img

শীতের কঠিন সময়ে টাওয়ার হ্যামলেটসের উদ্যোগ: ৪ হাজার পেনশনভোগী পেলেন উইন্টার ফুয়েল সহায়তা, ওয়ার্ম হাবে সুবিধা পেয়েছেন হাজারো বাসিন্দা

প্রকাশিত :  ০৯:০৯, ১৫ মে ২০২৫

শীতের কঠিন সময়ে টাওয়ার হ্যামলেটসের উদ্যোগ: ৪ হাজার পেনশনভোগী পেলেন উইন্টার ফুয়েল সহায়তা, ওয়ার্ম হাবে সুবিধা পেয়েছেন হাজারো বাসিন্দা

এবারের শীত মৌসুমে টাওয়ার হ্যামলেটস্ বারার ৬টি ওয়ার্ম হাব ভিজিট করেছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। যেখানে কাউন্সিল স্টাফরা প্রতিদিন শত শত কাপ চা, কফি এবং স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস পরিবেশন করেছেন। কস্ট অফ ক্রাইসিস বা জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ার চাপ মোকাবেলায় স্বল্প আয়ের বাসিন্দা বা পরিবারগুলোর সহায়তা করতে টাওয়ার হ্যামলেটস্ কাউন্সিল এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল।

তীব্র শীতে বাসিন্দারা যাতে নিরাপদ এবং আরামদায়ক পরিবেশে থাকতে পারেন সেজন্য সারাদেশ জুড়ে কাউন্সিলগুলো এসব ওয়ার্ম হাব ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়।

টাওয়ার হামলেটস কাউন্সিল গত ডিসেম্বর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত আইডিয়া স্টোর এবং লাইব্রেরিতে ছয়টি ওয়ার্ম হাবের ব্যবস্থা করেছিল।

কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির সাথে পার্টনারশিপ হওয়ার ফলে কুইন মেরি প্রায় ৪ শত ৭৯ ঘণ্টা ভলান্টিয়ার সহায়তা প্রদান করেছে এবং ২ হাজার ৭ শত ৫০টি এনার্জি প্যাক স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে বিতরণ করেছে । এনার্জি প্যাক গুলোর মধ্যে টুপি, গ্লাভস, স্কার্ফ, কম্বল এবং ফ্লাস্ক অন্তর্ভুক্ত ছিল।

হাউসহোল্ড সাপোর্ট ফান্ডের সহায়তায় টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল উইন্টার ফুয়েল স্কিমে প্রায় ১ মিলিয়ন বরাদ্দ করে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে চালু হওয়া এই স্কিমটি থেকে বারার ৪ হাজার ১ শত ৯৪ জন বাসিন্দা উপকৃত হন। যারা একালীন ১৭৫ পাউন্ড উইন্টার ফুয়েল পেমেন্ট পেয়েছেন।

টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান বলেছেন, “সমাজের কোনো মানুষই চাইবেনা যে, তার পরিবারের খাবার কিংবা নিজের বাড়ি উষ্ণ রাখতে অন্য কেউ এসে সহায়তা করুক। আমি গর্বিত যে, সরকারের বাজেট কাট সত্ত্বেও টাওয়ার হ্যামলেটস দেশের প্রথম কাউন্সিল যেখানে শীতকালীন সময়ে উইন্টার ফুয়েল ফান্ড পুণরায় চালু করে।”

মেয়র বলেন, “আমাদের উইন্টার সাপোর্ট প্যাকেজে ছিল বারার অনেক বাসিন্দাদের লাইফলাইন সহায়তা। তীব্র শীতের কঠিন সময়ে নিরাপদ এবং গরম থাকার জন্য কাউন্সিলের পক্ষ থেকে দেওয়া উইন্টার ফুয়েল পেমেন্ট এবং ওয়ার্ম হাব বারার হাজার হাজার বাসিন্দা ব্যবহার সুযোগ পেয়েছেন।”

“বারার অসহায় মানুষদের সহায়তায় এবং তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় মোকাবেলায় আমরা সব সময় পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। এ জন্য আমাদের নতুন বাজেটে মিল অন হুইল প্রোগ্রামে ৩ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যার আওতায় বারার ভালনারেবল বাসিন্দাদের ঘরে গরম খাবার পৌছে দেয়া হবে। এছাড়া ৩ দশমিক ১ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে  এনার্জি সাপোর্ট ফান্ডের জন্য, যা নিম্ন—আয়ের পরিবারের ব্যয়ের সংকট মোকাবেলায় সাহায্য করবে।”

টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল বারার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার খরচ মোকাবেলায় ধারাবাহিকভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে। টাওয়ার হ্যামলেটস হচ্ছে দেশের প্রথম কাউন্সিল যারা সেকেন্ডারি স্কুল শিক্ষার্থীদের জন ফ্রি স্কুল মিল দিচ্ছে এবং পুণরায় চালু করে শিক্ষার্থীদের জন্য এডুকেশন মেইনটেনেন্স এলাউন্স ও ইউনিভার্সিটি বার্সারি। এছাড়ও আগামী ৩ বছরের জন্য ফ্রি স্কুল ইউনিফর্ম গ্র্যান্ট চালু করেছে কাউন্সিল। এই সুবিধা পাবেন বারার ২১ হাজার শিক্ষার্থী।

কেবিনেট মেম্বার ফর কস্ট অফ লিভিং এন্ড রিসোর্সেস, কাউন্সিলর সাইদ আহমেদ বলেন, “আমি আনন্দিত ওয়ার্ম হাব এবং উইন্টার ফুয়েল স্কিমের মাধ্যমে আমরা এত বেশি সংখ্যক বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। এ বছর সারা দেশে ৫০,০০০ পেনশনভোগী ফুয়েল পোভার্টি বা জ্বালানি দারিদ্রের ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে জানা গেছে, তাই আমরা বয়স্ক রেসিডেন্টদের সহায়তাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি।”

কাউন্সিলর সাইদ আরও বলেন, “বয়স্করা যেতে স্বাধীনভাবে জীবন যাপন করতে পারেন সে ব্যাপারে তাদেরকে সহায়তা করতে আমরা আগ্রহী। এছাড়াও সেবা লাভের যোগ্য সকল রেসিডেন্টকে আমরা বিনামূল্যে হোমকেয়ার প্রদান করব। পুরো দেশজুড়ে মাত্র দুটি কাউন্সিল এ সেবা প্রদান করছে যার মধ্যে আমাদের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল একটি।”

পেনশনভোগীরা পেনশন ক্রেডিটের মাধ্যমে বছরে ৩,৯০০ পাউন্ড পর্যন্ত পেতে পারেন। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, টাওয়ার হ্যামলেটসে ১৭ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের পেনশন ক্রেডিটের সুবিধা রেসিডেন্টরা দাবি করছেন না।

পেনশন ক্রেডিটের সুবিধা দাবি করতে, পেনশন ক্রেডিট এর হেল্পলাইনে ০৮০০ ৯৯ ১২৩৪ নম্বরে কল করুন অথবা https://www.gov.uk/pension-credit এ অনলাইনে আবেদন করুন।

আমরা যে সহায়তা এবং পরিষেবাগুলি অফার করি সে সম্পর্কে আরও জানতে www.towerhamlets.gov.uk/costofliving ভিজিট করুন অথবা ০২০৭ ৩৬৪ ৫০৪০ নম্বরে কল করুন।


কমিউনিটি এর আরও খবর

img

স্বাদ, সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির মেলবন্ধনে ব্রিটেনের কার্ডিফে বিগ-হালাল ফুড ফেস্টিভ্যাল সম্পন্ন

প্রকাশিত :  ১৬:৫৬, ১৭ জুন ২০২৫

কার্ডিফ থেকে সাজেল আহমেদ: হালাল খাবার হলো সেই সব খাদ্য, যা কোরআন ও হাদিসে নিষিদ্ধ করা হয়নি এবং যা পবিত্র ও উপকারী। গণতন্ত্রের মাতৃভূমি খ্যাত মাল্টিকালচারাল ও মাল্টিন্যাশনাল শহর  ব্রিটেনের ওয়েলসের রাজধানী কার্ডিফ শহরের কার্ডিফে-বে ওয়েলস মেলোনিয়াম সেন্টারে আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিবছরের মতো গত ১৪ জুন ( শনিবার) ও ১৫ জুন (রোববার) দু\'দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো বিগ-হালাল ফুড ফেস্টিভ্যাল ২০২৫।

মুসলিম জনগোষ্ঠীর জীবনাচার ও সংস্কৃতি সবার কাছে তুলে ধরতে তৃতীয়  বছরের মতো এবারকার চমৎকার  আয়োজনে বৃটেনের বিভিন্ন শহর থেকে প্রচুর লোকের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। 

স্বাদ, সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির মিলনমেলার মূল আয়োজক ওয়েলস বাংলাদেশ ইয়ুথ সোসাইটির অন্যতম কো-অর্ডিনেটর, ব্রিটেনে বেড়ে উঠা নব প্রজন্মের সন্তান সাজ হারিছ মেলা সফল করতে সহযোগিতাকারী সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই  উৎসব শুধু খাবারের স্বাদ নয়, বরং সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধনও দৃঢ় করেছে। 

আগামী বছর ও এই আয়োজন অব্যাহত থাকবে বলে আয়োজকরা প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। 

ইউকে বিডি টিভির চেয়ারম্যান ও ওয়েলস বাংলা নিউজ এর সম্পাদক, কমিউনিটি লিডার ও বিশিষ্ট সাংবাদিক মোহাম্মদ মকিস মনসুর বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও বিশ্বের বৃহত্তম হালাল খাবার উৎসব যুব সংগঠক সাজ হারিছ এর  টিমের সাবিক ব্যাবস্থাপনায় আয়োজিত এই হালাল উৎসবটি শুধু বাংলাদেশ ও মুসলিম কমিউনিটি নয়, সকল ধর্ম ও সংস্কৃতির মানুষ হালাল খাবারের স্বাদ নেওয়া সহ সব কমিউনিটিকে একত্র হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এ যেনো এক প্রাণের বন্ধন বলে উল্লেখ করে এই সব ইভেন্টে আগামীতেও কমিউনিটির সবার সহযোগিতা প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যাক্ত করেছেন। 

উল্লেখ্য যে, বিগ -হালাল ফুড  ফেস্টিভ্যাল হলো ব্রিটেনের কার্ডিফের একটি বার্ষিক খাদ্য উৎসব, যেখানে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক হালাল রেস্তোরাঁ, ফুড ট্রাক এবং শেফদের তৈরি সুস্বাদু খাবার পরিবেশন করা হয়। এই ইভেন্টে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন সংস্কৃতির হালাল ডিশ যেমন বাংলাদেশি, ইন্ডিয়ান কুজিন, পাকিস্তানি, আরবি, তুর্কি, দক্ষিণ এশীয়, উত্তর আফ্রিকান এবং কানাডিয়ান ফিউজন  হালাল খাবারের প্রেমিকরা একত্রিত হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের রান্নার স্বাদ উপভোগ করেন।

এছাড়াও মেলায় রকমারী স্টলের পাশাপাশি পারিবারিক বন্ধনের সুযোগসহ শিশুদের জন্য গেমস ও ক্রিয়েটিভ ওয়ার্কশপ, হস্তশিল্প ও ইসলামিক ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী সহ এই ফেস্টিভ্যালের একটি অংশ দান ও স্থানীয় চ্যারিটিকে সমর্থন করে। অনেক সময় ফুড ড্রাইভ বা অনাথ আশ্রমের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা হয়। 


কমিউনিটি এর আরও খবর