img

রোজায় গর্ভবতী নারীদের করণীয়

প্রকাশিত :  ১২:৫৯, ১৪ মার্চ ২০২৫

রোজায় গর্ভবতী নারীদের করণীয়

সলমানদের জন্য রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ। গর্ভাবস্থায় রোজা রাখা যাবে কি না—এ নিয়ে অনেক হবু মা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগে থাকেন।

গর্ভস্থ শিশুর মেধা বিকাশ ও বেড়ে ওঠা অনেকাংশে নির্ভর করে গর্ভবতীর সঠিক পুষ্টিপ্রাপ্তির ওপর। এ সময় রোজা রাখা যাবে কি না, তা নির্ভর করে হবু মা ও তাঁর গর্ভস্থ শিশুর সুস্থতার ওপর। এছাড়া ইসলাম ধর্মে গর্ভবতীর রোজা রাখার ওপর শিথিলতা রয়েছে। 

গর্ভবতীরা কখন রোজা রাখতে পারবে?

গর্ভকালীন প্রথম তিন মাস শিশুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গঠিত হয়। তাই এ সময় মায়ের শরীরে সঠিক মাত্রার পুষ্টি সরবরাহ জরুরি। তাই পুষ্টিবিদের মতে, গর্ভের প্রথম তিন মাস রোজা না রাখাই ভালো। তবে রাখতে চাইলেও ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত প্রচুর পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।

মধ্যবর্তী ৩ মাস বা সেকেন্ড ট্রাইমেস্টার এ মা ও গর্ভস্থ শিশুর কোনো শারীরিক জটিলতা না থাকলে এ সময় মায়ের রোজা রাখতে কোনো বাধা নেই। তবে তার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

তবে প্রথম তিন মাসের মতো শেষ তিন মাসও বেশ স্পর্শকাতর সময়। এ সময় শিশুর দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে, তাই সঠিক নিয়মে খাওয়াদাওয়া ও পুষ্টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ সময় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া রোজা না রাখাই ভালো।

গর্ভবতী রোজা রাখলে করণীয়

সাহরি ও ইফতারে পুষ্টিকর খাবার: গর্ভবতী অবস্থায় রোজা রাখলে অবশ্যই ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে ফলমূল, শাকসবজি, ফলের রস দিয়ে তৈরি শরবত বেশি করে খেতে হবে। যাতে করে মা ও শিশু দুইজনের পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত হয়।

প্রচুর পানি পান: গর্ভবতী মায়েদের ইফতার ও সাহ্‌রিতে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। গর্ভাবস্থায় যাতে কোনভাবেই পানিশূন্যতা তৈরি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।

চাকরিজীবী গর্ভবতী: গর্ভাবস্থায় রোজা রেখে বাসার বাইরে দীর্ঘসময় যাদের ডিউটি করতে হয়, তারা ইফতারের সময় ওরস্যালাইন বা ডাবের পানি খেতে পারেন। এতে পানিশূন্যতা ও দুর্বলতা কমবে। বাসার তৈরি খাবার যতটা খাওয়া যায় ততটাই ভালো।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম: গর্ভাবস্থায় রোজা রাখলে দুশ্চিন্তামুক্ত ও প্রশান্ত থাকতে হবে, বিশ্রামের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে হবে এবং পরিশ্রম কমিয়ে দিতে হবে। বিশেষ করে সম্ভব হলে দিনে দুই ঘণ্টা বিশ্রাম ও রাতে আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।

যা খাবেন: গর্ভবতী মায়েরা সাহরিতে খাদ্যতালিকায় খেজুর, বাদাম, দুধ, ডিম, ওটমিল, ফলমূল, ভাত, সবজি খাবেন। আর ইফতারে খেজুর, শরবত, ফল, স্যুপ, ভাত, মাছ, মাংস, ডাল ইত্যাদি খেতে পারেন। কোনভাবেই ভাজাপোড়া খাওয়া উচিত হবে না।

চিকিৎসকের পরামর্শ: যেকোনো গর্ভবতীই রোজা রাখার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া উচিত। এছাড়া রোজা রাখার সময় কোন সমস্যা হলে বা কোন ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলা উচিত।  


img

চশমা ছাড়াই বাচ্চাদের দৃষ্টি সমস্যা সমাধানে আসছে এল আই ড্রপ

প্রকাশিত :  ১৩:২২, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৩:২৫, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হচ্ছে মানেই চিকিৎকের কাছে যাও। তারপর পাওয়ার দেখে চশমা দেওয়া হবে। এই ঝামেলা থেকে রেহাই দিতেই নতুন আই ড্রপ আসছে দেশের বাজারে। 

মূলত মায়োপিয়ার চিকিৎসায় এই আই ড্রপের ব্যবহার হবে। মায়োপিয়া মানেই হল দূরের দৃষ্টি ঝাপসা হতে থাকা। দেশে মায়োপিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। ক্রমাগত মোবাইল বা ট্যাবে চোখ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভি দেখা, কম আলোয় মোবাইল স্ক্রল করার কারণেই দৃষ্টিজনিত সমস্যায় ভুগছে শিশু ও কমবয়সিরা।

নতুন ফর্মুলায় আই ড্রপটি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্মাতা সংস্থা এনটড ফার্মাসিউটিক্যালস। তাদের দাবি, এই ড্রপটি চোখে দিলে মায়োপিয়ার ঝুঁকি কমবে। যে শিশুর দূরের দৃশ্য দেখতে সমস্যা হচ্ছে, স্কুলের ব্ল্যাকবোর্ডে লেখা পড়তে পারছে না অথবা চোখে যন্ত্রণা, চোখ দিয়ে পানি পড়ার সমস্যা হচ্ছে, তারা এই আই ড্রপটি ব্যবহার করতে পারে। 

তবে মায়োপিয়া যদি ধরা পড়ে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শেই আই ড্রপটি নিতে হবে। কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ামক সংস্থা আই ড্রপটির ব্যবহারে ছাড়পত্র দিয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি সেটি দেশের বাজারে চলে আসবে বলে জানা গেছে।

আই ড্রপটি ছোটদের জন্যই তৈরি করা হয়েছে। ৬ থেকে ১২ বছরের শিশুদের দেওয়া যাবে। এনটড ফার্মাসিউটিক্যালস জানিয়েছে, ওষুধটি তিন পর্যায়ের ট্রায়ালের পরে তার কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এখনো অবধি কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে দেখা যায়নি।

কিছুদিন আগেই ‘দ্য ল্যানসেট’ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের অর্ধেক সংখ্যক মানুষ মায়োপিয়ায় আক্রান্ত হবেন। বিশেষ করে শিশুরা এই অসুখে বেশি ভুগবে। মায়োপিয়ায় আক্রান্ত রোগী কাছের জিনিস দেখতে পারলেও দূরের জিনিস দেখতে তাদের সমস্যা হয়। মায়োপিয়ার অন্যতম বড় কারণ হল সূর্যের আলোয় কম সময় কাটানো। 

গবেষকেরা জানাচ্ছেন, প্রাকৃতিক আলোর চেয়ে কৃত্রিম আলোতেই বেশি অভ্যস্ত এখনকার প্রজন্ম। শিশুদের ক্ষেত্রে সূর্যের আলোয় বেশিক্ষণ থাকলে রেটিনায় ডোপামিন নামক যৌগের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই যৌগ দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে এবং মায়োপিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। কিন্তু অন্ধকারে যদি মোবাইল বা ট্যাব দেখার অভ্যাস থাকে, তাহলে বিদ্যুতিন ডিভাইস থেকে বেরোনো নীল আলো রেটিনার দফারফা করে দেয়। তখন কেবল দৃষ্টিজনিত সমস্যা নয়, চোখে যন্ত্রণা, চোখ লাল হয়ে ওঠা, পানি পড়া, মাথাযন্ত্রণা, এমনকি মাইগ্রেনও ভোগাতে পারে।

নতুন আই ড্রপটি চোখ খারাপ হওয়া থেকে বাঁচাবে। তবে পাশাপাশি শিশুদের চোখের যত্ন নিতে ও ‘স্ক্রিন টাইম’ বেঁধে দেওয়ারও পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকেরা।