img

গুড় নাকি চিনি কোনটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?

প্রকাশিত :  ১৫:২০, ০৮ এপ্রিল ২০২৫

গুড় নাকি চিনি কোনটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?

মিষ্টিজাতীয় খাবার কমবেশি সবারই প্রিয়। যেকোনো খুশির সংবাদে সবার আগে আমরা মিষ্টির দোকানেই ছুটে যাই। মিষ্টি ছাড়া যেন আমাদের উৎসব আয়োজন অপূর্ণ থাকে। কমবেশি সবাই আমরা মিষ্টি খেতে ভালোবাসি।

আর এই মিষ্টি জাতীয় খাদ্যের প্রধান ও মূল উপকরণ হচ্ছে চিনি। তবে এই চিনি খেতে মিষ্টি হলেও এর ফল কিন্তু মোটেই মিষ্টি নয়। অতিরিক্ত চিনি আমাদের স্বাস্থ্যকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

চিনির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আলোচনা করেছেন ডাক্তার খূশনুর চৈতী। 

তিনি জানান, চিনি একটি নীরব ঘাতক। চিনি শরীরে বিষের মতো কাজ করে অনেকটা। স্লো পয়জনিংয়ের মাধ্যমে শরীরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। চিনি খাওয়া অনেকটা নেশার মত বলা যায়। বারবার খেতে ইচ্ছে করে। বাজার থেকে যে চিনি কিনে এনে চা কিংবা মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়, সেটি শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

আসুন জেনে নিই, চিনি আমাদের শরীরে যে ধরনের ক্ষতি করে-

১. ওজন বৃদ্ধি করে

চিনি অতিরিক্ত ক্যালোরি প্রদান করে, যা শরীরে জমা হয়ে ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত প্রসেসড চিনি খাওয়ার ফলে স্থূলতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ফলে শরীর খুব দ্রুত মোটা হয়ে যায়। অতিরিক্ত ফ্যাট জমে গেলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

২. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়

নিয়মিত অতিরিক্ত চিনি খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। যদি দৈনিক চিনি থেকে ১৫০ ক্যালরি গ্রহণ করা হয়, তাহলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায় অন্তত ১ দশমিক ১ শতাংশ।

৩.লিভারের ক্ষতি

অতিরিক্ত চিনি খেলে লিভারের চারপাশে অতিরিক্ত চর্বির স্তর তৈরি হয়। ফলে লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যেতে থাকে।

৪.রক্ত চলাচলে বাধা

শরীরের রক্ত চলাচলের ধমনীর দেয়ালের পুরুত্ব বাড়িয়ে দিতে পারে চিনি। ফলে রক্ত স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারে না এবং রক্তচাপ বেড়ে যায়।

৫.স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয়

চিনির কারণে আলঝেইমারসের মতো রোগ হতে পারে। ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় চিনি।

৬.প্রদাহ এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করে

চিনি প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়া বাড়ায় এবং দীর্ঘমেয়াদে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়। অতিরিক্ত চিনে খেলে বিষণ্নতা তৈরি হয়। শরীর সবসময় ক্লান্ত লাগে।

৭.হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়

বেশি মাত্রায় চিনি খেলে রক্তের প্রবাহ পরিবর্তিত হয়। ফলে হার্ট অ্যাটাক, হার্টফেল করার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।

৮.ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়

ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আয়ু কমিয়ে আনে চিনি। এ ছাড়া চিনি বেশি খেলে ক্যান্সারের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

৯. দাঁতের ক্ষতি করে

চিনি ব্যাকটেরিয়ার জন্য খাবার হিসেবে কাজ করে, যা ক্যাভিটি এবং দাঁতের ক্ষয়ের মূল কারণ। মিষ্টিজাতীয় খাবার গ্রহণের পর ব্রাশ না করলে দাঁতে চিনি লেগে থাকে। ফলে সেখানে ব্যাকটেরিয়া জমে দাঁতের ক্ষতি করে।

১০. ত্বকের সমস্যা দেখা দেয়

চিনি কোলাজেনের গুণমান কমিয়ে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয়। এটা ব্রণের সমস্যাও বাড়াতে পারে। পাশাপাশি কোলাজেন ও ইলাস্টিনের ক্ষতি করে। চিনি সোরিয়াসিস খারাপ করে এবং ত্বকের প্রদাহ বাড়ায়।

তবে চিনির বিকল্প হিসেবে গুড় বেছে নিতে পারেন। কেননা চিনির তুলনায় গুড়ের ক্ষতিকর দিক কিছুটা হলেও কম। তবে মনে রাখবেন, অতিরিক্ত গুড়ও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত গুড় খাওয়া উচিত নয়। তাই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য পরিশোধিত চিনির পরিমাণ কমিয়ে গুড় বা অন্যান্য প্রাকৃতিক মিষ্টি উপাদান ব্যবহার করাই ভালো সিদ্ধান্ত।


img

বয়সের ছাপ দূর করার ঘরোয়া উপায়

প্রকাশিত :  ১৫:৫১, ১৭ মে ২০২৫

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ত্বকে কিছু পরিবর্তন আসতে শুরু করে। বার্ধক্যের দাগ, বলিরেখা, মুখের সুক্ষ্ম রেখা ইত্যাদি চেহারায় দেখা যায়। তবে সারা বছর যত্ন নিলে সেই ছাপকে ঠেকিয়ে রাখা অনেকটা সহজ হয়। তবে ‘যত্ন’ বলতে কিন্তু পার্লারে যাওয়া নয়।

মূলত ঘরোয়া যত্ন ও ত্বক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এক্ষেত্রে অনেক বেশি কার্যকর। পার্লারে নানা রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় বলে ত্বকের পক্ষে সেগুলো ভাল নয়।

রূপচর্চা বিশেষজ্ঞরা জানান, ঘরোয়া কিছু উপাদানকে সারা বছর নিজের রূপসজ্জার রুটিনে ঢুকিয়ে ফেলতে পারলে ত্বকে বলিরেখা দূর করা যায়। হাতের কাছে থাকা নারকেল তেলই হতে পারে মুশকিল আসান।

যে কোনও অ্যান্টি এজিং ক্রিমের তুলনায় নারকেল তেলের ভূমিকা ত্বকের পক্ষে ভাল। তবে এটি হতে একেবারে খাঁটি নারিকেল তেল।

খুব তৈলাক্ত ত্বক হলে সরাসরি নারকেল তেল না মেখে তার সঙ্গে কিছু সহজলভ্য ঘরোয়া উপাদান মিশিয়ে ব্যবহার করতেই পারেন।

শুধু বলিরেখা নয়, ত্বকের অন্যান্য সমস্যা রুখতেও এই নারকেল তেল খুবই কার্যকর।

যেভাবে ব্যবহার করবেন:

এক টেবিল চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিডার, চার-পাঁচ ফোঁটা ভার্জিন নারকেল তেল ও এক চামচ পানি মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ সারা মুখে লাগিয়ে শুকোতে দিন। এ বার সারা মুখে খানিকটা ভার্জিন নারকেল তেল আলাদা করে মাসাজ করুন। সারা রাত তেল মুখে বসুক। সকালে উঠে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। যে কোনও অ্যান্টি এজিং ক্রিমের তুলনায় ত্বকের বয়স ঠেকাতে বেশি কাজে আসবে এই মিশ্রণ।

পরিষ্কার করে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নেওয়ার পর তোয়ালে দিয়ে চেপে জলটা মুছে নিন। এ বার ভার্জিন নারকেল তেল গোটা মুখে মাসাজ করে শুয়ে পড়ুন। পরের দিন সকালে ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। বয়সের ছাপ দূর করতে এটি বেশ কার্যকর।

লেবু দিয়ে দুধ কাটিয়ে ছানা বানিয়ে নিন। এ বার পানি ঝরানো ছানার সঙ্গে দু’টেবিল চামচ ভার্জিন নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। ছানা ও তেলের এই মিশ্রণ মুখে ভাল করে মাসাজ করে মিনিট পনেরো পর ধুয়ে নিন মুখ। সপ্তাহে তিন দিন এই মিশ্রণ মুখে মাখতে পারলে বয়সের কারণে নিষ্প্রভ ত্বকে জেল্লা আসবে সহজেই।

ত্বকের জন্য হলুদ খুবই উপকারী। হলুদের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট কোলাজেন উৎপন্ন করে ত্বককে টানটান রাখে। এ ছাড়া ফ্রি র্যাডিক্যালসের ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করাও ভার্জিন নারকেল তেলের অন্যতম কাজ। এক চিমটে হলুদ ও কয়েক ফোঁটা নারকেল তেল মিশিয়ে সেই মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেললে ত্বক নরম তো হবেই। সঙ্গে বলিরেখাও দূর হবে।

তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার