img

সেনাবাহিনী নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে মিথ্যাচারের জবাব দিলো আইএসপিআর

প্রকাশিত :  ১৯:১২, ১১ মার্চ ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৯:১৭, ১১ মার্চ ২০২৫

সেনাবাহিনী নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে মিথ্যাচারের জবাব দিলো আইএসপিআর

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পের্কে টানাপোড়েন চলছে শেখ হাসিনা সরকারে পতনের পর থেকে। তখন থেকেই মিথ্য প্রোপাগান্ডা, উগ্র বক্তব্য, সাম্প্রদায়িক উসকানি, মিথ্যা তথ্যে ভরা প্রতিবেদন পরিবেশন করে আসছে ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম। সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিয়েও ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এসব মিথ্যা প্রতিবেদনের জবাব দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ)  আইএসপিআরের সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খানের সই করা এক প্রতিবাদপত্রের মাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।

প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, ভারতের কিছু গণমাধ্যম—যেমন দ্য ইকোনমিক টাইমস এবং ইন্ডিয়া টুডে—সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা এবং কমান্ড চেইনের ভাঙ্গনের অভিযোগ সংবলিত ভিত্তিহীন ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করেছে। এসব প্রতিবেদন সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং সুপরিকল্পিত অপপ্রচার, যা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও সশস্ত্র বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন করার অপপ্রয়াস বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

এতে বলা হয়, আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দৃঢ়, ঐক্যবদ্ধ এবং সেনাপ্রধানের দক্ষ নেতৃত্বে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে অটল। আমাদের কমান্ড চেইন সুসংহত রয়েছে এবং সেনাবাহিনীর সব সদস্য, বিশেষত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, সংবিধান, শৃঙ্খলা ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি অবিচল আনুগত্য প্রকাশ করে চলেছেন। সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে বিভাজন বা অসন্তোষের যে কোনো অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, উদ্দেশ্যমূলক এবং বিদ্বেষপ্রসূত।

এতে আরও বলা হয়, বিশেষভাবে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, দ্য ইকোনমিক টাইমস বারবার এমন অপপ্রচারে লিপ্ত হচ্ছে। গত ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখেও একই গণমাধ্যমে অনুরূপ ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছিল। বারবার এমন মিথ্যা সংবাদ প্রচারের ঘটনা সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমগুলোর উদ্দেশ্য ও বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন সৃষ্টি করে। এছাড়া, কিছু অনলাইন পোর্টাল এবং কিছু অযোগ্য ও অসৎ টেলিভিশন চ্যানেলও এই মিথ্যা প্রচারণাকে আরো বিস্তৃত করেছে, যা সেনাবাহিনী ও জনগণের মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টি করার একটি অপকৌশল বলে মনে হচ্ছে। এসব গণমাধ্যম দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার নীতি অনুসরণ না করে অপপ্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়।

প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয়, আমরা ভারতীয় গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সকল গণমাধ্যমকে আহ্বান জানাই, যাতে তারা দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা অনুসরণ করে এবং যাচাই-বাছাই ছাড়াই কোনো বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত থাকে। এমন সংবাদের বিষয়ে মন্তব্য বা ব্যাখ্যা জানতে হলে, তারা যেন সেনাবাহিনীর ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (ISPR) এর সঙ্গে যোগাযোগ করে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রদানে আইএসপিআর সর্বদা প্রস্তুত।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সকল গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীলভাবে কাজ করার এবং মিথ্যা সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।

img

যুবদল নেতা কিবরিয়াকে হত্যা, বেরিয়ে এলো যেসব তথ্য

প্রকাশিত :  ০৪:৫৬, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

দুর্বৃত্তদের গুলিতে রাজধানীর পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়া নিহত হয়েছেন। তাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এমনকি খুন করে পালানোর সময় দ্রুত রিকশা না চালানোয় চালককেও গুলি করে তারা।

গতকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৭টা। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মিরপুরের পল্লবী এলাকার একটি দোকানে ঢুকে প্রকাশ্যে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়াকে পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি করে হেলমেট পরা তিনজন। মুহূর্তেই লুটিয়ে পড়েন তিনি।

গুলি করেই দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় গোলাম কিবরিয়াকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে, চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে ভিড় করেন যুবদল ও বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে এ হত্যাকাণ্ড। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার বিচার করতে হবে।

পুলিশ বলছে, হত্যাটি দলীয় কোন্দল নাকি অন্য কোনো কারণে হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে পল্লবী থানাধীন সেকশন-১২-এর ব্লক-সি, ৫ নম্বর রোডে বিক্রমপুর হার্ডওয়্যার অ্যান্ড স্যানিটারি দোকানে বসেছিলেন গোলাম কিবরিয়া। এ সময় মোটরসাইকেলে করে আসা তিন দুর্বৃত্ত সরাসরি দোকানে ঢুকে পড়ে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই কিবরিয়াকে লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে মাথা, বুক এবং পিঠে পিস্তল ঠেকিয়ে উপর্যুপরি সাত রাউন্ড গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা।

গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন কিবরিয়া। তবে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে দুর্বৃত্তরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় আশপাশে থাকা লোকজন এক দুর্বৃত্তকে আটক করে। আটক দুর্বৃত্তকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সাত রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে, কিবরিয়াকে গুলি করে অটোরিকশায় পালিয়ে যাওয়ার সময় দ্রুত না চালানোয় চালক আরিফকে (২০) গুলি করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আহত অবস্থায় চালককে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।

আরিফকে হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী মো. পিয়ারুল ইসলাম জানান, ঘটনার সময় তিনি মিরপুর সাড়ে ১১, সি ব্লক মোড়ের ঢালে অবস্থান করছিলেন। এ সময় রাস্তার পাশে পড়ে থাকা অবস্থায় তিনি আহত আরিফকে দেখতে পান। কেউ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিল না। পরে তিনি নিজেই প্রথমে স্থানীয় ইসলামী হাসপাতালে নিয়ে যান এবং সেখান থেকে ঢামেকে আনা হয়।

পিয়ারুল আরও জানান, পথে আহত আরিফ তাকে বলেন, দুজন হেলমেট পরা ব্যক্তি তার রিকশায় উঠে দ্রুত চালাতে বলে। কিন্তু রিকশার ব্যাটারিতে পর্যাপ্ত চার্জ না থাকায় সে দ্রুত চালাতে পারেনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আরিফের কোমরে গুলি করে দ্রুত রিকশা থেকে নেমে পালিয়ে যায়।

পল্লবী থানা পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। ঘটনাটি দলীয় কোন্দল নাকি এতে অন্য কোনো বিষয় রয়েছে; তা তদন্তের পর বেরিয়ে আসবে।

পল্লবী থানার ওসি মো. মফিজুর রহমান বলেন, জনগণের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটককৃত যুবকের মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের ধরার চেষ্টা চলছে। এখনো মামলা হয়নি, তবে নিহতের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

এদিকে, কিবরিয়াকে হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে পল্লবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় বিএনপি ও দলটির সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।