img

লন্ডনে স্বাস্থ্যকর স্কুল অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তিতে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে টাওয়ার হ্যামলেটস

প্রকাশিত :  ১৩:০৩, ১৭ জুন ২০২৫

লন্ডনে স্বাস্থ্যকর স্কুল অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তিতে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে টাওয়ার হ্যামলেটস

লন্ডনের মেয়রের \'হেলদি স্কুলস\' কর্মসূচিতে টাওয়ার হ্যামলেটস সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। ব্রোঞ্জ, সিলভার ও গোল্ড পুরস্কারের ক্ষেত্রে অন্যান্য অঞ্চলকে পেছনে ফেলে সর্বাধিক স্কুল পুরস্কৃত হয়েছে এই বরোতে।

স্কুলে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতায় শিক্ষকদের অক্লান্ত প্রচেষ্টাকে সম্মান জানাতে এবং এই অর্জনকে উদযাপন করতে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল টাউন হলে একটি ‘হেলদি লাইভস সেলিব্রেশন’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বারার ২৩০—এরও বেশি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

লন্ডনের ডেপুটি মেয়র জোয়ান ম্যাককার্টনি এবং টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র এবং এডুকেশন, ইয়ূথ এন্ড লাইফলং লার্নিং বিষয়ক লিড মেম্বার কাউন্সিলর মাইয়ূম তালুকদার স্কুল গুলোর হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে ‘হেলদি স্কুলস লন্ডন’ পুরস্কার, ‘অ্যাজমা অ্যান্ড অ্যালার্জি ফ্রেন্ডলি স্কুল’ স্বীকৃতি এবং ‘ফ্যান্টাস্টিক ফুড ইন স্কুলস’ প্রশংসাপত্র প্রদান করা হয়। রয়্যাল ব্যালে, ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড ফাউন্ডেশন এবং স্থানীয় খামারের প্রাণীর উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।

এডুকেশন, ইয়ূথ এন্ড লাইফলং লার্নিং বিষয়ক লিড মেম্বার কাউন্সিলর মাইয়ূম তালুকদার বলেন, “স্বাস্থ্যকর স্কুল অর্জনে টাওয়ার হ্যামলেটসের শীর্ষ অবস্থান আমাদের জন্য গর্বের। এটি আমাদের স্কুল গুলোর শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিফলন। আজকের এই উদযাপন তাদের কঠোর পরিশ্রমকে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি আমাদের তরুণ প্রজন্মকে জীবনের সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দেবে।”

লন্ডনের ডেপুটি মেয়র জোয়ান ম্যাককার্টনি বলেন, “টাওয়ার হ্যামলেটসের স্কুলগুলো স্বাস্থ্য ও সুস্থতায় যে নেতৃত্ব দিচ্ছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এই সাফল্য কমিউনিটির সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। লন্ডন মেয়রের হেলদি স্কুলস প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা স্কুলগুলোকে এমন পরিবেশ গড়ে তুলতে সাহায্য করছি যেখানে প্রতিটি শিশু স্বাস্থ্যকর ভাবে বেড়ে উঠতে পারে।”

কাউন্সিলের \'হেলদি লাইভস টিম\' স্কুল গুলোর সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রিক উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহায়তা করে। প্রশিক্ষণ, সম্পদ ও বিশেষজ্ঞ পরামর্শের মাধ্যমে তারা স্কুলগুলোতে সুস্থতার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখছে।

কমিউনিটি এর আরও খবর

img

মিথ্যা নবুওতের দাবিদার ভন্ডদের ঈমান বিধ্বংসী ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা উম্মাহর সম্মিলিত দায়িত্ব

প্রকাশিত :  ১৭:৩০, ১৭ জুলাই ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৭:৩৫, ১৭ জুলাই ২০২৫

লন্ডনে অনুষ্ঠিত খতমে নবুওত সম্মেলনে নেতৃবৃন্দের বক্তব্য

গত ১৩ জুলাই রবিবার লন্ডনের সর্বদলীয় সংগঠন মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওত এর উদ্যোগে বিরাট খতমে নবুওত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পূর্ব লন্ডনের ফোর্ড স্কয়ার মসজিদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ মহান সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ভারত থেকে আগত মেহমান, হযরত হুসাইন আহমদ মাদানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির দৌহিত্র, আওলাদে রাসূল আল্লামা সৈয়দ আশহাদ রশিদী। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওত লন্ডন এর সভাপতি মাওলানা গোলাম কিবরিয়া। সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা মুফতি আবদুল মুনতাকিম। সভায় লন্ডনের সর্বদলীয় উলামায়ে কেরাম ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ গুরুত্ব সহকারে উপস্থিত হন এবং মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওতের ইতিবাচক কার্যক্রম ও মিথ্যা নবুওতের দাবিদার ভন্ডদের ঈমান বিধ্বংসী ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায় বিভিন্ন প্রতিবাদ- আন্দোলন কর্মসূচি আরো গতিশীল করার জন্য তাওহিদী জনতার প্রতি জোর আহ্বান জানান। সভায় খতমে নবুওত এর সর্ববাদী সম্মত আকিদা বিশ্বাসের অপরিসীম গুরুত্ব ও কাদিয়ানীদের ঈমান বিধ্বংসী ষড়যন্ত্রের মুখোশ উন্মোচন করে সারগর্ভ আলোচনা পেশ করেন কাউন্সিল অফ মস্ক টাওয়ার হামল্যাটস এর চেয়ারম্যান মাওলানা হাফিজ শামছুল হক, হেফাজতে ইসলাম ইউকের সভাপতি শায়খুল হাদীস মুফতি আবদুর রহমান মনোহরপূরী, খতমে নবুওত লন্ডন এর সহ-সভাপতি মাওলানা ডক্টর শুয়াইব আহমদ, সহ সভাপতি শায়খ মাওলানা ইমদাদুর রাহমান আলমাদানী, বিশিষ্ট আলেম মাওলানা ফয়েজ আহমদ প্রমুখ। সভায় কমিউনিটি নেতা, জনাব কে এম আবু তাহের চৌধুরী, মাওলানা সৈয়দ আশরাফ আলী, মাওলানা শাহনূর মিয়া, আলহাজ্ব মাওলানা আতাউর রহমান, মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ, টিভি ব্যক্তিত্ব মুফতি সালেহ আহমদ,  হাফিজ হুসাইন আহমদ বিশ্বনাথীও মাওলানা সৈয়দ নাঈম আহমদ সহ প্রচুর সংখ্যক নেতৃস্থানীয় উলামায়ে কেরাম ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় বক্তারা বলেন 


কাদিয়ানী সম্প্রদায় খতমে নবুওতের অকাট্য ও সুস্পষ্ট আকীদাকে শুধু অস্বীকারই করে না, গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে ‘নবী’ বলেও বিশ্বাস করে। (নাউযুবিল্লাহ) একারণে তারা নিজেদের পরিচয়ও দেয় ‘আহমদিয়া’ বলে। বলাবাহুল্য, এই এক কুফরই এদের কাফির হওয়ার জন্য যথেষ্ট। এছাড়াও অন্যান্য কুফরীর কথা ও তাদের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। একারণে মুসলিম উম্মাহর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত এই যে, কাদিয়ানী মতবাদ সম্পূর্ণ কুফরী মতবাদ এবং এই মতবাদে বিশ্বাসীরা নিঃসন্দেহে অমুসলিম, কাফির।

বক্তাগন আরো বলেন 

খতমে নবুওতের মতো অকাট্য আকীদা অস্বীকার করার পর, নবুওতে মুহাম্মাদীর সমান্তরালে নতুন ‘নবুওতে’ বিশ্বাসের পরও যারা এদের অমুসলিম পরিচয়ে সংশয় পোষণ করেন তারা হয় যিন্দীক-বেদীন কিংবা জাহিল-মূর্খ। এদেরও কর্তব্য নতুন করে আল্লাহর শেষ রাসূলের উপর ঈমানকে নবায়ন করা। বক্তাগন বিশ্ব মুসলিমের মৌলিক মানবাধিকার ও ঈমানী সার্বভৌমত্ব রক্ষার অপরিহার্য দাবি উত্থাপন করে তাঁদের সুচিন্তিত আলোচনায় উদাহরণ দিয়ে বলেন যদি কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বাংলাদেশের অখন্ডতাকে অস্বীকার করে এবং বাংলাদেশের সীমানার ভিতরে আরেক ‘বাংলাদেশে’র গোড়াপত্তন করে আর ঐ কল্পিত রাষ্ট্রের জন্য বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ব্যবহার করে, আলাদা নির্বাহী, প্রশাসন ও বিচারবিভাগ ঘোষণা করে তাহলে এই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিষয়ে দেশপ্রেমিক জনগণ, সেনাবাহিনী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের অবস্থান কী হবে বা হওয়া উচিৎ? এরপর যদি ঐ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর উপর এদেশের কোনো জাতীয় দৈনিকে ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয় এবং তাদের ‘সংস্কৃতি’ ও ‘রাজনৈতিক পরিচিতি’ রক্ষার আবদার জানিয়ে মায়াকান্না করা হয় তাহলে এদের সম্পর্কে দেশপ্রেমিক জনগণের প্রতিক্রিয়া কী হবে?  এরা কি চিরদিনের জন্য গাদ্দার ও মুনাফিক বলে চিহ্নিত হবে না?

একই কথা কাদিয়ানী সম্প্রদায় এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের সম্পর্কেও প্রযোজ্য। এ সম্প্রদায় শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওতের সমান্তরালে আলাদা নবুওতের মিথ্যা দাবি করেও এবং সে দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেও নিজেদেরকে মুসলিম উম্মাহর অন্তর্ভুক্ত বলে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্পূর্ণ আলাদা ও বিচ্ছিন্ন ধর্মমতে বিশ্বাসী হয়েও ইসলামের পরিচয় ও পরিভাষা ব্যবহার করে চলেছে। আর মুসলিমসমাজে ঘাপটি মেরে থাকা মুনাফিক শ্রেণী বিভিন্ন ভাবে এদেরকে প্রচারের আলোয় নিয়ে আসছে এবং এদের পক্ষে জনমত সৃষ্টির অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসলামের সর্বজনীনতা ও সর্বকালীনতাকে অস্বীকারকারী এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সম্প্রদায় সম্পর্কে এরপরও কি কোনো মুসলিম দ্বিধাগ্রস্ত থাকতে পারে? আর যেসব মুলহিদ-মুনাফিক এই বিচ্ছিন্নতাবাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে থাকে, তাদের গোত্র-পরিচয় সম্পর্কেও কি কোনো মুমিনের সংশয় থাকতে পারে? বক্তাগন দায়িত্বশীল সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন 


এখন সময়ের দাবি, মসজিদে মসজিদে কাদিয়ানী মতবাদের উপর ব্যাপক আলোচনা শুরু হওয়া। কুরআন-সুন্নাহর আলোকে খতমে নবুওতের অকাট্য আকীদা এবং নবী-যুগ থেকে এ পর্যন্ত নবুওতের মিথ্যা দাবিদারদের ইতিহাস ও পরিণাম সম্পর্কে প্রমাণিক আলোচনা আরম্ভ করা। আমাদের মাসিক ও পাক্ষিক সাময়িকীগুলোতে এবং দৈনিক পত্রিকাগুলোর ইসলামী পাতাগুলোতেও এ বিষয়ে নিয়মিত আয়োজন থাকা উচিত। মনে রাখতে হবে, মিথ্যাচারের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে  প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে জঘন্যতম কাদিয়ানী ফেতনার অপতৎপরতা যে চলতে থাকবে তা বলাই বাহুল্য। গোটা দেশের আলিম-উলামা, ইমাম-খতীব এবং ইসলাম প্রিয় লেখক-সাংবাদিকের এ বিষয়ে একযোগে আলোচনা ও প্রতিরোধ শুরু করা এখন সময়ের দাবি। 

সভায় সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা গোলাম কিবরিয়া উপস্থিত সকলের প্রতি শুকরিয়া আদায় করেন এবং আগামী কর্মসূচি গুলোতে সকলের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি কামনা করেন। সভা শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন প্রধান অতিথি হযরত মাওলানা সৈয়দ আশহাদ রশিদী।


কমিউনিটি এর আরও খবর