img

৩৬টি স্থানে পাকিস্তানের ৪০০ ড্রোন হামলার কথা স্বীকার করল ভারত

প্রকাশিত :  ০৬:১০, ১০ মে ২০২৫

৩৬টি স্থানে পাকিস্তানের ৪০০ ড্রোন হামলার কথা স্বীকার করল ভারত

৮ ও ৯ মে’র মাঝরাতে ৩৬টি স্থানে প্রায় ৩০০-৪০০টি ড্রোন ব্যবহার করে লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) ডিঙিয়ে ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। শুক্রবার এমন অভিযোগ করেছে ভারত শুক্রবার (৯ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য ওয়ায়ার।

দ্য ওয়ায়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব ড্রোনের মাধ্যমে সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা এবং বেসামরিক বিমানকে ঢাল হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রী, সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার ভূমিকা সিংহ এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানান, পাকিস্তানের এই ড্রোন অনুপ্রবেশের সম্ভাব্য উদ্দেশ্য ছিল ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষা করা।  ভারতের হাতে ধরা পড়া ড্রোনগুলোর ধ্বংসাবশেষ প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সেগুলো তুরস্কের আসিসগার্ড সংগার ড্রোন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৭ মে) রাতে ভারত ‘অপারেশন সিদুঁর’ চালিয়ে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি লক্ষ্যবস্তুতে সামরিক হামলা চালায়। 

উইং কমান্ডার ভূমিকা সিংহ বলেন, সামরিক স্থাপনার ওপর হামলার উদ্দেশ্যে ৮ এবং ৯ মে’র মাঝরাতে ভারতের পশ্চিম সীমান্তজুড়ে আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী। এলওসি এবং আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর লেহ থেকে সির ক্রিক পর্যন্ত ৩৬টি স্থানে ৩০০ থেকে ৪০০ ড্রোন পাঠানো হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী কাইনেটিক এবং নন-কাইনেটিক পদ্ধতিতে এই ড্রোনগুলো নামিয়ে দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, এসব অনুপ্রবেশ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষা ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল।

তিনি আরও জানান, পাকিস্তানের একটি সশস্ত্র ইউএভি ভারতের বাঠিন্ডা সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা করেছিল, যেটিকে সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে। জবাবে ভারতীয় সশস্ত্র ড্রোন পাকিস্তানের চারটি আকাশ প্রতিরক্ষা ঘাঁটিতে হামলা চালায় এবং এর মধ্যে একটি ড্রোন পাকিস্তানের একটি এয়ার ডিফেন্স রাডার ধ্বংস করতে সক্ষম হয়।

ভূমিকা বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী এলওসি বরাবর ভারী ক্যালিবারের কামান থেকে গোলাবর্ষণ করে এবং টাংধার, উরি, পুঞ্চ, মেন্ধার, রাজৌরি, অখনূর ও উধমপুরে সশস্ত্র ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালায়, যার ফলে ভারতীয় সেনাদের কিছু ক্ষয়ক্ষতি ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। পালটা হামলায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান তাদের বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ না করে বরং ‘ঢাল হিসেবে’ ব্যবহার করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে ভূমিকা বলেন, ৭ মে রাত ৮টা ৩০ মিনিটে পাকিস্তান ভারতের ওপর একটি ব্যর্থ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। কিন্তু তারা তাদের বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ করেনি। বরং করাচি-লাহোর বিমানপথে বেসামরিক বিমান চলছিল, যা পাকিস্তানের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণকে আবারও সামনে এনেছে। তারা জানে ভারত এই হামলার জবাবে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেবে।

ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উত্তেজনার জেরে দেশের ২৮টি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে জম্মু ও কাশ্মীরের এলওসি ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর একাধিক সামরিক স্থাপনা ও বেসামরিক এলাকায় ভারী গোলাবর্ষণ ও ড্রোন-মিসাইল হামলার কারণে এক নারী নিহত এবং অপর একজন আহত হয়েছেন।  বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়।  জম্মু শহর ও সীমান্তবর্তী বিভিন্ন গ্রামে রাতভর গোলাগুলির আওয়াজ, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া এবং সাইরেনের শব্দে আতঙ্কে রাত কাটান সাধারণ মানুষ।


আন্তর্জাতিক এর আরও খবর

img

মিয়ানমারে উলফার ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ড্রোন হামলা

প্রকাশিত :  ১৪:৫৬, ১৩ জুলাই ২০২৫

মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) অন্তত চারটি ক্যাম্পে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হামলার অভিযোগ উঠেছে।

আজ রোববার ভোরের দিকে শতাধিক ড্রোন ব্যবহার করে ভারতের সামরিক বাহিনীর চালানো এই হামলায় উলফার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে সংগঠনটি। তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে মিয়ানমারে হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এনইর খবরে বলা হয়েছে, আসামে উলফার চারটি ক্যাম্পকে নিশানা করে ভারতীয় সেনাবাহিনী ড্রোন হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেছে ভারতে নিষিদ্ধ এই সংগঠন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত উলফার একাধিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে শক্তিশালী অভিযান পরিচালনা করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। শতাধিক ড্রোন ব্যবহার করে নিষিদ্ধ ঘোষিত এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর একাধিক ঘাঁটিতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানা হয়েছে।

দেশটির একটি সূত্র বলেছে, হামলায় উলফার কয়েকজন সদস্য নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। নিহতদের মধ্যে উলফার অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা ও সংগঠনটির সামরিক শাখার জ্যেষ্ঠ কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল নয়ন অসমও রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভারতের বেসরকারি সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত বিদ্রোহী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ আসাম-ইন্ডিপেনডেন্টের (উলফা-আই) মিয়ানমারে অবস্থিত পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তরে ড্রোন হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

রোববার ভোরের দিকে মিয়ানমারে গোষ্ঠীটির পূর্বাঞ্চলীয় ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করে উলফা-আই। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলেছে, ‘‘সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর চালানো এই হামলায় উলফা-আইয়ের অন্তত ১৯ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ১৯ জন।’’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, উলফা-আইয়ের শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার নয়ন মেধি ওই হামলায় নিহত হয়েছেন। মণিপুরের বিদ্রোহী সংগঠন পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) রাজনৈতিক শাখা রেভল্যুশনারি পিপলস ফ্রন্টের (আরপিএফ) কয়েকজন সদস্যও হতাহত হয়েছেন।

যদিও ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহেন্দ্র রাওয়াত দেশটির বার্তা সংস্থা আইএএনএসকে বলেছেন, এ ধরনের কোন অভিযানের তথ্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে নেই।