img

হার্ট অ্যাটাক কেন হয়, লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

প্রকাশিত :  ০৯:৫৩, ২৪ মার্চ ২০২৫

হার্ট অ্যাটাক কেন হয়, লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

হার্ট অ্যাটাক একটি প্রাণঘাতী মেডিকেল ইমার্জেন্সি। দ্রুত এর চিকিৎসা না করালে মৃত্যুঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে কিছু পূর্ব লক্ষণ আগেভাগে বুঝতে পারলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব।  

হার্ট অ্যাটাকের ৬টি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ 

১. বুকব্যথা  

গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাকের শিকার রোগীদের মধ্যে ৪০ শতাংশের অনেক আগেই বুকব্যথার অভিজ্ঞতা হয়েছিল। অনেকে সামান্য ব্যথাকে গুরুত্ব দেন না, কিন্তু এটি হার্ট অ্যাটাকের একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব লক্ষণ হতে পারে।  

২. বুকে ভারবোধ  

৪৪ শতাংশ রোগী হার্ট অ্যাটাকের আগে বুকে ভারী অনুভূতি বা চাপ অনুভব করেছিলেন। বিশেষ করে শারীরিক পরিশ্রম, সিঁড়ি ওঠা বা দ্রুত হাঁটার পর যদি বুকে চাপ অনুভূত হয়, তবে এটি সতর্ক সংকেত হতে পারে।  

৩. বুক ধড়ফড় করা  

৪২ শতাংশ রোগী বুক ধড়ফড় বা হার্টবিট অনিয়মিত হওয়ার মতো অনুভূতির কথা জানিয়েছেন। কেউ কেউ হার্টবিট মিস হওয়ার কথাও বলেন। এটি হার্টের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।  

৪. শ্বাসকষ্ট বা হাঁপিয়ে যাওয়া  

শারীরিক পরিশ্রম ছাড়াই যদি শ্বাসকষ্ট অনুভূত হয় বা হাঁপিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে, তবে এটি হার্টের কার্যক্রম দুর্বল হওয়ার ইঙ্গিত দিতে পারে। বিশ্রামের সময়ও এমন লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।  

৫. বুক জ্বালাপোড়া  

অনেকে বুক জ্বালাপোড়া অনুভব করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা মনে করেন এবং গ্যাসের ওষুধ খাওয়া শুরু করেন। তবে যদি গ্যাসের ওষুধেও উপশম না হয়, তাহলে এটি হার্টের সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।  

৬. দুর্বলতা ও ক্লান্তিবোধ  

দীর্ঘদিন ধরে অস্বাভাবিক দুর্বলতা বা ক্লান্তি থাকলে সেটি অবহেলা করা উচিত নয়। অনেক ক্ষেত্রে এটি হার্টের সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে।  

অন্যান্য লক্ষণ  

বুক ব্যথা ছাড়াও হার্ট অ্যাটাকের সময় মাথা ঝিমঝিম করা, বমিভাব, অনিদ্রা, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, পা ফোলা বা ভারী লাগার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে এসব লক্ষণের উপস্থিতি পুরুষদের তুলনায় বেশি দেখা যায়। তবে অনেকের ক্ষেত্রে কোনো পূর্ব লক্ষণ ছাড়াই হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।  

হার্ট অ্যাটাক হলে সঙ্গে সঙ্গে যা করবেন  

১. আতঙ্কিত হবেন না  

হার্ট অ্যাটাক হলে বা উপসর্গ দেখা দিলে প্রথমেই ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিন। আতঙ্কিত হয়ে গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।  

২. দ্রুত চিকিৎসা নিন  

অবিলম্বে নিকটস্থ হাসপাতালে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন। যত দ্রুত চিকিৎসা শুরু হবে, তত বেশি বিপদ এড়ানো সম্ভব।  

৩. অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ান  

লম্বা শ্বাস নিন এবং ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এতে শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়বে এবং হৃৎপিণ্ড কিছুটা স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারবে।  

৪. কাশির মাধ্যমে সাপোর্ট দিন  

হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হলে রোগীকে ঘন ঘন কাশি দিতে বলা হয়। প্রতিবার কাশি দেওয়ার আগে গভীর শ্বাস নিতে হবে। এতে হৃৎপিণ্ড স্বাভাবিকভাবে রক্ত সঞ্চালনের জন্য প্রস্তুত হতে পারে।  

৫. অ্যাসপিরিন বা নাইট্রোগ্লিসারিন নিন  

যদি রোগীর আগে থেকে হার্টের সমস্যা থাকে এবং চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যাসপিরিন বা নাইট্রোগ্লিসারিন ব্যবহার করার নির্দেশনা থাকে, তবে তা দ্রুত গ্রহণ করুন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে ওষুধ নেওয়া ঠিক নয়।  

৬. রোগীকে শুইয়ে দিন  

রোগীকে সমতল স্থানে শুইয়ে দিন এবং যদি সম্ভব হয়, পা কিছুটা উঁচুতে রাখুন। এতে রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করবে।  

৭. আশেপাশের কাউকে জানিয়ে দ্রুত সাহায্য নিন  

হার্ট অ্যাটাক হলে নিজে গাড়ি চালিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা না করে আশপাশের কাউকে জানিয়ে দ্রুত সাহায্য নিন।  

হার্ট অ্যাটাক একটি ভয়াবহ সমস্যা, তবে আগেভাগে লক্ষণ চিনতে পারলে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিলে প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সুষম খাবার গ্রহণ, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়।


img

বয়সের ছাপ দূর করার ঘরোয়া উপায়

প্রকাশিত :  ১৫:৫১, ১৭ মে ২০২৫

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ত্বকে কিছু পরিবর্তন আসতে শুরু করে। বার্ধক্যের দাগ, বলিরেখা, মুখের সুক্ষ্ম রেখা ইত্যাদি চেহারায় দেখা যায়। তবে সারা বছর যত্ন নিলে সেই ছাপকে ঠেকিয়ে রাখা অনেকটা সহজ হয়। তবে ‘যত্ন’ বলতে কিন্তু পার্লারে যাওয়া নয়।

মূলত ঘরোয়া যত্ন ও ত্বক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এক্ষেত্রে অনেক বেশি কার্যকর। পার্লারে নানা রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় বলে ত্বকের পক্ষে সেগুলো ভাল নয়।

রূপচর্চা বিশেষজ্ঞরা জানান, ঘরোয়া কিছু উপাদানকে সারা বছর নিজের রূপসজ্জার রুটিনে ঢুকিয়ে ফেলতে পারলে ত্বকে বলিরেখা দূর করা যায়। হাতের কাছে থাকা নারকেল তেলই হতে পারে মুশকিল আসান।

যে কোনও অ্যান্টি এজিং ক্রিমের তুলনায় নারকেল তেলের ভূমিকা ত্বকের পক্ষে ভাল। তবে এটি হতে একেবারে খাঁটি নারিকেল তেল।

খুব তৈলাক্ত ত্বক হলে সরাসরি নারকেল তেল না মেখে তার সঙ্গে কিছু সহজলভ্য ঘরোয়া উপাদান মিশিয়ে ব্যবহার করতেই পারেন।

শুধু বলিরেখা নয়, ত্বকের অন্যান্য সমস্যা রুখতেও এই নারকেল তেল খুবই কার্যকর।

যেভাবে ব্যবহার করবেন:

এক টেবিল চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিডার, চার-পাঁচ ফোঁটা ভার্জিন নারকেল তেল ও এক চামচ পানি মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ সারা মুখে লাগিয়ে শুকোতে দিন। এ বার সারা মুখে খানিকটা ভার্জিন নারকেল তেল আলাদা করে মাসাজ করুন। সারা রাত তেল মুখে বসুক। সকালে উঠে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। যে কোনও অ্যান্টি এজিং ক্রিমের তুলনায় ত্বকের বয়স ঠেকাতে বেশি কাজে আসবে এই মিশ্রণ।

পরিষ্কার করে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নেওয়ার পর তোয়ালে দিয়ে চেপে জলটা মুছে নিন। এ বার ভার্জিন নারকেল তেল গোটা মুখে মাসাজ করে শুয়ে পড়ুন। পরের দিন সকালে ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। বয়সের ছাপ দূর করতে এটি বেশ কার্যকর।

লেবু দিয়ে দুধ কাটিয়ে ছানা বানিয়ে নিন। এ বার পানি ঝরানো ছানার সঙ্গে দু’টেবিল চামচ ভার্জিন নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। ছানা ও তেলের এই মিশ্রণ মুখে ভাল করে মাসাজ করে মিনিট পনেরো পর ধুয়ে নিন মুখ। সপ্তাহে তিন দিন এই মিশ্রণ মুখে মাখতে পারলে বয়সের কারণে নিষ্প্রভ ত্বকে জেল্লা আসবে সহজেই।

ত্বকের জন্য হলুদ খুবই উপকারী। হলুদের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট কোলাজেন উৎপন্ন করে ত্বককে টানটান রাখে। এ ছাড়া ফ্রি র্যাডিক্যালসের ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করাও ভার্জিন নারকেল তেলের অন্যতম কাজ। এক চিমটে হলুদ ও কয়েক ফোঁটা নারকেল তেল মিশিয়ে সেই মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেললে ত্বক নরম তো হবেই। সঙ্গে বলিরেখাও দূর হবে।

তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার