img

বরেণ্য সংগীতশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী মারা গেছেন

প্রকাশিত :  ০৫:৫৫, ১০ মে ২০২৫

বরেণ্য সংগীতশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী মারা গেছেন

বরেণ্য সংগীতশিল্পী, গবেষক, লেখক মুস্তাফা জামান আব্বাসী আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭। শনিবার (১০ মে) সকাল সাতটায় বনানীর একটি হাসপাতালে তিনি মারা গেছেন। তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার কন্যা শারমিন আব্বাসী। 

বেশ কিছুদিন ধরে বাধ্যর্কজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন মুস্তাফা জামান আব্বাসী। সর্বশেষ গতকাল শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

মুস্তাফা জামান আব্বাসী উপমহাদেশের এক প্রখ্যাত সংগীত পরিবারের সন্তান। পিতা আব্বাস উদ্দীন আহমেদ পল্লীগীতির কিংবদন্তী শিল্পী। এদেশের পল্লীসংগীতকে তিনিই প্রথম বিশ্বের দেশে দেশে জনপ্রিয় করেছেন। চাচা আব্দুল করিম ছিলেন পল্লীগীতি ও ভাওয়াইয়া ভাটিয়ালি গানের জনপ্রিয় শিল্পী। বড় ভাই বিচারপতি মোস্তফা কামাল আইনবিশারদ। মোস্তফা কামালের কন্যা নাশিদ কামালও একজন বরেণ্য শিল্পী। বোন ফেরদৌসী রহমান দেশের প্রথিতযশা বহুমাত্রিক প্রতিভার সংগীতজ্ঞ হিসেবে সমাদৃত।

মোস্তফা জামান আব্বাসী ভারতের কোচবিহার জেলার বলরামপুর গ্রামে ৮ ডিসেম্বর ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব ও কৈশোর কাল কলকাতায় কাটে। এই পরিবারটির সাথে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতা ছিল। মুস্তাফা জামানের শিক্ষাজীবন কলকাতায় শুরু হয়। তিনি ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স এবং ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে এমএ পাস করেন। তিনি সঙ্গীতসাধনা ও সাহিত্যচর্চায় নিজস্ব অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। সঙ্গীত বিষয়ক গবেষণাতেও তিনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন। তিনি বেতার ও টেলিভিশনে সঙ্গীতবিষয়ক অনেক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন। পত্র-পত্রিকাতে তিনি একজন সুখপাঠ্য কলাম লেখক হিসেবেও সুপরিচিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স ও এমএ, হার্ভার্ড গ্রুপ থেকে মার্কেটিং অধ্যয়ন, দীর্ঘদিন শিল্পগোষ্ঠীর মহাব্যবস্থাপক ছিলেন, ছিলেন ব্যবসা সফল ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবেও নিযুক্ত ছিলেন তিনি। পঁচিশটি দেশে ভাটিয়ালি, বিচ্ছেদী, ভাওয়াইয়া, চটকা, নজরুলগীতি পরিবেশন করে খ্যাতি অর্জন করেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে আন্তর্জাতিক লোকসংগীত সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব ও সঙ্গীত পরিবেশন করেন। ইউনেস্কোর ছত্রছায়ায় বাংলাদেশ ন্যাশনাল কমিটি অব মিউজিকের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এগারো বছর, একাধিকবার বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন সঙ্গীতজ্ঞদের বিশ্ব অধিবেশনে।

দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর ফোক মিউজিক রিসার্চ গ্রুপের পরিচালক ও সংগ্রাহক হিসেবে কয়েক হাজার গান তার সংগ্রহে ছিল। বাংলা লোকসঙ্গীতের মূল্যবান লালনের গান, ভাটিয়ালি, বিচ্ছেদী, ভাওয়াইয়া, চটকা ছিল তার সংগ্রহে। সম্পাদিত ‘দুয়ারে আইসাছে পালকি’ ও স্বাধীনতা দিনের গান’ উল্লেখযোগ্য সংকলন গ্রন্থ। ‘জার্নাল অব ফোক মিউজিকের’র সম্পাদক ছিলেন তিনি। ‘লোকসংগীতের ইতিহাস’, ‘ভাওয়াইয়ার জন্মভূমি’, (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড), ‘ভাটির দ্যাশের ভাটিয়ালি’ প্রথম খণ্ডে সর্বমোট ছ’শত গান স্বরলিপি ও বিবক্ষণসহ প্রকাশিত, দেশে বিদেশে প্রশংসিত। 

কবি, লেখক ও গবেষক মুস্তফা জামান আব্বাসীর ২১টি গ্রন্থ পাঠকনন্দিত। জীবনকালে তিনি নানা পদকে ভূষিত হয়েছিলেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য: শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, লালন পুরস্কার, নজরুল একাডেমি পুরস্কার, আব্বাসউদ্দিন গোল্ড মেডেল, এ্যাপেক্স ফাউন্ডেশন পুরস্কার, একুশে পদক, জাতীয় প্রেস ক্লাব লেখক পুরস্কার, সিলেট মিউজিক পুরস্কার, মানিক মিয়া পুরস্কার, নাট্যসভা উপস্থাপক পুরস্কার, বাংলা সন চৌদ্দশতবার্ষিকী পুরস্কার ইত্যাদি। এশিয়া মিডিয়া সামিট, আন্তর্জাতিক রুমি কর্মকাণ্ড, আন্তর্জাতিক সুফি সম্মেলন, লোকসংস্কৃতি সেমিনার, রেডিও টেলিভিশনে বক্তব্য ও গানের জলসা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন তিনি।

img

ফিলিস্তিনের পক্ষ নিয়ে ভারতীয়দের তোপের মুখে অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর

প্রকাশিত :  ১৩:৪৬, ১৭ জুন ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৪:৪৩, ১৭ জুন ২০২৫

এবার ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন ভারতীয় অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর। সামাজিক মাধ্যমে ট্রোলড হচ্ছেন তিনি। নিজের মতামত জানিয়ে আগেও সমালোচনার মুখে পড়েছেন স্বরা।

প্যালেস্টাইন নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে স্বরার একটি পোস্টের পরই নতুন করে সামাজিক মাধ্যমে আক্রমণের শিকার এই অভিনেত্রী। নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলেছেন স্বরার দিকে।

সম্প্রতি স্বরা তার এক্স হ্যান্ডেলে প্যালেস্টাইন ইস্যু নিয়ে একটি পোস্ট করেন। সেখানে প্যালেস্টাইন ও গাজার পাশে থাকা নিয়ে একটি বার্তা দেন তিনি। তার পোস্টে লেখা, অক্টোবর নয়, ১৯৪৮ সালেই শুরু হয়েছিল।

প্যালেস্টাইনে সাম্প্রতিক কালে নয় বরং ১৯৪৮ সালেই যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল সে কথাই বোঝাতে চেয়েছেন এর মাধ্যমে স্বরা। অন্যদিকে আরও একটি ছবিতে তিনি জানিয়েছেন, ১৮ জুন, মুম্বাইয়ের আজাদ ময়দানে গাজার পাশে থাকার জন্য বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের এক সমাবেশের কথাও। এই ঘটনার পর থেকেই নেটিজেনদের রোষের মুখে পড়েছেন তিনি। এ সময় নিজের দেশের পেহেলগাঁও হামলার পরে কোনো শোকবার্তা না জানানোর প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন নিন্দুকেরা। কেউ কেউ লিখেছেন, ‘পেহেলগাঁও কাণ্ডের পর এরকম সমব্যথী হননি তো?’

কেউ আবার বলেছেন, ‘মুম্বাই প্যালেস্টাইন নয়। প্যালস্টাইনের পাশে দাঁড়াতে হলে সেখানেই যান।’