img

বাহুবলের কৃতিসন্তান পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত স্বামী শিবানন্দ আর নেই

প্রকাশিত :  ০৭:১৩, ০৪ মে ২০২৫

বাহুবলের কৃতিসন্তান পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত স্বামী শিবানন্দ আর নেই

সংগ্রাম দত্ত: হবিগঞ্জের বাহুবাল থানার কৃতি সন্তান ভারতের পদ্মশ্রী প্রাপ্ত যোগীগুরু স্বামী শিবানন্দ ১২৯ বছর বয়সে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি হসপিটালে ৩ মে রাত ৯টার দিকে নিউমোনিয়া এবং পরবর্তী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে স্হূলদেহ ত্যাগ করেন। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

স্বামী শিবানন্দ ১৮৯৬ সালের ৮ আগস্ট তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের আসাম প্রদেশের সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমার বাহুবল থানার হরিতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হলেন  যোগী সন্ন্যাসী এবং যোগগুরু। 

তাঁর পিতার নাম পিতা শ্রীনাথ গোস্বামী মাতা ভগবতী দেবী। মা, বাবা, কয়েক বছরের বড় দিদি আরতিসহ দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে জীবন ধারণ করতেন। চরম দারিদ্র্যতার কারণে ৪ বছর বয়সে উনাকে নবদ্বীপের বিখ্যাত সন্ন্যাসী স্বামী ওঙ্কারানন্দর কাছে দিয়ে  দেন। এর দুই বছর পর, যখন তাঁর বয়স ৬ বছর, তিনি সন্ন্যাসীর সাথে বাড়ীতে ফিরে এসে শোনেন দিদি না খেতে পেয়ে মারা গেছেন। বাড়ীতে আসার ৭ দিন পর মা-বাবা একই দিনে মারা যান। তিনি স্বামী ওঙ্কারানন্দের সাথে পিতা-মাতার শ্রাদ্ধ শেষ করে ১৯০১ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপ গমন করে সেখানে পড়াশোনা শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম বি বি এস পাশ করেন। ১৯২৫ সালে তিনি বিলেত যাত্রা করেন সেখান থেকে মনোবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

যোগব্যায়ামের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য স্বামী শিবানন্দ ২০২২ সালের মার্চ মাসে ভারত সরকার কর্তৃক দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হন। বিদেশি অনুরাগীদের আমন্ত্রণে তিনি ইংল্যান্ড, গ্রিস, ফ্রান্স, স্পেন, অস্ট্রিয়া, ইতালি, হাঙ্গেরি, রাশিয়া, পোল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, বুলগেরিয়া, যুক্তরাজ্যসহ অর্ধশতাধিক দেশ সফর করেছেন।

ভারতের উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে বসবাসরত চিরকুমার স্বামী শিবানন্দের মানবসেবাই ব্রত। তাঁর কোন রোগ নেই। তিনি স্বল্পহারী, তৈলাক্ত খাবার, দুধ, ফল এড়িয়ে চলেন। চশমা ছাড়াই পড়তে পারেন। ভক্তদের দেওয়া টাকা পয়সা উনি গ্রহণ করেন না। প্রতিদিন যোগ ব্যায়াম করেন। বারাণসীতে (কাশী) উনার এক ভক্তের দেয়া ফ্ল্যাট উনি ছেড়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ থেকে যাওয়া পূণ্যার্থীদের জন্য। সেখানে এক মাস থাকা- খাওয়া ফ্রি।

২০২৪ সালের গত ৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আসেন ভারতের ধর্মগুরু স্বামী শিবানন্দ। তিনি ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে যান। পরে আসেন হবিগঞ্জে। তিনি বানিয়াচং উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিম হাওড় পাড় বিখ্যাত তীর্থস্থান বিথঙ্গল আখড়া, মৌলভীবাজারের রাজনগরের বিষ্ণুপদ ধামসহ শতাধিক মন্দির পরিদর্শন  করে ভক্তদের দীক্ষাদান করছেন।  

১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ বাহুবল থানার হরিতলা গ্রামের কৃতি সন্তান যোগ সাধক মানব হিতৈষী পরম বৈষ্ণব ১২৮ বছর বয়সী পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত ড. স্বামী শিবানন্দজীকে ৪নং বাহুবল সদর ইউনিয়নের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান আজমল হোসেন চৌধুরী লালগালিচা দিয়ে গণসংবর্ধনা প্রদান করেন। বাহুবলের মৌড়ি গ্রামের মন্দির প্রাঙ্গণে সকাল ১০ ঘটিকায় এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা ও সভাপতিত্ব করেন বাহুবল সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আজমল হোসেন চৌধুরী।

তাঁর নিজ গ্রাম হরিপুরের শত শত মানুষ তাঁকে দেখতে সেখানে আসেন। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ধর্মগুরু সন্ন্যাসী ডক্টর স্বামী শিবানন্দ (যোগী) সিলেট শহরের মির্জা জাঙ্গাল রাজবাড়ী মাতৃকুঠিরে শ’শ’ শিষ্যকে জীবনমুখী শিক্ষা দেন। গত ২৩ শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ভারতে ফিরে যান বলে জানা গেছে।

১২৯ বয়সী স্বামী ডক্টর শিবানন্দ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত ব্যক্তি ছিলেন বলে জানা গেছে।

সিলেটের খবর এর আরও খবর

img

সিলেটে চা দিতে দেরি করায় রেস্টুরেন্টকর্মীকে হত্যা

প্রকাশিত :  ১০:৫০, ১৩ জুলাই ২০২৫

চা দিতে দেরি করায় সিলেটে রেস্টুরেন্টের এক কর্মচারীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। রেস্টুরেন্টে চা দেয়া নিয়ে বাকবিতন্ডার জের ধরে তাকে খুন করা হয় বলে জানা গেছে।

আজ রোববার (১৩ জুলাই) সকালে নগরের কাজির বাজার এলাকায় রুমন (২২) নামের ওই তরুণকে খুন করা হয়।

পুলিশ জানায়, সকাল ৯টার দিকে এক যুবক চা খেতে কাজির বাজারের মাছ বাজারের পাশের একটি রেস্টুরেন্টে ঢুকেন। এসময় চা দিতে বিলম্ব হওয়ায় তিনি রুমনের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। তখন রেস্টুরেন্টের মালিক ও আশপাশের লোকজন তাদেরকে শান্ত করেন এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

তবে এর কিছুক্ষণ পর ওই যুবক আরো কয়েকজনকে সাথে নিয়ে রেস্টুরেন্টে ঢুকে রুমনের উপর হামলা চালান। একপর্যায়ে রুমনকে ছুরিকাঘাত করে তারা পালিয়ে যান। পরে তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছ সিলেট কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক বলেন, হামলাকারীর পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তাকে ধরতে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।


সিলেটের খবর এর আরও খবর