img

আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব : বৈঠকে গুরুত্ব পাবে গণতন্ত্রে উত্তরণ মানবাধিকার, রোহিঙ্গা

প্রকাশিত :  ০৫:৪৫, ১৩ মার্চ ২০২৫

আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব : বৈঠকে গুরুত্ব পাবে গণতন্ত্রে উত্তরণ মানবাধিকার, রোহিঙ্গা

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চার দিনের সফরে ঢাকা আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বাংলাদেশ সফরকালে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে একাধিক বৈঠক করবেন তিনি। বৈঠকে গুরুত্ব পাবে অন্তর্বর্তী সরকারের গণতন্ত্রে উত্তরণ, রোহিঙ্গা ইস্যু ও মানবাধিকার।

শাহজালাল বিমানবন্দরে আজ জাতিসংঘ মহাসচিবকে স্বাগত জানাবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। আগামীকাল শুক্রবার সকালে মহাসচিবের অবস্থানরত হোটেলে প্রথমে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি-সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভের সঙ্গে এসব বিষয়ে আলোচনা হবে। এর পর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করবেন আন্তোনিও গুতেরেস। বৈঠক শেষে তারা একসঙ্গে কক্সবাজার যাবেন। সেখান থেকে তারা যাবেন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জাতিসংঘের বাংলাদেশে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থা নিজ নিজ কার্যক্রম সম্পর্কে জাতিসংঘ মহাসচিবকে ব্রিফ করবে। 

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের পর লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব। রাতেই কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন তারা। আন্তোনিও গুতেরেসের সফর সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সফর। প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে তিনি রমজান মাসে সংহতি জানাতে বাংলাদেশে আসছেন। প্রতি বছর তিনি রমজান মাসে মুসলিম দেশগুলোতে সফর করে থাকেন। এ ছাড়া সফরে তিনি রোহিঙ্গা নিয়ে আলোচনা করবেন। সেখানে আন্তর্জাতিক সহায়তার বিষয়টি উঠে আসবে।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে সংস্কার, নির্বাচন এবং এর সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে কিনা– জানতে চাইলে তিনি বলেন, জাতিসংঘ বিভিন্ন সরকারের সময় বাংলাদেশিদের পাশে থেকেছে। ফলে জাতিসংঘের সহযোগিতা ও সংহতি চলমান থাকবে। কী ধরনের সহযোগিতা চাওয়া হবে এবং অগ্রাধিকার বিষয়গুলো কী, তা অন্তর্বর্তী সরকার বা আগামীতে নির্বাচিত সরকার জাতিসংঘকে জানাবে। 

সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব প্রধান উপদেষ্টাকে লেখা এক চিঠিতে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের উত্তরণ প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা ও সংহতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা, জাতিসংঘ মহাসচিব এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রতিনিধি রোহিঙ্গা নিয়ে মাইলফলক কোনো দৃষ্টান্ত তৈরি করতে চান। হয়তো রাখাইনে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় বাংলাদেশ করিডোর ব্যবহারের একটি ব্যবস্থা করে দিতে পারে, এটি একটি মাইলফলক হতে পারে। এ নিয়ে প্রশাসন ও সরকারের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে।

তিনি বলেন, বৈঠকে অবশ্যই বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পথে উত্তরণ নিয়ে আলোচনা হবে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘ মহাসচিব এ বিষয়ে সরকারের প্রতি সমর্থন ও সংহতি জানিয়েছেন। এ ছাড়া মানবাধিকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

আগামী শনিবার ঢাকায় জাতিসংঘের কার্যালয়ে যাবেন আন্তোনিও গুতেরেস। সেখানে জাতিসংঘের কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তিনি। এর পর সেখান থেকে দুপুরে হোটেলে ফিরে গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেবেন আন্তোনিও গুতেরেস। এ ছাড়া সেখানে বাংলাদেশের যুবসমাজ ও নাগরিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তিনি। এ দিন বিকেলে একটি যৌথ প্রেস ব্রিফিং হওয়ার কথা রয়েছে। পাশাপাশি সন্ধ্যায় জাতিসংঘ মহাসচিবের সৌজন্যে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। রোববার সকালে তাঁর ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।

রোহিঙ্গা শিবিরে শিশুর তীব্র অপুষ্টি 

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে শিশুদের অপুষ্টির হার বেড়েছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ গত মঙ্গলবার জানিয়েছে, তীব্র অপুষ্টির কারণে জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন– এমন রোহিঙ্গা শিশুর সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে ২৭ শতাংশ বেড়েছে। এটি একটি বিপজ্জনক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। রোহিঙ্গা শিবিরের বর্তমান পরিস্থিতি রোহিঙ্গা শিশুদের জীবন হুমকিতে ফেলে– এমন ক্ষুধার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

ইউনিসেফ মঙ্গলবার জানায়, বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থল কক্সবাজারে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচ লাখের বেশি শিশু। রোহিঙ্গা পরিবারগুলো এখন অপুষ্টির মুখোমুখি হচ্ছে। রোহিঙ্গা শিবিরের ১৫ শতাংশের বেশি শিশু এখন অপুষ্টিতে ভুগছে।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ারস বলেন, ইউনিসেফ শিশুদের জন্য থাকার ও সেবা প্রদানের জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কিন্তু নিশ্চিত তহবিল ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলো ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।


img

\'সবার আগে বাংলাদেশ\'—নতুন স্বপ্নের পথে এক পদক্ষেপ

প্রকাশিত :  ১৭:৫৭, ২৭ মার্চ ২০২৫

ঢাকা, ২৭ মার্চ ২০২৫: দেশের অগ্রগতি, গণতন্ত্র ও জাতীয় স্বার্থকে সবার ওপরে রাখার প্রত্যয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল ‘সবার আগে বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’। রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত উদয় টাওয়ারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংগঠনটির কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়।

সংগঠনটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন রকিবুল ইসলাম বকুল, এবং কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। এছাড়া, সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আবদুল মোনায়েম মুন্না, এসএম জিলানী, নুরুল ইসলাম নয়ন, আতিকুর রহমান রুমন, গিয়াসউদ্দিন রিমন, রাজিব আহসান, রাকিবুল ইসলাম রাকিব, নাছির উদ্দীন নাছির, জাহিদুল ইসলাম রনি ও এহসান মাহমুদ।

প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ শুধু একটি সংগঠন নয়; এটি একটি আদর্শ, একটি স্বপ্ন, যেখানে দেশ ও জনগণের কল্যাণই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে। সংগঠনটি দেশের সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সভাপতি শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, \"আমাদের লক্ষ্য—বাংলাদেশকে এমন এক দেশে পরিণত করা, যেখানে জনগণের কণ্ঠস্বরই হবে প্রকৃত শক্তি। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণে আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাব।\"

সাধারণ সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, \"এই সংগঠন দেশের উন্নয়ন ও জনগণের অধিকার রক্ষায় নিরলস কাজ করবে। আমরা বিশ্বাস করি, দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে সবার আগে দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়াই সত্যিকারের দেশপ্রেম।\"

এই ফাউন্ডেশনের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো—দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা। তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্বে আনার পাশাপাশি দেশের জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করাও সংগঠনটির অন্যতম লক্ষ্য।

নতুন এই সংগঠনের যাত্রায় দেশের নানা স্তরের মানুষ ইতোমধ্যেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই সংগঠন ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে নতুন দিগন্তের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

দেশের সার্বিক অগ্রগতির জন্য জনগণকেই সবচেয়ে বড় শক্তি মনে করে ‘সবার আগে বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’। এই যাত্রা কতটা সফল হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

জাতীয় এর আরও খবর