংক্রান্ত নীতি বাজারে নতুন অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। মার্চ মাসের শুরু থেকেই বিনিয়োগ ব্যাংকগুলি পূর্বাভাস দিচ্ছে যে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের প্রভাবে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতিকে ৫-৬%-এ নিয়ে যেতে পারে। এর প্রভাবে শিল্প-প্রধান দেশগুলির (যেমন: জার্মানি, চীন) শেয়ার সূচকগুলি ১০-১৫% পর্যন্ত নিম্নমুখী হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  

বিশ্লেষকদের মন্তব্য:

গোল্ডম্যান স্যাকসের অর্থনীতিবিদ লিনা চেং বলেন, „২০২৫ সালে পরিবেশ, সামাজিক ও শাসনবিধি (ESG) নীতির প্রভাবে জ্বালানি ও প্লাস্টিক খাতের শেয়ারে পতন ঘটতে পারে। অন্যদিকে, সবুজ প্রযুক্তি (গ্রিন টেকনোলজি) ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিনিয়োগ দ্বিগুণ হতে পারে।”  

২. বাংলাদেশের বাজার: রাজনীতি ও অর্থনীতির দ্বন্দ্ব

বাংলাদেশের জন্য ২৫ মার্চ একটি সংবেদনশীল তারিখ। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে (২৬ মার্চ) রাজনৈতিক সমাবেশ বা প্রতিবাদের ঘটনা বাজারের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থাকে প্রভাবিত করতে পারে। ২০২৪ সালের শেষদিকে মুদ্রা রিজার্ভ সংকট ও টাকার অবমূল্যায়নের প্রভাবে ডিএসইএক্স ইতিমধ্যেই ১৫% পতন প্রত্যক্ষ করেছে। ২০২৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন কার্বন ট্যাক্সের মুখোমুখি হলে রপ্তানিনির্ভর খাতগুলির (বস্ত্র, পাট) আয় হ্রাস পেতে পারে।  

ঝুঁকির কারণ:

- বৈদেশিক ঋণের উচ্চ সুদের হার।  

- আমদানিনির্ভর শিল্পে টাকার অবমূল্যায়ন।  

- রাজনৈতিক অস্থিরতায় বৈদেশিক বিনিয়োগ হ্রাস।  

৩. সম্ভাব্য খাতভিত্তিক পারফরম্যান্স:  

- ব্যাংকিং ও আর্থিক সেবা: রেপো রেট বৃদ্ধির কারণে মুনাফা সংকুচিত হতে পারে, তবে ডিজিটাল ব্যাংকিং-সম্পর্কিত স্টকগুলি স্থিতিশীল থাকতে পারে।  

- ফার্মাসিউটিক্যাল ও স্বাস্থ্যসেবা: কোভিড-১৯-পরবর্তী সময়ে টিকা উৎপাদন এবং জেনেরিক ওষুধের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।  

- প্রযুক্তি: সাইবার নিরাপত্তা ও ক্লাউড সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলি শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখতে পারে।  

৪. বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কতা: 

বিশ্লেষকদের পরামর্শ:  

- বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের বিস্তার (বিনিয়োগের ডাইভারসিফিকেশন)।  

- অস্থির বাজারে স্বল্পমেয়াদি লেনদেন এড়িয়ে মৌলিক ভিত্তিসম্পন্ন দীর্ঘমেয়াদি স্টক বেছে নিন।  

- সরকারি বন্ড বা সোনার মতো নিরাপদ সম্পদে ২০-৩০% বিনিয়োগ রাখুন।  

৫. শেষ কথা: অন্ধ আশার পরিবর্তে যুক্তিনির্ভর সিদ্ধান্ত  

২০২৫ সালের ২৫ মার্চ শেয়ার বাজার যে কোনো দিকে মোড় নিতে পারে। তবে ইতিহাস প্রমাণ করে, যুদ্ধ, মন্দা বা রাজনৈতিক সংকটের মধ্যেও নির্দিষ্ট কিছু খাতে মুনাফা অর্জন সম্ভব। বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারীরা আবেগের বদলে তথ্য ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শকে অগ্রাধিকার দেবেন। মনে রাখবেন, „বাজার সময়ের সাথে সাথে পুনরুদ্ধার হয়, কিন্তু বিনিয়োগের ভুল সংশোধন হয় না।”  

প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছেন: অর্থনৈতিক বিশ্লেষক দল, অর্থনীতি ।  

সূত্র: বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাস, ব্লুমবার্গের তথ্য, এবং স্থানীয় ব্রোকারেজ ফার্মগুলির গবেষণা।  

বিঃদ্রঃ: এই প্রতিবেদনটি সম্ভাব্য পরিস্থিতির বিশ্লেষণভিত্তিক এবং কোনো বিনিয়োগ পরামর্শ নয়। বাজারের ঝুঁকি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিন।


রেজুয়ান আহম্মেদ: কলামিস্ট, বিশ্লেষক; সম্পাদক অর্থনীতি ডটকম