img

শেয়ার কারসাজ: ৯ ব্যক্তি ও ৫ প্রতিষ্ঠানকে ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা জরিমানা

প্রকাশিত :  ০৫:৪২, ০৫ জুন ২০২৫

শেয়ার কারসাজ: ৯ ব্যক্তি ও ৫ প্রতিষ্ঠানকে ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা জরিমানা

পুঁজিবাজারে শেয়ার কারসাজির অভিযোগে ৯ ব্যক্তি ও ৫ প্রতিষ্ঠানকে মোট ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। মে মাসে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের দায়ে এ শাস্তি দেওয়া হয়।

ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির মূল ঘটনায় জড়িত আট ব্যক্তি ও চার প্রতিষ্ঠানের ওপরই আরোপিত হয়েছে প্রায় ২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা জরিমানা। অভিযুক্তরা একাধিক ব্রোকারেজ হাউস ও বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার) অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে সমন্বিতভাবে ট্রেড পরিচালনা করেন, যা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করে।

বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও আলোচিত সাবেক সরকারি কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের হিরো।

যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে, তারা হলেন- কানিজ আফরোজ ৫৯ লক্ষ টাকা, মো. আবুল খায়ের হিরো ৩৭ লক্ষ টাকা, কাজী সাদিয়া হাসান ১৩ লক্ষ টাকা, আবুল কালাম মাতবর ৩ লক্ষ টাকা, সাকিব আল হাসান ৩ লক্ষ টাকা, হুমায়ুন কবির ৩ লক্ষ টাকা, মো. জাহেদ কামাল ২ লক্ষ টাকা ও মো. আশফাকুজ্জামান ১ লক্ষ টাকা।

প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে-ইশাল কমিউনিকেশন লিমিটেড ৮৫ লক্ষ টাকা, মোনার্ক এক্সপ্রেস ২২ লক্ষ টাকা,মোনার্ক মার্ট ১৫ লক্ষ টাকা ও লাভা ইলেক্ট্রোডেস ইন্ডাস্ট্রিজ ৩ লক্ষ টাকা।

এছাড়াও, আল-আমিন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, সোনালী পেপার বোর্ড মিলস এবং এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসি-কে এই কারসাজির সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।

বিএসইসির তদন্তে উঠে এসেছে, অভিযুক্তরা একাধিক ব্রোকারেজ হাউস ও বেনিফিসিয়ারি ওনার (বিও) অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে সমন্বিতভাবে শেয়ার লেনদেন চালিয়ে কৃত্রিমভাবে ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের চাহিদা ও মূল্য বাড়িয়েছেন। ফলে বাজার নিম্নমুখী থাকা সত্ত্বেও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ১৬ জুলাই থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দাম ৪৩ টাকা থেকে বেড়ে ১৩২ টাকা ৫০ পয়সা হয়েছে, যা ১৯৪ শতাংশ বৃদ্ধি— অথচ এই সময়ে কোম্পানির পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর তথ্য বা অগ্রগতি জানানো হয়নি। বিএসইসি একে আইন লঙ্ঘন ও বাজার আস্থার জন্য ক্ষতিকর বলে অভিহিত করেছে।

অর্থনীতি এর আরও খবর

img

শেয়ারবাজারে কারসাজি: সাকিবসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশিত :  ১৪:৫০, ১৭ জুন ২০২৫

শেয়ারবাজার থেকে শতকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

মামলার বাদি দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন। 

এ মামলার প্রধান আসামি সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক ও শেয়ার বাজারের আলোচিত ব্যক্তি মো. আবুল খায়ের (হিরু)। দ্বিতীয় আসামি সাকিব আল হাসান। অন্যান্য আসামিরা হলেন- কাজি সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজি ফুয়াদ হাসান, কাজি ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ূন কবির ও তানভীর নিজাম।

দুদক জানায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দ্রুত আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে শেয়ারবাজারে প্রচলিত আইন ও বিধি (সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ১৭ ধারা) লঙ্ঘন করেছেন।

তারা নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিও একাউন্টে অবৈধভাবে সিরিজ ট্রানজেকশন,  প্রতারণামূলক একটিভ ট্রাডিং, গেম্বলিং, ও স্পেকুলেশন-এর মাধ্যমে শেয়ারবাজারে কৃত্রিমভাবে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ারের দাম বৃদ্ধি করে বাজারে কারসাজি করেন। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা প্রতারিত হয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হারান।

এই পদ্ধতিতে ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা আত্মসাৎ করা হয়, যা ‘অপরাধলব্ধ অর্থ’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত। এর মধ্যে আবুল খায়ের (হিরু) তার স্ত্রী কাজি সাদিয়া হাসানের সহায়তায় ২৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার ১৮৫ টাকার উৎস গোপন করে বিভিন্ন খাতে স্থানান্তর করেন।

এছাড়া তার নামে পরিচালিত ১৭টি ব্যাংক একাউন্টে মোট ৫৪২ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ টাকার অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

দুদক জানায়, আসামি মো. আবুল খায়ের (হিরু) কর্তৃক শেয়ার বাজারে কারসাজিকৃত প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স লি., ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লি. এবং সোনালী পেপারস লি.-এর শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করেন। এতে সাকিব মার্কেট ম্যানুপুলেশনে সরাসরি সহায়তা করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ২ কোটি ৯৫ লাখ ২ হাজার ৯১৫ টাকা রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইনের নামে শেয়ার বাজার থেকে আত্মসাৎ করেন।

দুদক জানায়, শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হওয়ায় কমিশনের অনুমোদনক্রমে আসামিদের বিরুদ্ধে  ২০১২ এর ৪ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/১২০(বি)/১০৯ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

দুদক জানিয়েছে, তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।