img

দেশের সংকটকালে সেনাপ্রধান বনাম ড. মুহাম্মদ ইউনুস: জাতির ভাগ্য কোন পথে?

প্রকাশিত :  ১৭:২৭, ২১ মার্চ ২০২৫

দেশের সংকটকালে সেনাপ্রধান বনাম ড. মুহাম্মদ ইউনুস: জাতির ভাগ্য কোন পথে?

রেজুয়ান আহম্মেদ

বাংলাদেশ এক গভীর সংকটকাল অতিক্রম করছে। একদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস—যিনি সারাজীবন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন। অন্যদিকে, দেশের সেনাপ্রধান, যাঁর নেতৃত্বে দেশের সামরিক শক্তি ও স্থিতিশীলতা নির্ভরশীল। এই দুই মহাশক্তির মধ্যে যেন এক অদৃশ্য টানাপোড়েন চলছে, যা সমগ্র জাতিকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।  

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের মানুষ গভীর উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক সংকট ও বন্যার করাল গ্রাসে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রতিটি নাগরিক দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। এই সংকটময় মুহূর্তে জাতির প্রত্যাশা ছিল যে ড. মুহাম্মদ ইউনুসের মতো একজন বিশ্বখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও মানবহিতৈষী বাংলাদেশকে নতুন পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। কিন্তু এরই মধ্যে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা জাতির হৃদয়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে।  

সেনাপ্রধান বনাম অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: মতপার্থক্য নাকি গভীর ষড়যন্ত্র?  

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতির গর্ব, দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। অন্যদিকে, ড. মুহাম্মদ ইউনুস অর্থনৈতিক মুক্তির আদর্শ, যাঁর সৃষ্ট ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা কোটি কোটি দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। তবে দুঃখজনকভাবে, সাম্প্রতিক কিছু গুঞ্জন ও ঘটনার মাধ্যমে ইঙ্গিত মিলছে যে এই দুই শক্তির মধ্যে মতপার্থক্য তৈরি হচ্ছে।  

বিশ্বরাজনীতিতে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় সেনাবাহিনী দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়। তবে ইতিহাস সাক্ষী, সামরিক শক্তি এবং জনপ্রিয় নেতৃত্ব যদি একসাথে না চলে, তাহলে রাষ্ট্র বড় ধরনের বিপদের মুখে পড়ে।  

ড. মুহাম্মদ ইউনুস: আশার প্রতীক নাকি ষড়যন্ত্রের শিকার?  

ড. ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন দেশকে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার হাত থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করছে, তখনই তাঁর বিরুদ্ধে নানা রকমের চক্রান্ত শুরু হয়েছে। দেশের বহু মানুষ আশঙ্কা করছে, তাঁকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য পর্দার আড়ালে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।  

একজন অর্থনীতিবিদ ও মানবহিতৈষী হিসেবে তিনি চান দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হোক, ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে কাজ করুক এবং গণতন্ত্রের ভিত্তি শক্তিশালী হোক। কিন্তু তাঁর এই সংস্কারমূলক পদক্ষেপ কিছু গোষ্ঠীর স্বার্থে আঘাত হানতে পারে। এ কারণেই তিনি এখন চরম চাপের মুখে আছেন বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।  

সেনাবাহিনী কী গণতন্ত্রের পক্ষে?  

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বরাবরই দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত। তবে এখন প্রশ্ন উঠছে, তারা কী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার পরিকল্পনায় সমর্থন দেবে, নাকি অন্য কোনো শক্তির দ্বারা প্রভাবিত হবে? ইতিহাস বলে, সেনাবাহিনী যদি গণতান্ত্রিক কাঠামোর পাশে দাঁড়ায়, তাহলে দেশ উন্নতির পথে এগিয়ে যায়। কিন্তু যদি এর বিপরীত ঘটে, তাহলে দেশ অন্ধকারে তলিয়ে যেতে পারে।  

বাংলার মাটি আজ এক অজানা আশঙ্কায় কাঁপছে। একদিকে দেশের রক্ষাকর্তা সেনাবাহিনী—যে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে দেশকে রক্ষা করেছে। অন্যদিকে, আছেন এক মানবহিতৈষী, যিনি জ্ঞানের আলো দিয়ে জাতিকে আলোকিত করতে চেয়েছেন। কিন্তু যদি এই দুই শক্তি মুখোমুখি হয়, তাহলে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে।  

জনগণের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ: সংকটের অবসান চাই  

দেশবাসী আজ রক্তক্ষরিত হৃদয় নিয়ে অপেক্ষা করছে। তারা চায় না বাংলাদেশ আবারও পুরনো অস্থিরতার পথে ফিরে যাক। জনগণ চায় ড. ইউনুসের নেতৃত্বে একটি স্বচ্ছ ও উন্নত বাংলাদেশ, যেখানে সেনাবাহিনী হবে দেশের রক্ষক, কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শের অস্ত্র নয়।  

এই সংকটময় মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো ঐক্য। সেনাবাহিনী এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি একসাথে কাজ করে, তাহলে বাংলাদেশ এক নতুন দিগন্তের দিকে এগিয়ে যাবে। কিন্তু যদি ষড়যন্ত্রের জাল ছিঁড়ে ফেলা না যায়, তাহলে জাতি আবারও হতাশার গহ্বরে হারিয়ে যেতে পারে।  

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এখন নির্ভর করছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ওপর—সামরিক ও বেসামরিক শক্তির মধ্যে সমন্বয় এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করা। তাহলেই জাতির কপালে শান্তি ও সমৃদ্ধির আলো ফুটবে।

রেজুয়ান আহম্মেদ: লেখক, বিশ্লেষক; সম্পাদক অর্থনীতি ডটকম
img

ঢাকা থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত :  ১০:২৬, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

ঢাকা থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত এক যুগের প্রতীক্ষিত আন্তঃনগর `বুড়িমারী এক্সপ্রেস\' ট্রেনটি ঢাকা থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত চালুর দাবিতে মানববন্ধন করেন ঢাকাস্থ (ঢাকা - বুড়িমারী) আন্তঃনগর ট্রেন বাস্তবায়ন আন্দোলন পরিষদ। 

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকাস্থ (ঢাকা টু বুড়িমারী) আন্তঃনগর ট্রেন বাস্তবায়ন আন্দোলন পরিষদের ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

সংগঠনটির সমন্নয়কদের পক্ষে- এ্যাড. মমিনুর  রহমান সহ বক্তারা বলেন, আমরা লালমনিরহাট জেলার, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার ১৯ লক্ষাধিক নিরীহ ও অবহেলিত জনগণ বিনয়ের সহিত আবেদন করিতেছি যে, আমাদের দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে প্রাণের দাবি আন্তঃনগর বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সরাসরি ঢাকা থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত অফিসিয়াল ভাবে কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে নেই। দীর্ঘদিন যাবত আমরা রেলওয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করে যাচ্ছি, কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কতিপয় উর্দ্ধতন কর্মকর্তার বৈষম্যবাদী মনোভাব থাকায় আমরা উল্লেখিত চার উপজেলার জনসাধারণ সহ দেশের উত্তরাঞ্চলের একমাত্র স্থল বন্দর দিয়ে যাতায়াতে ব্যবসায়ী ও পর্যটকগণ বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছেন।

অথচ বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে বছরে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়। বুড়িমারী যাতায়াতে অবহেলিত সড়ক পথের এহেন বেহাল অবস্থা, এ অবস্থায় নিরাপত্তা বেষ্টিত এক্সপ্রেস ট্রেন সেবা থেকে অত্র অঞ্চলের জনসাধারণকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এরূপ বৈষম্য দূরীকরণে আপনার সদয় সহানুভূতি কামনা করছি। উল্লেখ্য যে, হাজারো প্রাণের বিনিময়ে বৈষম্যতা দূরীকরণে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হয়েছে সেই দেশে চার উপজেলা বাসীগণ আমাদের বরাদ্দকৃত আন্তঃনগর বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও, আমাদেরকে সেই সেবা থেকে বৈষম্যতা করে বঞ্চিত করা হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে লালমনিহাট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা সমীপে একটি স্মারকলিপি প্রধান করেছিলাম এবং অপরদিকে মাননীয় রেল উপদেষ্টা রেলপথ মন্ত্রণালয় ঢাকা ও সচিব রেলপথ মন্ত্রণালয় ঢাকা, মহাপরিচালক বাংলাদেশ রেলওয়ে রেল ভবন ঢাকা, মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিমাঞ্চল) বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহী, বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক লালমনিরহাট সহ ডাকযোগে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছিল।