সিলেট জেলার বিশ্বনাথে ৬ বছর বয়সী প্রথম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই স্কুলছাত্রী সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজারের এক রিকশা চালকের মেয়ে। তারা কয়েকদিন ধরে বিশ্বনাথ উপজেলার হিমিদপুর আখতার হোসেনের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছে।
পুলিশ জানায়, রোববার (১০মার্চ) বিকেলে ওই বাসার শয়নকক্ষে সে ধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনায় বুধবার (১২ মার্চ) ধর্ষনকারী বিশ্বনাথ উপজেলার হিমিদপুর গ্রামের মৃত মোজাম্মেল আলীর ছেলে মোবাশ্বির আলীকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।
আর ধর্ষিতা শিশু কন্যাকে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী হাসপাতালের ওসিসিতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
তবে গ্রেপ্তার মোবাশ্বির আলীর দাবি, আমাকে ফাঁসানোর জন্য এই নাটক সাজানো হয়েছে। এ ঘটানয় বুধবার (১২ মার্চ) বিকেলে ধর্ষিতার পিতা বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-(৭)।
কক্সবাজার জেলায় কাজের সন্ধানে এসে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার এক গ্রামের ছয়জন শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছেন। তারা পেশায় সবাই রাজমিস্ত্রী। সাত দিন ধরে নিখোঁজ থাকা শ্রমিকরা সবাই গত ১৫ এপ্রিল কাজের উদ্দেশ্যে জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রাম থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্য বের হয়েছিলেন।
পুলিশ বলছে, তাদের সবার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ নিখোঁজদের মধ্যে দুজনের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান টেকনাফের রাজারছড়া এলাকা পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে টেকনাফের রাজারছড়া মানবপাচার ও অপহরণকারীদের মূল আস্তানা। তাই সন্দেহ করা হচ্ছে নিখোঁজদের মানবপাচার ও অপহরণকারী চক্রের ফাঁদে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, কক্সবাজারের কাজের উদ্দেশ্যে বের হওয়া আমার এলাকার ছয় যুবক নিখোঁজ রয়েছেন। তারা এর আগেও চট্রগ্রাম-কক্সবাজারের কাজ করতে গিয়েছিলেন। আমরা পরিবারকে সহায়তা করছি। তাদের লোকেশন টেকনাফের রাজারছড়া গ্রামে পাওয়া যাচ্ছে। তাই সেখানকার থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
টেকনাফ মডেল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। আমরাও তাদের লোকেশন রাজারছড়া এলাকা পাচ্ছি। বিষয়টি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কেননা এসব এলাকায় অপহরণ ও মানবপাচার চক্রের আনাগোনা বেশি।
নিখোঁজ ৬ জন হলেন, জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১), মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ (২০), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও মৃত সরবদির ছেলে আব্দুল জলিল (৫৫) ও মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২)।
নিখোঁজ পরিবারের ভাষ্যমতে, গত ১৫ এপ্রিল বিকেলে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ৫ তরুণসহ ছয় জন কাজের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। ১৬ এপ্রিল কক্সবাজার পৌঁছার পর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু এরপর থেকে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এঘটনায় নিখোঁজদের পরিবারে চরম দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। নিখোঁজ সবাই রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন।
নিখোঁজ রশিদের ভাই আব্দুল বাছিত বলেন, রশিদ কয়েক বছর থেকে চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতো। বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। এবার কক্সবাজার যাওয়ার পর থেকে রশিদসহ সঙ্গে থাকা সবার মোবাইল ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। তাদের লোকেশন টেকনাফের রাজারছড়া পাওয়া যাচ্ছে। আমরা খুব চিন্তিত কারণ টেকনাফ অপহরণ এবং মানবপাচারপ্রবণ এলাকা।
জকিগঞ্জ উপজেলার চৌকিদার ফয়সাল আহমেদ বলেন, আমার এলাকার ছয় শ্রমিক প্রায় সময় কক্সবাজারের কাজ করতে যায় বাবুল নামে এক ঠিকাদারের অধীনে। বাবুল ঠিকাদারের কাজ না থাকায় টেকনাফের এক পরিচিত ছেলে সাথে টেকনাফে কাজ করতে বের হন। তখন থেকে তাদের ফোন বন্ধ রয়েছে।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেনেছি। আমিও চেষ্টা করছি তাদের খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য। তাদের লোকেশন যে এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে সেটি ভয়ংকর এলাকা। কেননা এর আগেও থ্রি মার্ডার সেখানে (রাজারছড়া) হয়েছিল।