img

পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা

প্রকাশিত :  ১৭:১৬, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা

রোমান ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে পৌঁছান তিনি।

এর আগে, শুক্রবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে ইতালির উদ্দেশে কাতার ত্যাগ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি রোমে পৌঁছায়। সেখানে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান।

বিশ্বের প্রথম লাতিন আমেরিকান পোপ, পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্য হতে চলেছে আগামীকাল শনিবার সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার সামনে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে। এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেবেন বিশ্বের নানা দেশের নেতারা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন। তা ছাড়া অন্য বিশ্বনেতাদের মধ্যে ফ্রান্সিসের জন্মভূমি আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলি, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা ডি সিলভা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেবেন। চার্চের সর্বোচ্চ ধর্মীয় ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এ অনুষ্ঠানের নেতৃত্ব দেবেন ক্যাথলিক চার্চের কার্ডিনাল কলেজের ডিন জিওভান্নি বাত্তিস্তা রে।

জানা গেছে, শেষকৃত্যের শেষে তিনি ‘চূড়ান্ত সমর্পণ প্রার্থনা’ পাঠ করবেন, যার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পোপকে ঈশ্বরের হাতে সমর্পণ করা হবে।

এরপর পোপের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে রোমের সান্তা মারিয়া মেজিওর ব্যাসিলিকায়, যেখানে তাকে সমাহিত করা হবে।

পোপ ফ্রান্সিস প্রথা ভেঙে সেন্ট পিটার্সের বদলে রোমের সান্তা মারিয়া ব্যাসিলিকায় সমাহিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সেখানে পোপ ফ্রান্সিসের বহু পূর্বসূরির সমাধি আছে।

৮৮ বছর বয়সী পোপ ফ্রান্সিস চলতি বছরের প্রথম দিকে দুইবার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে ছিলেন।

প্রায় এক মাস আগে তিনি হাসপাতাল থেকে ভ্যাটিক্যানের বাসায় ফিরেছিলেন।

ইস্টার সানডে উপলক্ষে রবিবার সেন্ট পিটার্স স্কয়ারেও হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু তার পরদিন সকালে ভ্যাটিকান তার মৃত্যুর খবর জানায়।

img

বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে ইসলাম ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা

প্রকাশিত :  ১৮:৫৫, ১১ জুন ২০২৫

গত এক দশকে বিশ্বব্যাপী ইসলাম ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা অন্যান্য ধর্মের তুলনায় সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি অন্যান্য সব প্রধান ধর্মের সম্মিলিত প্রবৃদ্ধিকেও ছাড়িয়ে গেছে ইসলামের সম্প্রসারণ। ‘পিউ রিসার্চ সেন্টার’-এর সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, ইসলাম এখন বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্ম।
গবেষণাটি ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়কাল ঘিরে পরিচালিত হয়েছে এবং এটি ‘গ্লোবাল রিলিজিয়াস ল্যান্ডস্কেপ’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে।

পিউ রিসার্চ জানিয়েছে, ইসলাম ধর্মে এই বৃদ্ধির প্রধান চালিকা শক্তি হলো প্রাকৃতিক জনসংখ্যা বৃদ্ধি। ধর্মান্তরণের ভূমিকা এখানে খুবই সীমিত। মুসলিম পরিবারে গড় সন্তানসংখ্যা অন্য ধর্মের তুলনায় বেশি। বর্তমানে সারাবিশ্বে প্রায় ২০০ কোটি মানুষ এই ধর্মের অনুসারী।
২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতি মুসলিম নারী গড়ে ২.৯ সন্তান জন্ম দিয়েছেন, যেখানে অমুসলিম নারীর ক্ষেত্রে এই হার ২.২। তাছাড়া মুসলিম জনগোষ্ঠীর গড় বয়স তুলনামূলকভাবে কম, যা জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
গবেষণা অনুযায়ী, খ্রিষ্টধর্ম এখনো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্ম, যার অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ২৩০ কোটি। তবে ইসলাম দ্রুত বাড়তে থাকায় দুই ধর্মের মধ্যকার সংখ্যাগত ব্যবধান দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।
২০১০ সাল থেকে খ্রিষ্টধর্মের অনুসারীর সংখ্যা বিশ্বে গড়ে ১.৮ শতাংশ হারে কমেছে। এ সময়ে ইসলাম ধর্মের অনুসারী বেড়েছে প্রায় ৩৫ কোটি, যা খ্রিষ্টধর্মের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি।
অঞ্চলভিত্তিক পরিবর্তন
বিশ্বজুড়ে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতেই ইসলাম ধর্মের প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি হয়েছে। কাজাখস্তান, বেনিন ও লেবাননে ইসলাম ধর্মে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। তবে ওমান ও তানজানিয়ায় মুসলমানদের অনুপাত কিছুটা কমেছে।
ধর্মহীন মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে। চীনে সবচেয়ে বেশি ধর্মহীন মানুষ বাস করেন, যাদের সংখ্যা প্রায় ১৩০ কোটি। যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মহীন মানুষের সংখ্যা ২০১০ সালের তুলনায় বেড়েছে ৯৭ শতাংশ।
ধর্মত্যাগ ও ধর্মান্তর প্রবণতা
গবেষণায় দেখা গেছে, খ্রিষ্টধর্ম, হিন্দুধর্ম ও বৌদ্ধধর্মে ধর্মত্যাগের হার ধর্মান্তরের চেয়ে বেশি।
বিশেষ করে খ্রিষ্টধর্মে, প্রতি একজন প্রাপ্তবয়স্ক নতুন অনুসারীর বিপরীতে তিনজন ধর্ম ত্যাগ করেছেন। অন্যদিকে, ধর্মহীনতায় প্রবেশের হারও বেশি—প্রতি একজন ধর্মহীনতা ছেড়েছেন, আর তিনজন নতুন করে ধর্মহীন হয়েছেন।

তবে ইসলাম একমাত্র প্রধান ধর্ম, যেখানে ধর্মান্তরিত হয়ে আসা মানুষের সংখ্যা ধর্মত্যাগীদের চেয়ে বেশি।

বিশ্ব ধর্মের বর্তমান চিত্র
ইসলাম : এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম। প্রায় ২০০ কোটি মানুষ এই ধর্মের অনুসারী, যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ।
খ্রিষ্টধর্ম : বৃহত্তম ধর্ম, যার অনুসারী সংখ্যা ২৩০ কোটি।
ধর্মহীন : সংখ্যা বেড়ে ২০০ কোটিতে, ২০১০ সালের তুলনায় বেড়েছে ২৭ কোটি।
হিন্দুধর্ম : তৃতীয় বৃহত্তম ধর্ম, এর ১২০ কোটি অনুসারী রয়েছে; গত এক দশকে বেড়েছে ১২.৬ কোটি, তবে বৈশ্বিক হারে অপরিবর্তিত।

বৌদ্ধধর্ম : একমাত্র ধর্ম যার অনুসারীর সংখ্যা কমেছে — ১.৮৬ কোটি হ্রাস পেয়ে হার ৫% থেকে ৪%-এ নেমেছে।
ইহুদি ধর্ম : গত এক দশকে এর মাত্র ১০ লাখ জনসংখ্যা বেড়েছে। অন্যান্য ধর্ম (শিখ, বাহাই ইত্যাদি) সম্মিলিতভাবে প্রায় ২০ কোটি অনুসারী, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২.২ শতাংশ।
এই গবেষণাটি পরিষ্কারভাবে দেখায় যে, ইসলাম শুধু প্রাকৃতিকভাবে নয়, বৈশ্বিক ধর্মীয় পরিবর্তনের ধারাতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি, ধর্মহীনতা ও ধর্মত্যাগের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আগামী দশকে বিশ্ব ধর্মীয় মানচিত্রে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।