img

ব্রিটেন ও ফ্রান্সের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে ভারত

প্রকাশিত :  ০৫:৪৬, ০৮ মে ২০২৫

 ব্রিটেন ও ফ্রান্সের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে ভারত

ভারত-পাকিস্তান হামলা-পাল্টা হামলায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত। মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতের পর পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ভারত। এর জবাবে ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করার দাবি করেছে পাকিস্তান। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের আশঙ্কা বৃদ্ধি পেয়েছে। সামরিক অভিযান সংক্রান্ত কয়েকটি রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতীয় বায়ুসেনা রাফাল যুদ্ধবিমান থেকে জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে স্ক্যাল্প, হ্যামার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ৷ ব্যবহার করা হয়েছে কামিকাজে ড্রোন ৷ এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি কীভাবে কাজ করে ?

স্ক্যাল্প ক্ষেপণাস্ত্র

স্ক্যাল্প (এসসিএএলপি) ক্ষেপণাস্ত্রটি ব্রিটেন ও ফ্রান্সের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত ৷ ব্রিটেনে এই ক্ষেপণাস্ত্র \'স্ট্রম শ্যাডো\' নামে পরিচিত ৷ \'অপারেশন সিঁদুর\'-এ ভারতীয় যুদ্ধবিমান রাফাল-এ এই স্ক্যাল্প ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করা ছিল ৷

আকাশপথে দুরপাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রটি গত শতকের ন\'য়ের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে ফ্রান্সের মাত্রা এরোস্পেস কোম্পানি এবং ব্রিটিশ এরোস্পেস (এখন এমবিডিএ নামে পরিচিত) তৈরি করে চলেছে ৷

ওজন 1 হাজার 300 কেজি, দৈর্ঘ্য 5.10 মিটার ৷ এর মধ্যে মাইক্রোটার্বো টিআরআই 60-30 টার্বোজেট ইঞ্জিন রয়েছে ৷ এর রফতানিকারক সংস্করণটিকে 560 কিমি দূরত্বে ছোড়া যায় ৷ এর মধ্যে 450 কেজি ওজনের ক্ষেপণাস্ত্র থাকে ৷

কয়েকটি স্ক্যাল্প 250 কিমিরও বেশি দূরত্বে হামলা চালাতে পারে ৷ আবার অন্য কয়েকটি 500 কিমি দূরত্বে আঘাত হানতে সক্ষম ৷ এর নেভিগেশন পদ্ধতিটি অত্যাধুনিক ৷ ইনারশিয়াল নেভিগেশন সিস্টেম (আইএনএস), জিপিএস, টেরাইন রেফারেন্স নেভিগেশন (টিইআরপিআরওএম) এবং ইমেজিং ইনফ্রারেড (আইআইআর) নেভিগেশনের দ্বারা এই ক্ষেপণাস্ত্র পরিচালিত হয় ৷

এটি 450 কেজি ওজনের ব্রোচ (বিআরওএসিএইচ) ওয়ারহেড বহন করতে পারে ৷ ইউরোফাইটার টাইফুন, দাসো রাফাল, মিরেজ 2000 যুদ্ধবিমানে স্ক্যাল্প ক্ষেপণাস্ত্র থাকে ৷ স্যাটেলাইনট নেভিগেশন সেন্সরের মাধ্যমে দিকনির্দেশ করতে পারে ৷

যে কোনও পরিকাঠামোর মধ্যে থেকে নিশানাকে আলাদা করে চিহ্নিত করতে পারার ক্ষমতা রয়েছে এই মিসাইলের ৷ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে নিশানাকে চিহ্নিত করে লক্ষ্যে অভ্রান্ত আঘাত হানতে পারে ৷

হ্যামার

স্ক্যাল্প ছাড়া আরেকটি \'হ্যামার\' ক্ষেপণাস্ত্রও ব্যবহার করা হয়েছে এই \'অপারেশন সিঁদুর\'-এ ৷ এর পুরো নাম- \'হাইলি অ্যাজাইল মডিউলার মিউনিশন এক্সটেনডেড রেঞ্জ\' ৷ যে কোনও ঋতুতে যে কোনও সময় আকাশ থেকে মাটিতে (এয়ার টু গ্রাউন্ড) এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত হানা সম্ভব ৷

70 কিমি পর্যন্ত নিশানায় আছড়ে পড়তে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র ৷ ফ্রান্সের \'সাফরান ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ডিফেন্স\' এই ক্ষেপণাস্ত্রটি তৈরি করেছে ৷

স্ক্য়াল্প-এর মতো হ্যামারও একশো শতাংশ নিশ্চয়তার সঙ্গে লক্ষ্যভেদ করতে সক্ষম ৷ অল্প উচ্চতা থেকে উপত্যকায় আছড়ে পড়তে পারে ৷ নিশানা স্থির হোক বা চলমান- দুই ক্ষেত্রে আঘাত হানতে সমান পারদর্শী হ্যামার ৷

কামিকাজে ড্রোনস

একশো শতাংশ সঠিক লক্ষ্যভেদের জন্য এই কামিকাজে ড্রোন ব্যবহার করা হয় ৷ এর আরেক নাম সুইসাইড ড্রোনস বা আত্মঘাতী ড্রোন ৷ লক্ষ্যবস্তুতে আছড়ে না-পড়া পর্যন্ত এটি ঘুরতে থাকে ৷ তাই এর আরেক নাম \'লয়টারিং মিউনিশন\' ৷ নিশানাকে চিহ্নিত করে তার উপর হামলা চালাতে এই অস্ত্রের জুড়ি মেলা ভার ৷ বিস্ফোরক বয়ে নিয়ে যেতে মানববিহীন এই আকাশ যান (আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকলস, ইউএভিএস) ব্যবহার করা হয় ৷ ইরান-সহ বেশ কয়েকটি দেশ এই ইউএভিএস তৈরি করে ৷

যুক্তরাজ্য এর আরও খবর

ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা ডুবে শিশুসহ নিহত ৫ | JANOMOT | জনমত

img

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি ব্রিটেনের

প্রকাশিত :  ০৭:২১, ০৯ জুলাই ২০২৫

ফিলিস্তিনের গাজায় মানবিক সংকট অব্যাহত থাকলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি মঙ্গলবার পার্লামেন্টের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির বৈঠকে এ মন্তব্য করেন।

ডেভিড ল্যামি তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে গঠিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএফএইচ) নামের ত্রাণ সরবরাহব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছে। “আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি—এই ফাউন্ডেশনকে আমরা সমর্থন করি না। এটা কার্যকরভাবে কাজ করছে না। অনেক মানুষ এখনো অনাহারে, অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন,” বলেন ল্যামি।

গত কয়েক সপ্তাহে জিএফএইচ-এর সহায়তা নিতে গিয়ে বহু ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি গুলিতে নিহত হয়েছেন বলেও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

বৈঠকে এক আইনপ্রণেতা ল্যামিকে প্রশ্ন করেন—‘গাজায় এই সহ্য করা অসম্ভব পরিস্থিতি চলতে থাকলে যুক্তরাজ্য কি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে?’ জবাবে ল্যামি বলেন, ‘হ্যাঁ, নেব।’

গত মাসে যুক্তরাজ্য অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ের সঙ্গে একযোগে ইসরায়েলি মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ও বেজালেল স্মোটরিচের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দেওয়ার দায়ে তাদের ওপর এই পদক্ষেপ নেয়া হয়।

এর আগেই যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনা স্থগিত করে। গাজা অবরোধ ঘিরে খাদ্যসংকট শুরু হলে লন্ডন থেকে কিছু অস্ত্র রপ্তানিও বন্ধ রাখা হয়।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, এসব পদক্ষেপ এখনো প্রতীকী পর্যায়ে রয়েছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর চাপ তৈরিতে তা যথেষ্ট নয়।

ল্যামি বৈঠকে বলেন, পশ্চিম তীরে অবৈধ ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণ ও দখলদারি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। তবে যুক্তরাজ্যের চাপ প্রয়োগে তেল আবিবের আচরণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে কি না—এমন প্রশ্নে ল্যামি স্বীকার করেন, এখনো পরিবর্তন ‘অপর্যাপ্ত’।

তবুও তিনি যুক্তরাজ্যের অবস্থানকে অন্য জি–৭ দেশ বা ইউরোপের মিত্রদের তুলনায় অনেক শক্তিশালী বলে দাবি করেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হয়তো এককভাবে পুরো অঞ্চলকে পাল্টে দিতে পারি না, কিন্তু যা করছি, তার সঙ্গে তুলনীয় কেউ নেই।’

প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং ইসরায়েলের একটি বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। পাশাপাশি গাজায় আটক ইসরায়েলিদের অবস্থান শনাক্তে ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ার ফোর্স বহু নজরদারি অভিযানও পরিচালনা করেছে।

অন্যদিকে যুক্তরাজ্য নিজ দেশেও ফিলিস্তিনি অধিকারকর্মীদের ওপর চাপ বৃদ্ধি করেছে। সম্প্রতি ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ নামের একটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয় এবং বহু কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ল্যামি বলেন, যুক্তরাজ্য একতরফাভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চায় না। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই এই স্বীকৃতি এমন এক সময়ে আসুক, যখন তা বাস্তব সমাধানের পথ তৈরি করতে সহায়ক হবে।’

তবে পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির চেয়ার এমিলি থর্নবেরি বলেন, অব্যাহত দখলদারি ও বসতি সম্প্রসারণের বাস্তবতায় যদি যুক্তরাজ্য আর অপেক্ষা করে, তাহলে ‘স্বীকৃতি দেওয়ার মতো কিছু থাকবে না’।

তিনি বলেন, ‘আমরা এখনই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়ে সেই রাষ্ট্র গঠনের জন্য কাজ শুরু করতে পারি। না হলে, এই সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাবে।’


যুক্তরাজ্য এর আরও খবর