img

শর্ত পূরণে ৬০ কোম্পানির কাছে রোডম্যাপ চেয়েছে বিএসইসি

প্রকাশিত :  ১০:৩০, ১৬ জুন ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১১:০৭, ১৬ জুন ২০২৫

শর্ত পূরণে ৬০ কোম্পানির কাছে রোডম্যাপ চেয়েছে বিএসইসি

দেশের পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আবারও ৬০টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির কাছে তাদের ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধনের শর্ত পূরণের রোডম্যাপ চেয়েছে।

স্টক এক্সচেঞ্জের মূল বোর্ডে তালিকাভুক্ত থাকার জন্য এই শর্ত পূরণ অপরিহার্য উল্লেখ করে ঈদুল আজহার ছুটির আগে বিএসইসি কোম্পানিগুলোকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) তালিকাভুক্তি বিধিমালা অনুযায়ী, মূল বোর্ডে তালিকাভুক্ত থাকতে হলে একটি কোম্পানির ন্যূনতম ৩০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন থাকা আবশ্যক। নিয়ন্ত্রক সংস্থা এই শর্ত পূরণে ব্যর্থতাকে সিকিউরিটিজ আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করছে।

এর আগেও এই কোম্পানিগুলোকে তাদের পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল বিএসইসি। কিন্তু বেশিরভাগই তা মানতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে এবার তালিকাভুক্তির শর্ত পূরণে কঠোর অবস্থান নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যারা শর্ত পূরণে ব্যর্থ হবে, তাদের মূল বোর্ড থেকে এসএমই (SME) বা অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড (ATB) প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তরিত করা হতে পারে বলে জানা গেছে।

বিষয়টি নিয়ে বিএসইসির সর্বশেষ অবস্থান জানতে চাইলে কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, " আমরা শেয়ারবাজারে স্বল্প পরিশোধিত মূলধন নিয়ে কোনো কোম্পানি দেখতে চাই না। কারণ এটি বাজারের সুনাম ক্ষুণ্ন করে।"

ওই কর্মকর্তা আরও উল্লেখ করেন, স্বল্প পরিশোধিত মূলধনের স্টকগুলো অত্যন্ত অস্থির প্রকৃতির হয় এবং কিছু অসাধু বিনিয়োগকারী দ্বারা এগুলো সহজেই কারসাজির শিকার হয়। এটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়। কারণ প্রায়শই স্বল্প মূলধনের শেয়ারগুলোতে বিনিয়োগ করে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীই ক্ষতির শিকার হন, যদিও কিছু ক্ষেত্রে স্বল্প মেয়াদে লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকে।

কমিশন স্পষ্ট করে বলেছে, স্টক ডিভিডেন্ড ইস্যু করা মূলধন পূরণের একটি বৈধ উপায় নয়, কারণ এটি কেবল শেয়ারের সংখ্যা বাড়ায় কিন্তু প্রকৃত মূলধন বৃদ্ধি করে না। বিএসইসি চায় কোম্পানিগুলো তাদের আর্থিক ভিত্তি শক্তিশালী করার জন্য প্রকৃত তহবিল সংগ্রহ করুক।

এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ৬৪টি কোম্পানিকে তাদের ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধনের শর্ত পূরণের জন্য পরিকল্পনা জমা দিতে বলেছিল, যাতে তারা স্টক এক্সচেঞ্জের মূল বোর্ডে তালিকাভুক্ত থাকতে পারে। ওই বছর কমিশন একটি কমিটি গঠন করে এই ফার্মগুলোর সামগ্রিক অবস্থা যাচাই করতে এবং স্বল্প পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিগুলোর আর্থিক কর্মক্ষমতা উন্নত করার একটি প্রক্রিয়া খুঁজতে বলেছিল। কোম্পানিগুলোকে চিঠি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাদের পরিকল্পনা প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিতে বলা হয়েছিল।

বর্তমানে এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১১টি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৫ কোটি টাকার নিচে, ১৫টি কোম্পানির ১০ কোটি টাকার নিচে, ২১টি কোম্পানির ২০ কোটি টাকার নিচে এবং বাকি কোম্পানিগুলোর ৩০ কোটি টাকার নিচে মূলধন রয়েছে।

এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে কিছু ভালো পারফর্ম করলেও বেশ কয়েকটি লোকসানে রয়েছে এবং কয়েকটি তাদের কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। এই চ্যালেঞ্জগুলো সত্ত্বেও কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম কোনো বৈধ তথ্য বা যৌক্তিক কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে, যা বিনিয়োগকারী এবং বাজার বিশ্লেষকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে অনেক কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে তেমন আগ্রহ দেখান না। কারণ তারা এই স্বল্প মূলধনের পরিস্থিতিকে এক ধরনের সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। বিএসইসির এই নতুন পদক্ষেপ বাজারের শৃঙ্খলা ফেরাতে কতটা কার্যকর হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

অর্থনীতি এর আরও খবর

img

৫ আগস্ট সারাদেশে বন্ধ থাকবে ব্যাংক

প্রকাশিত :  ১৪:৩২, ১৭ জুলাই ২০২৫

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে আগামী ৫ আগস্ট সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এ কারণে সেদিন সারা দেশের তফসিলি ব্যাংক বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রবল গণআন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। দিনটিকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান দিবস’ ও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট সরকারি ছুটির দিন হিসেবে দেশের সব তফশিলি ব্যাংক বন্ধ থাকবে। অতএব, সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে আগেভাগে প্রস্তুতি নিতে এবং আর্থিক লেনদেন পরিকল্পনা করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রবল গণআন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। দিনটিকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান দিবস’ ও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট সরকারি ছুটির দিন হিসেবে দেশের সব তফশিলি ব্যাংক বন্ধ থাকবে। অতএব, সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে আগেভাগে প্রস্তুতি নিতে এবং আর্থিক লেনদেন পরিকল্পনা করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া ছাত্রদের আন্দোলন শেষমেশ সরকার উৎখাতের ইতিহাস গড়ে। ৩৬ দিনের সেই আন্দোলনে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন সাড়ে ১৫ বছর দোর্দণ্ড প্রতাপে দেশ চালিয়ে আসা শেখ হাসিনা।

শুরুতে এ আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পরে তা দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

সরকারের পক্ষে জবাব ছিল- গুলি, টিয়ারশেল আর লাঠি; এককথায় কেবলই বলপ্রয়োগ। প্রথমে ফেসবুক, পরে ইন্টারনেট বন্ধ করে পরিস্থিতি সামাল দিতে চায় সরকার। তাতে হিতে বিপরীত হয়।

আন্দোলনে রক্তপাত শুরু হওয়ার ২০ দিনের মধ্যেই লাশ আর রক্তের বোঝা মাথায় নিয়ে পতন হয় দেড় দশকের আওয়ামী লীগ সরকারের। পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা আর তার অমাত্যরা।