img

পাকিস্তানে ট্রেনে হামলা, ৪৫০ যাত্রী জিম্মি

প্রকাশিত :  ১২:৫৫, ১১ মার্চ ২০২৫

পাকিস্তানে ট্রেনে হামলা, ৪৫০ যাত্রী জিম্মি

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম বেলুচিস্তান প্রদেশে মঙ্গলবার সশস্ত্র জঙ্গিরা একটি ট্রেনে হামলা চালিয়ে ৪৫০ জনের বেশি যাত্রীকে জিম্মি করেছে। এ ঘটনা ট্রেনটির চালক আহত হয়েছেন।

স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে প্রত্যন্ত সিবি জেলায় এ ঘটনা ঘটে, যেখানে ট্রেনটির নির্ধারিত স্টপেজ ছিল। ট্রেনটি সকাল ৯টার দিকে কোয়েটা থেকে যাত্রা শুরু করে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পেশাওয়ারের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল, যা ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময়ের যাত্রাপথ।

এদিকে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) হামলার দায় স্বীকার করে এক বিবৃতিতে বলেছে, বন্দুকধারীরা রেললাইনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ট্রেনটির নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং প্রত্যন্ত সিবি জেলায় ট্রেনটি থামিয়ে দেয়।

বিএলএ হুঁশিয়ারি দিয়েছে, জিম্মিদের উদ্ধারে কোনো চেষ্টা করা হলে ‘গুরুতর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।

প্রাদেশিক রাজধানী কোয়েটার জ্যেষ্ঠ রেলওয়ে কর্মকর্তা মুহাম্মদ কাশিফ এএফপিকে জানান, ‘ট্রেনের ভেতরে থাকা ৪৫০ জনের বেশি যাত্রীকে বন্দুকধারীরা জিম্মি করে রেখেছে। যাত্রীদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে।

এ ছাড়া সিবির পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে নাম না প্রকাশের শর্তে এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘জাফর এক্সপ্রেস নামের একটি যাত্রীবাহী ট্রেনকে জঙ্গিরা থামিয়ে দেয়। যাত্রীদের জিম্মি করে রাখা হয়েছে এবং ট্রেনচালক আহত হয়েছেন।’

ট্রেনটি যেখানে আটকে আছে, সেই অঞ্চলটি পাহাড়বেষ্টিত হওয়ায় জঙ্গিদের জন্য আশ্রয়স্থল তৈরি করা ও হামলার পরিকল্পনা করা সহজ হয়। একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আশপাশের হাসপাতালগুলোতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

দারিদ্র্যপীড়িত বেলুচিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনী কয়েক দশক ধরে বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে বাইরের লোকজন মুনাফা লুটে নিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী, অথচ স্থানীয় জনগণ এর কোনো সুফল পাচ্ছে না। ২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে পাকিস্তানের উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলে সহিংসতা বেড়েছে।

ইসলামাবাদভিত্তিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে পাকিস্তানে হামলায় এক হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়, যা প্রায় এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর।

সূত্র : এএফপি

আন্তর্জাতিক এর আরও খবর

img

মিয়ানমারে উলফার ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ড্রোন হামলা

প্রকাশিত :  ১৪:৫৬, ১৩ জুলাই ২০২৫

মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) অন্তত চারটি ক্যাম্পে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হামলার অভিযোগ উঠেছে।

আজ রোববার ভোরের দিকে শতাধিক ড্রোন ব্যবহার করে ভারতের সামরিক বাহিনীর চালানো এই হামলায় উলফার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে সংগঠনটি। তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে মিয়ানমারে হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এনইর খবরে বলা হয়েছে, আসামে উলফার চারটি ক্যাম্পকে নিশানা করে ভারতীয় সেনাবাহিনী ড্রোন হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেছে ভারতে নিষিদ্ধ এই সংগঠন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত উলফার একাধিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে শক্তিশালী অভিযান পরিচালনা করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। শতাধিক ড্রোন ব্যবহার করে নিষিদ্ধ ঘোষিত এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর একাধিক ঘাঁটিতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানা হয়েছে।

দেশটির একটি সূত্র বলেছে, হামলায় উলফার কয়েকজন সদস্য নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। নিহতদের মধ্যে উলফার অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা ও সংগঠনটির সামরিক শাখার জ্যেষ্ঠ কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল নয়ন অসমও রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভারতের বেসরকারি সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত বিদ্রোহী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ আসাম-ইন্ডিপেনডেন্টের (উলফা-আই) মিয়ানমারে অবস্থিত পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তরে ড্রোন হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

রোববার ভোরের দিকে মিয়ানমারে গোষ্ঠীটির পূর্বাঞ্চলীয় ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করে উলফা-আই। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলেছে, ‘‘সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর চালানো এই হামলায় উলফা-আইয়ের অন্তত ১৯ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ১৯ জন।’’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, উলফা-আইয়ের শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার নয়ন মেধি ওই হামলায় নিহত হয়েছেন। মণিপুরের বিদ্রোহী সংগঠন পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) রাজনৈতিক শাখা রেভল্যুশনারি পিপলস ফ্রন্টের (আরপিএফ) কয়েকজন সদস্যও হতাহত হয়েছেন।

যদিও ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহেন্দ্র রাওয়াত দেশটির বার্তা সংস্থা আইএএনএসকে বলেছেন, এ ধরনের কোন অভিযানের তথ্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে নেই।