ভিসা বন্ধে বাংলাদেশিদের দায়ী করে সংশোধন হওয়ার আহ্বান
প্রকাশিত :
১৫:২৮, ০৩ জুন ২০২৫
বাংলাদেশিদের জন্য বিভিন্ন দেশের ভিসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য দেশের মানুষ ও ব্যবসায়ীদেরকেই দায়ী করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। ভিসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে নিজেদের সংশোধন হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি বলেছেন, বিভিন্ন দেশের ভিসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের দেশের মানুষ ও ব্যবসায়ীরাই দায়ী। এ ক্ষেত্রে সবার আগে আমাদের ঘর সামলাতে হবে। যেভাবে নিয়ম মেনে-না মেনে লোকজন যাচ্ছে, তাতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সমসাময়িক ইস্যুতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় মার্কিনদের স্টুডেন্ট ভিসা দেওয়ার বিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই বলে মন্তব্য করেন তৌহিদ হোসেন।
ব্রিফিংয়ে ভারত দিয়ে ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ হওয়ার বিষয়টিকে শাপেবর বলে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের কারণে বাংলাদেশের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আমরা বিকল্প তৈরি করেছি, এতে আমাদের শাপেবর হয়েছে।
নির্বাচন নিয়ে বিদেশি বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর জানতে চাওয়া নিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে বিদেশি বন্ধুরা জানতে চাইলে সরকারের সিদ্ধান্তই তাদের জানানো হয়। নির্বাচন নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন আশা করা যায় বলে জানান তিনি।
ঢাকায় ভিসা কার্যক্রম ফের চালু করায় অস্ট্রেলিয়াকে ধন্যবাদ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
প্রকাশিত :
১৫:০৯, ১৭ জুন ২০২৫
ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম পুনরায় চালু করায় দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এই ধন্যবাদ জানান।
হাইকমিশনার রাইল জানান, এখন থেকে ভিসা আবেদন অনলাইনের মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে। বর্তমানে ৬৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন এবং সেখানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ হাজারের বেশি।
সাক্ষাৎকালে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, নির্বাচন, প্রশাসনিক সংস্কার ও রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন,“বিশৃঙ্খল একটি সময় পার করে আমরা সাংবিধানিক, বিচারিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি। একটি শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করছি, যাতে মসৃণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করা যায়।”
তিনি জানান, আগামী জুলাই মাসে ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন করা হবে।
জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন,“এই প্রথমবার জনগণ, বিশেষত তরুণ ভোটাররা স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে। আমি বিশ্বাস করি, এটি একটি উৎসবমুখর ও আশাব্যঞ্জক মুহূর্ত হবে।”
নির্বাচনী সহায়তার অংশ হিসেবে ইউএনডিপির মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের দক্ষতা বৃদ্ধিতে অস্ট্রেলিয়া ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার দেবে বলে জানান হাইকমিশনার রাইল।
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রসঙ্গে তিনি জানান, বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার বাণিজ্য ৫ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে পৌঁছেছে, যা গত পাঁচ বছরে গড়ে বছরে ১৬.২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাইল আরও জানান,“অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডসের মাধ্যমে তিন হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এখন অ্যালামনাই নেটওয়ার্কে যুক্ত, যারা দেশের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখছেন।”
প্রফেসর ইউনূস এই বৃত্তির সংখ্যা আরও বাড়াতে অনুরোধ জানান।
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,“বাংলাদেশে অবস্থানরত ১০ লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানবিক সহায়তা আরও বাড়ানো জরুরি।”
এর জবাবে হাইকমিশনার রাইল জানান, ২০১৭ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশে ৫৫৩.৬ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মানবিক সহায়তা দিয়েছে এবং সম্প্রতি আরও ৯.৬ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে।
তিনি বলেন,“মিয়ানমারে পরিস্থিতি অনুকূল হলে, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের পাশে থাকবে।”
বাংলাদেশে নতুন দায়িত্ব পেয়ে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে রাইল বলেন,“বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক গতিশীলতা দীর্ঘদিন ধরে আমাকে আকৃষ্ট করেছে। এখানে এসে আমি সত্যিই রোমাঞ্চিত।”
সাক্ষাতে সিনিয়র সচিব ও এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অনুবিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ নূরে আলম উপস্থিত ছিলেন।