img

এনএইচএস ইংল্যান্ড সরাসরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনার ঘোষণা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত :  ১৪:০৮, ১৫ মার্চ ২০২৫

এনএইচএস ইংল্যান্ড সরাসরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনার ঘোষণা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার ঘোষণা করেছেন যে,এনএইচএস ইংল্যান্ডের সংস্থাটি বাতিল করে গণতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণে ফিরিয়ে আনার। এনএইচএস ইংল্যান্ড, এনএইচএসের দৈনন্দিন কার্যক্রম সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী একটি নির্বাহী সংস্থা, বিলুপ্ত করা হবে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এক বক্তব্যের সময় এই পদক্ষেপটি প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি সিভিল সার্ভিস এবং নিয়ন্ত্রণ পরিষেবা সংস্কারের পরিকল্পনার উপর আলোকপাত করেছিলেন।

তিনি বলেন: ‘আমি ব্রিটিশ জনগণকে সততার সাথে ব্যাখ্যা করতে পারি না যে কেন তাদের দুই স্তরের আমলাতন্ত্রের জন্য তাদের অর্থ ব্যয় করা উচিত। ‘এই অর্থ নার্স, ডাক্তার, অপারেশন, জিপি নিয়োগের জন্য ব্যয় করা যেতে পারে এবং করা উচিত।

‘তাই আজ আমি ঘোষণা করতে পারি যে আমরা রাজ্য জুড়ে আমলাতন্ত্র কমিয়ে আনব, সরকারকে কর্মক্ষম মানুষের অগ্রাধিকারের উপর জোর দেব, অর্থকে সামনের সারিতে স্থানান্তর করব।

‘তাই আমি এনএইচএস ইংল্যান্ডের সংস্থাটি বাতিল করে এনএইচএস-এর ব্যবস্থাপনাকে গণতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণে ফিরিয়ে আনছি।’

এনএইচএস ইংল্যান্ডে প্রায় ১৩,০০০ জন কর্মী নিযুক্ত রয়েছে, যারা বাজেট তদারকি করে এবং স্বাস্থ্যসেবার পরিকল্পনা করে, যার প্রায় ১৫ লক্ষ কর্মী রয়েছে। এটি ২০১২ সালে কনজারভেটিভ-লিবারেল ডেমোক্র্যাট জোট সরকারের অধীনে তৈরি হয়েছিল।

আজ সকালে তার ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে সংস্থাটি বিলুপ্তির ফলে ‘এনএইচএস-কে সরকারের কেন্দ্রবিন্দুতে ফিরিয়ে আনা হবে, যেখানে এটি প্রাপ্য’।

স্বাস্থ্য সচিব ওয়েস স্ট্রীটিং বলেছেন: ‘এটি ২০১২ সালের বিপর্যয়কর পুনর্গঠনের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকেছে, যার ফলে দীর্ঘতম অপেক্ষার সময়, সর্বনিম্ন রোগী সন্তুষ্টি এবং ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এনএইচএস তৈরি হয়েছিল। ‘যখন অর্থের এত কমতা, তখন আমরা দুটি প্রতিষ্ঠানের একই কাজ করার মতো জটিল আমলাতন্ত্রকে ন্যায্যতা দিতে পারি না।

‘আমাদের আরও কর্মী এবং কম পরীক্ষকের প্রয়োজন, যে কারণে আমি এনএইচএস ফ্রন্টলাইনে সম্পদ এবং দায়িত্ব হস্তান্তর করছি।’

স্বাস্থ্যসেবার কর্মীরা ‘সরাসরি কাজ করছে কিন্তু বর্তমান ব্যবস্থা তাদের ব্যর্থতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে’, তিনি আরও যোগ করেন।

সংসদে সংসদ সদস্যদের পদক্ষেপ সম্পর্কে আপডেট করে দেওয়া এক বিবৃতিতে স্ট্রীটিং বলেছেন যে, নির্বাচনের পর থেকে তার স্বাস্থ্য বিভাগ এনএইচএস ইংল্যান্ডের সাথে কাজ করার জন্য ‘এক-দলীয় পদ্ধতি’ গ্রহণ করছে এবং এই পরিবর্তনের অর্থ হবে ‘এক দলকে একটি সংস্থায় রূপান্তরিত করা’।

যুক্তরাজ্য এর আরও খবর

ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা ডুবে শিশুসহ নিহত ৫ | JANOMOT | জনমত

img

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি ব্রিটেনের

প্রকাশিত :  ০৭:২১, ০৯ জুলাই ২০২৫

ফিলিস্তিনের গাজায় মানবিক সংকট অব্যাহত থাকলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি মঙ্গলবার পার্লামেন্টের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির বৈঠকে এ মন্তব্য করেন।

ডেভিড ল্যামি তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে গঠিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএফএইচ) নামের ত্রাণ সরবরাহব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছে। “আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি—এই ফাউন্ডেশনকে আমরা সমর্থন করি না। এটা কার্যকরভাবে কাজ করছে না। অনেক মানুষ এখনো অনাহারে, অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন,” বলেন ল্যামি।

গত কয়েক সপ্তাহে জিএফএইচ-এর সহায়তা নিতে গিয়ে বহু ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি গুলিতে নিহত হয়েছেন বলেও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

বৈঠকে এক আইনপ্রণেতা ল্যামিকে প্রশ্ন করেন—‘গাজায় এই সহ্য করা অসম্ভব পরিস্থিতি চলতে থাকলে যুক্তরাজ্য কি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে?’ জবাবে ল্যামি বলেন, ‘হ্যাঁ, নেব।’

গত মাসে যুক্তরাজ্য অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ের সঙ্গে একযোগে ইসরায়েলি মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ও বেজালেল স্মোটরিচের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দেওয়ার দায়ে তাদের ওপর এই পদক্ষেপ নেয়া হয়।

এর আগেই যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনা স্থগিত করে। গাজা অবরোধ ঘিরে খাদ্যসংকট শুরু হলে লন্ডন থেকে কিছু অস্ত্র রপ্তানিও বন্ধ রাখা হয়।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, এসব পদক্ষেপ এখনো প্রতীকী পর্যায়ে রয়েছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর চাপ তৈরিতে তা যথেষ্ট নয়।

ল্যামি বৈঠকে বলেন, পশ্চিম তীরে অবৈধ ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণ ও দখলদারি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। তবে যুক্তরাজ্যের চাপ প্রয়োগে তেল আবিবের আচরণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে কি না—এমন প্রশ্নে ল্যামি স্বীকার করেন, এখনো পরিবর্তন ‘অপর্যাপ্ত’।

তবুও তিনি যুক্তরাজ্যের অবস্থানকে অন্য জি–৭ দেশ বা ইউরোপের মিত্রদের তুলনায় অনেক শক্তিশালী বলে দাবি করেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হয়তো এককভাবে পুরো অঞ্চলকে পাল্টে দিতে পারি না, কিন্তু যা করছি, তার সঙ্গে তুলনীয় কেউ নেই।’

প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং ইসরায়েলের একটি বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। পাশাপাশি গাজায় আটক ইসরায়েলিদের অবস্থান শনাক্তে ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ার ফোর্স বহু নজরদারি অভিযানও পরিচালনা করেছে।

অন্যদিকে যুক্তরাজ্য নিজ দেশেও ফিলিস্তিনি অধিকারকর্মীদের ওপর চাপ বৃদ্ধি করেছে। সম্প্রতি ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ নামের একটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয় এবং বহু কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ল্যামি বলেন, যুক্তরাজ্য একতরফাভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চায় না। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই এই স্বীকৃতি এমন এক সময়ে আসুক, যখন তা বাস্তব সমাধানের পথ তৈরি করতে সহায়ক হবে।’

তবে পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির চেয়ার এমিলি থর্নবেরি বলেন, অব্যাহত দখলদারি ও বসতি সম্প্রসারণের বাস্তবতায় যদি যুক্তরাজ্য আর অপেক্ষা করে, তাহলে ‘স্বীকৃতি দেওয়ার মতো কিছু থাকবে না’।

তিনি বলেন, ‘আমরা এখনই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়ে সেই রাষ্ট্র গঠনের জন্য কাজ শুরু করতে পারি। না হলে, এই সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাবে।’


যুক্তরাজ্য এর আরও খবর