img

বড়লেখায় চোরাই অটোরিকশা বিক্রি করতে গিয়ে ৪ জন গ্রেপ্তার

প্রকাশিত :  ০৬:৫৯, ০৬ মে ২০২৫

বড়লেখায় চোরাই অটোরিকশা বিক্রি করতে গিয়ে ৪ জন গ্রেপ্তার

মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা থানা পুলিশ আন্ত:জেলা সিএনজি চালিত অটোরিকশা চোর চক্রের ৪ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার বেলা দুইটার দিকে উপজেলার দাসেরবাজার ও চান্দগ্রাম এলাকা থেকে স্থানীয় জনসাধারণ ও সিএনজি মালিকের সহযোগিতায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এসময় তাদের কাছ থেকে পুলিশ বড়লেখা ও সিলেটের বিভিন্ন জায়গা থেকে চুরি করা তিনটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা উদ্ধার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- বড়লেখা উপজেলার চান্দগ্রামের বাছির উদ্দিনের ছেলে মাছুম আহমদ, সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার পূর্ব মোবারকপুর গ্রামের আব্দুল হাদির ছেলে নাহিদ আহমদ, একই উপজেলার শাখারকান্দি গ্রামের আহমদ আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম ও ষাইটধা গ্রামের আব্দুল আহাদের ছেলে সিরাজুল ইসলাম।

থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের বরইকান্দি এলাকার এক মালিকের একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা সোমবার সকালে চান্দিরপুর এলাকা থেকে চুরি হয়। চোরেরা অটোরিকশাটি নিয়ে বড়লেখা উপজেলার দাসেরবাজারে যায়। লোকেশন ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে সিএনজি মালিক দাসেরবাজার পর্যন্ত সিএনজিটির অবস্থান নিশ্চিত হন। পরে স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগিতায় এক বাড়িতে তার সিএনজি শনাক্ত করেন। তখন ওই বাড়িতে তিন চোর ঘুমাচ্ছিল। তাদের আটক করে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। গ্রেপ্তার তিন চোরের তথ্য অনুযায়ী বড়লেখা উপজেলার চান্দগ্রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের সহযোগি চোরকে গ্রেপ্তার ও আরো দুইটি চোরাই সিএনজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। চোরেরা জানিয়েছে, বিক্রি করতেই তারা সিএনজি নিয়ে বড়লেখার দাসেরবাজারে গিয়েছিল।

বড়লেখা থানার ওসি মো. আবুল কাশেম সরকার সোমবার বিকেলে জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা আন্ত:জেলা সিএনজি চালিত অটোরিকশা চোর সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য। তাদের কাছ থেকে তিনটি চোরাই সিএনজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার ৩ সিএনজির একটির মালিক গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। অপর দুই সিএনজি মালিকের মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মঙ্গলবার গ্রেপ্তারকৃত ৪ আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

সিলেটের খবর এর আরও খবর

img

কুলাউড়ায় স্কুল ছাত্রী হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, ঘাতক গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধার

প্রকাশিত :  ১২:৫৮, ১৭ জুন ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৫৯, ১৭ জুন ২০২৫

সংগ্রাম দত্ত: মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় স্কুল ছাত্রী নাফিসা জান্নাত আনজুম (১৫) হত্যায় প্রতিবেশী মো: জুনেল মিয়াকে (৩৯) গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া আসামির দেখানো মতে এবং পুলিশের তল্লাশীকালে হত্যাকাণ্ডের আশেপাশে বিভিন্ন স্থানে ফেলে রাখা ভিকটিমের পরিহিত বোরকা, স্কুল ব্যাগ, বই ও একটি জুতা উদ্ধার করে পুলিশ। 

সোমবার (১৬ জুন ) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে  মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন এসব তথ্য গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে তুলে ধরেন।

গত ১২ জুন সকালে কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের আব্দুল খালিকের কন্যা এবং স্থানীয় শ্রীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী নাসিফা জান্নাত আনজুম (১৫) 
কোচিং ক্লাসে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় । এরপর সে আর ফিরে আসেনি। সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ নিয়েও তাকে না পেয়ে স্বজনরা ঐ দিনই কুলাউড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ।

নিখোঁজের দুই দিন পর ১৪ জুন বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে বাড়ির পাশের ছড়ার পাশে দূর্গন্ধ পেয়ে ভিকটিমের ভাই ও মামা অর্ধগলিত মরদেহটি খুঁজে পান এবং পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে লাশের সুরতহাল প্রস্তুত করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় থানায় ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়। 

ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) নোবেল চাকমা, কুলাউড়া সার্কেলের (অতিঃ দায়িত্বে) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আজমল হোসেন, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ গোলাম আপছার, পুলিশ পুরিদর্শক সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্যসহ একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। 

দ্রুততম সময়ে ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল (অতিঃ দায়িত্বে কুলাউড়া সার্কেল) নেতৃত্বে কুলাউড়া থানার অফিসারদের নিয়ে কয়েকটি বিশেষ টিম গঠন করে আশেপাশের বাপক তল্লাশী করা হয়। এসময় ঘটনাস্থলের পাশে একটি ঝোপ থেকে ভিকটিমের স্কুল ব্যাগ, বই এবং একটি জুতা উদ্ধার করা হয়। 

শুধু স্থানীয় লোকদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিশেষ ৬টি টিম গঠন করা হয়। স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য, আলামত উদ্ধারের জাগো এবং নারী ঘটিত কিছু বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্টতা দেখে সন্দেহ হওয়ায় জুনেল মিয়াকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তার মোবাইল চেক করে পর্ন সাইটে ব্রাউজিং এর তথ্য দেখে পুলিশের সন্দেহ আরও বাড়ে। আটকের পর দুপুর থেকে রাত প্রায় ১২ টা পর্যন্ত জুনেল মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।  জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে পুলিশ সুপারের সামনে রাত ১২ টার দিকে হত্যাকাণ্ডে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে। 

জিজ্ঞাসাবাদের জুনেল মিয়া জানায়, ভিকটিম তার বাড়ির সামনের একটি রাস্তা দিয়ে প্রায়ই স্কুল ও প্রাইভেটে আসা যাওয়া করত। সেই সুবাদে জুনেল মিয়া ভিকটিমের সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করে ঘটনার দিন গত ১২জুন ভিকটিম পাশের গ্রামে প্রাইভেট পড়া শেষে আসামীর বাড়ীর সামনের রাস্তা দিয়ে ফেরার পথে সকাল অনুমান ১০.৩০ ঘটিকার সময় আসামী ভিকটিমের সাথে কথা বলতে বলতে তার পিছু নেয়। ভিকটিম এড়িয়ে যেতে চাইলে জুনেল মিয়া ভিকটিমকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে। তখন ভিকটিম চিৎকার করলে জুনেল মিয়া তার হাত দিয়ে গলায় চাপ দিয়ে ধরলে ভিকটিম ঘটনাস্থল কিরিম শাহ মাজারের মধ্যের রাস্তায় অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর ভিকটিমকে মোকাম সংলগ্ন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া ছড়ার পাড়ে ঝোপে ফেলে রাখে। 

মোকামের মাঠে পড়ে থাকা ভিকটিমের স্কুল ব্যাগ ও একটি জুতা ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী ঘন ঝোপে  এবং ভিকটিমের পরিহিত বোরকাটি নিকটবর্তী কিরিম শাহ মাজারের উত্তর পাশে জনৈক রওশন আলী গংয়ের পারিবারিক কবরস্থানের সীমানা বাউন্ডারীর পাশে ছুড়ে ফেলে দেয়। পুলিশ আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার দিবাগত রাতে স্থানীয় লোকজন এবং মিডিয়ার উপস্থিতিতে ভিকটিমের সেই বোরখা উদ্ধার করে।

সিলেটের খবর এর আরও খবর