img

পবিত্র ঈদুল ফিতর ৩১ মার্চ

প্রকাশিত :  ০৫:৩১, ২১ মার্চ ২০২৫

পবিত্র ঈদুল ফিতর ৩১ মার্চ

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ২৯ মার্চ (২৯ রমজান) আরব ও ইসলামিক বিশ্বে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ ওইদিন সূর্যাস্তের আগেই চাঁদ অস্ত যাবে এবং চাঁদের সূর্যের সংযোগ ঘটবে সূর্যাস্তের পর।

সংস্থাটির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক কারণে— খালি চোখে, টেলিস্কোপে বা অন্য কোনো উপায়ে ওইদিন শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা সম্ভব নয়। ফলে যেসব দেশ চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে ঈদ ও রমজানের তারিখ নির্ধারণ করে, সেসব দেশে এবারের রমজান ৩০ দিনে পূর্ণ হবে। অর্থাৎ মধ্যপ্রাচ্যসহ বেশিরভাগ ইসলামিক দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে ৩১ মার্চ।

 কী বলছে চাঁদের অবস্থান?

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৯ মার্চ বেশিরভাগ আরব ও মুসলিম দেশ শাওয়াল মাসের অর্ধচন্দ্র দেখার চেষ্টা করবে। তবে পৃথিবীর পূর্বাঞ্চল থেকে চাঁদ দেখা সম্ভব হবে না। টেলিস্কোপসহ আধুনিক পর্যবেক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করেও আরব ও ইসলামিক বিশ্বের কোনো দেশ থেকে চাঁদ দেখা যাবে না।

তবে আমেরিকা মহাদেশের মধ্য ও উত্তর অংশে শুধুমাত্র টেলিস্কোপের সাহায্যে চাঁদ দেখা সম্ভব হতে পারে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব অংশ এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলগুলো বাদে খালি চোখে চাঁদ দেখার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

আরব দেশগুলোতে চাঁদের অস্ত যাওয়ার সময়-

সংস্থাটি জানিয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় ২৯ মার্চ সূর্যাস্তের ছয় মিনিট আগে চাঁদ অস্ত যাবে। ফলে সেখানে চাঁদ দেখার কোনো সুযোগ নেই।

ওমানের মাসকাট: চাঁদ সূর্যাস্তের ৫ মিনিট পর অস্ত যাবে, বয়স থাকবে ১ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট, সূর্য থেকে দূরত্ব মাত্র ১.৫ ডিগ্রি।

সৌদির মক্কা: চাঁদ সূর্যাস্তের ৮ মিনিট পর অস্ত যাবে, বয়স হবে ৩ ঘণ্টা ২৮ মিনিট, দূরত্ব ২.২ ডিগ্রি।

জর্ডান ও ফিলিস্তিন: সূর্যাস্তের ১১ মিনিট পর চাঁদ অস্ত যাবে, বয়স হবে ৩ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট, সূর্য থেকে দূরত্ব ২.৩ ডিগ্রি।

এক ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, সূর্য থেকে চাঁদের দূরত্ব ৭ ডিগ্রির কম হলে খালি চোখে বা টেলিস্কোপ দিয়েও চাঁদ দেখা প্রায় অসম্ভব। তার এই মতকে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞানী মহলও সমর্থন করেছে।

এ কারণে এবছর চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ঈদ পালনের দেশগুলোতে রমজান ৩০ দিনে পূর্ণ হবে এবং ৩১ মার্চ ঈদ উদযাপিত হবে।



img

বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে ইসলাম ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা

প্রকাশিত :  ১৮:৫৫, ১১ জুন ২০২৫

গত এক দশকে বিশ্বব্যাপী ইসলাম ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা অন্যান্য ধর্মের তুলনায় সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি অন্যান্য সব প্রধান ধর্মের সম্মিলিত প্রবৃদ্ধিকেও ছাড়িয়ে গেছে ইসলামের সম্প্রসারণ। ‘পিউ রিসার্চ সেন্টার’-এর সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, ইসলাম এখন বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্ম।
গবেষণাটি ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়কাল ঘিরে পরিচালিত হয়েছে এবং এটি ‘গ্লোবাল রিলিজিয়াস ল্যান্ডস্কেপ’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে।

পিউ রিসার্চ জানিয়েছে, ইসলাম ধর্মে এই বৃদ্ধির প্রধান চালিকা শক্তি হলো প্রাকৃতিক জনসংখ্যা বৃদ্ধি। ধর্মান্তরণের ভূমিকা এখানে খুবই সীমিত। মুসলিম পরিবারে গড় সন্তানসংখ্যা অন্য ধর্মের তুলনায় বেশি। বর্তমানে সারাবিশ্বে প্রায় ২০০ কোটি মানুষ এই ধর্মের অনুসারী।
২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতি মুসলিম নারী গড়ে ২.৯ সন্তান জন্ম দিয়েছেন, যেখানে অমুসলিম নারীর ক্ষেত্রে এই হার ২.২। তাছাড়া মুসলিম জনগোষ্ঠীর গড় বয়স তুলনামূলকভাবে কম, যা জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
গবেষণা অনুযায়ী, খ্রিষ্টধর্ম এখনো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্ম, যার অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ২৩০ কোটি। তবে ইসলাম দ্রুত বাড়তে থাকায় দুই ধর্মের মধ্যকার সংখ্যাগত ব্যবধান দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।
২০১০ সাল থেকে খ্রিষ্টধর্মের অনুসারীর সংখ্যা বিশ্বে গড়ে ১.৮ শতাংশ হারে কমেছে। এ সময়ে ইসলাম ধর্মের অনুসারী বেড়েছে প্রায় ৩৫ কোটি, যা খ্রিষ্টধর্মের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি।
অঞ্চলভিত্তিক পরিবর্তন
বিশ্বজুড়ে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতেই ইসলাম ধর্মের প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি হয়েছে। কাজাখস্তান, বেনিন ও লেবাননে ইসলাম ধর্মে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। তবে ওমান ও তানজানিয়ায় মুসলমানদের অনুপাত কিছুটা কমেছে।
ধর্মহীন মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে। চীনে সবচেয়ে বেশি ধর্মহীন মানুষ বাস করেন, যাদের সংখ্যা প্রায় ১৩০ কোটি। যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মহীন মানুষের সংখ্যা ২০১০ সালের তুলনায় বেড়েছে ৯৭ শতাংশ।
ধর্মত্যাগ ও ধর্মান্তর প্রবণতা
গবেষণায় দেখা গেছে, খ্রিষ্টধর্ম, হিন্দুধর্ম ও বৌদ্ধধর্মে ধর্মত্যাগের হার ধর্মান্তরের চেয়ে বেশি।
বিশেষ করে খ্রিষ্টধর্মে, প্রতি একজন প্রাপ্তবয়স্ক নতুন অনুসারীর বিপরীতে তিনজন ধর্ম ত্যাগ করেছেন। অন্যদিকে, ধর্মহীনতায় প্রবেশের হারও বেশি—প্রতি একজন ধর্মহীনতা ছেড়েছেন, আর তিনজন নতুন করে ধর্মহীন হয়েছেন।

তবে ইসলাম একমাত্র প্রধান ধর্ম, যেখানে ধর্মান্তরিত হয়ে আসা মানুষের সংখ্যা ধর্মত্যাগীদের চেয়ে বেশি।

বিশ্ব ধর্মের বর্তমান চিত্র
ইসলাম : এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম। প্রায় ২০০ কোটি মানুষ এই ধর্মের অনুসারী, যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ।
খ্রিষ্টধর্ম : বৃহত্তম ধর্ম, যার অনুসারী সংখ্যা ২৩০ কোটি।
ধর্মহীন : সংখ্যা বেড়ে ২০০ কোটিতে, ২০১০ সালের তুলনায় বেড়েছে ২৭ কোটি।
হিন্দুধর্ম : তৃতীয় বৃহত্তম ধর্ম, এর ১২০ কোটি অনুসারী রয়েছে; গত এক দশকে বেড়েছে ১২.৬ কোটি, তবে বৈশ্বিক হারে অপরিবর্তিত।

বৌদ্ধধর্ম : একমাত্র ধর্ম যার অনুসারীর সংখ্যা কমেছে — ১.৮৬ কোটি হ্রাস পেয়ে হার ৫% থেকে ৪%-এ নেমেছে।
ইহুদি ধর্ম : গত এক দশকে এর মাত্র ১০ লাখ জনসংখ্যা বেড়েছে। অন্যান্য ধর্ম (শিখ, বাহাই ইত্যাদি) সম্মিলিতভাবে প্রায় ২০ কোটি অনুসারী, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২.২ শতাংশ।
এই গবেষণাটি পরিষ্কারভাবে দেখায় যে, ইসলাম শুধু প্রাকৃতিকভাবে নয়, বৈশ্বিক ধর্মীয় পরিবর্তনের ধারাতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি, ধর্মহীনতা ও ধর্মত্যাগের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আগামী দশকে বিশ্ব ধর্মীয় মানচিত্রে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।