img

পারভেজ হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাবি ছাত্রদলের মানববন্ধন

প্রকাশিত :  ১০:৪৯, ২১ এপ্রিল ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৩:১৩, ২১ এপ্রিল ২০২৫

পারভেজ হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাবি ছাত্রদলের মানববন্ধন

প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল।

সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 

মানববন্ধনে ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, জাহিদুল ইসলাম পারভেজ ছাত্রলের সক্রিয় কর্মী এবং সে গণঅভ্যুত্থানের নায়ক ছিলো। তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এরপর যদি ছাত্রদলের কোনো নেতাকর্মীর উপর হামলা হয় তাহলে আমরা ক্ষমা করে দেব না। দেশনেতা তারেক রহমানের ভাষ্য অনুযায়ী আমরা ৩১ দফা পূরণের মাধ্যমে আমাদের প্রতিশোধ নেবো।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সম্পর্কে তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী একটি সামাজিক সংগঠন। আমরা দল-মত নির্বিশেষে সবাই এখানে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন এই ব্যানার কলুষিত করছে কারা এই প্রশ্ন রেখে যাচ্ছি। এই ব্যানারকে কাজে লাগিয়ে যারা অগণতান্ত্রিক আচরণ করে যাচ্ছে তাদের আমরা হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছি। 

নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ করে ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, তিনি কথায় কথায় বলেন, ছাত্রদল সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দখল করে নিয়েছে। আরে ভাই, আপনি কিছুদিন আগ পর্যন্ত তো নিয়োগ বাণিজ্য করে আশেপাশের লোকজনসহ ফুলেফেঁপে তালগাছ হয়ে গেছেন। গতকাল মন্ত্রণালয়ে যে নিয়োগ পেলো সে নিজেই তো ফ্যাসিবাদের দোসর। 

তিনি বলেন, এখন হলগুলোতে ফ্যাসিবাদের দোসররা ঘাঁটি গেড়ে বসেছে। ৭১ এর পরাজিত শক্তি এবং ২৪ এর পরাজিত শক্তিরা মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। ক্যাম্পাসে লাগানো সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিলো কিন্তু আমরা সহিষ্ণুতা দেখিয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমরা নামে বেনামে অনেকের ব্যানার দেখে যাচ্ছি। তাছাড়া, এফ রহমান হলে আমাদের মুড়ি পার্টিকে আপনারা গেস্টরুম বলে চালিয়ে দিয়েছিলেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্ট ধারণ করেই আমরা কর্মসূচি গ্রহণ ও পালন করে থাকি। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ছাত্রদল যে পরিমাণ সহিষ্ণুতা দেখিয়েছি তা নজিরবিহীন। কেউ আমাদের খুব বড় কোনো ভুল ধরতে পারছে না।

মিডিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার সময় এসেছে। আপনারা সুস্থ সাংবাদিকতা করুন। আপনারা যদি এখন বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা না করেন দেশকে কে এগিয়ে নেবে? আপনারা কথায় কথায় ট্যাম্পু স্ট্যান্ড, ট্রাক স্ট্যান্ড এই-সেই বলে আমাদের সমালোচনা শুরু করেন। মিস হেডলাইন দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ান, এটা গ্রহণযোগ্য না। আপনারা আমাদের যৌক্তিক সমালোচনা করুন, আমরা নিজেদের শুধরে নেবো।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ব্যানারের মাধ্যমে ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চলছে। কেউ যদি এই ব্যানারকে ব্যবহার করে ছাত্রলীগের পুনর্বাসন করে তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেবো। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কিন্তু কঠোর অবস্থান নিতে ভুল করব না। 

ছাত্রদলের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী ছাত্রনেতাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে নির্মমভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী সন্ত্রাসের রাজত্বকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা চলছে। আমাদের উদারতা, নমনীয়তা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতাকে যদি কেউ সহজ সরলভাবে গ্রহণ করেন তাহলে আপনারা ভুল ভাবছেন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কোনো গুপ্ত সংগঠন না, গুপ্ত রাজনীতিতে বিশ্বাসী না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোনো সরকারি দপ্তরে আমরা কোনো অনির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি দেখতে চাই না। তাদের সবাইকে অতি দ্রুত পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ, ছাত্র প্রতিনিধির নামে যে বৈষম্য চলছে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।

ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে অসংখ্য ছাত্র নির্যাতনকারী, ছাত্রলীগের দোসর, ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা সাধারণ শিক্ষার্থী বেশে এখনো ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা করছে। যদি কাউকে দেখেন ছাত্রলীগের দোসরের ভূমিকায় ছিল তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অবগত করবেন।

মানববন্ধনে ঢাবি ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সহ-সভাপতি আনিসুর রহমান অনিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন শাওন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামিম আক্তার শুভ, সাংগঠনিক সম্পাদক নূর আলম ভূঁইয়া ইমন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

শিক্ষা এর আরও খবর

img

সিরাজগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যার দায়ে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত :  ১০:২২, ২০ মে ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১০:৩০, ২০ মে ২০২৫

সিরাজগঞ্জে নাজমুল ইসলাম নামে এক সবজি ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এসময় তাদের প্রত্যেককে আরও ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ১ মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। 

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এম আলী আহমেদ আসামিদের অনুপস্থিতিতে এই রায় প্রদান করেন। 

মামলার আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছে। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার পারধুন্দিয় গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে খাজা মিয়া, হরিনাথপুর বিষপুকুর গ্রামের মৃত ময়েজ উদ্দিনের ছেলে মো. এনামুল, দরগাপাড়া গ্রামের মৃত মজিবর শেখের ছেলে মোজাহিদ, পারধুন্দিয়া গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে বসু, মাদারদহ পূর্বপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমান প্রধানের ছেলে সাইদুল ইসলাম ও সাঘাটা থানার রামনগর গ্রামের নজরুল ইসলাম সরকারের ছেলে মিলন সরকার। 

অন্যদিকে ভিকটিম নওগাঁ জেলার বাসিন্দা। 

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, নাজমুল ইসলাম নওগা জেলার চকগৌরী বাজার হতে সবজি কিনে ঢাকার বাইপাইল এলাকায় আড়তে বিক্রি করতেন। গত ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট দুপুরে সে একইভাবে ট্রাকে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরের দিনে পরিবারের সাথে কথা হলেও রাত ১২টার দিকে নাজমুলের মোবাইল থেকে ভিকটিমের বউয়ের মোবাইল ফোনে কল করে জানানো হয় নাজমুলকে চন্দ্রা এলাকা হতে কিডন্যাপ করা হয়েছে এবং ৫০ হাজার টাকা পেলে ছেড়ে দিবে। 

পরবর্তীতে পরিবার নাজমুলের সাথে কথা বলতে চাইলেও বলতে দেওয়া হয়না। পরেরদিন ১২ তারিখ সকালে জানতে পারেন যে নাজমুলকে সিরাজঞ্জের সলঙ্গা থানা পুলিশ মৃত অবস্থায় পেয়েছে। খবর পেয়ে সলঙ্গা থানায় গিয়ে পরিবার তার মৃতদেহ সনাক্ত করেন এবং নাজমুলের বাবা আব্দুর রহমান বাদী হয়ে এই মামলার এজাহার দায়ের করেন। 

এই মামলায় মোট ৭ জন আসামি করা হয়। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ বিচারক দ্যা পিনাল কোড, ১৮৬০ এর ৩৬৪, ৩০২, ২০১ তৎসহ পঠিত ৩৪ ধারার অধীন চার্জ গঠন করেন। পরে একজনের মৃত্যু হলে মামলার বিচার চলাকালে তাকে এই মামলার দায় হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। 

ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) শাকিল মোহাম্মদ শরিফুর হায়দার রফিক সরকার জানান, রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণের জন্য মোট ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য উপস্থাপন করে। সাক্ষ্য শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে দ্যা পিনাল কোড, ১৮৬০ এর ৩৯৬ তৎসহ পঠিত ৩৪ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আজ এই রায় ঘোষণা করেন।