img

ড. মুরসির শাহাদাত বরণ ও মুসলিম বিশ্বে ফেরাউনি শাসন!

প্রকাশিত :  ০৯:৩৩, ১৮ জুন ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট: ০৯:৫৫, ১৮ জুন ২০১৯

ড. মুরসির শাহাদাত বরণ ও মুসলিম বিশ্বে ফেরাউনি শাসন!
অলিউল্লাহ নোমান :

বিকালে মানবজমিন অনলাইনে একটি নিউজের শিরোনাম দেখে কিছুক্ষনের জন্য থমকে গিয়েছিলাম। শিরোনমাটি-আদালতে মোয়াজ্জেমের ৩০ মিনিট, ‘গণপিটুনির ভয়ে পলাতক ছিলেন’। ফেনি সোনাগাজি থানার সাবেক ওসিকে গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করা হয়েছিল। আত্মসমর্পন না করে পালিয়ে ছিলেন কেন? বিচারকের এ প্রশ্নের জবাবে তাঁর আইনজীবী জানালেন, গণপিটুনির ভয়ে আত্মগোপনে ছিলেন। গতকাল এ নিউজটি দেখার পর ভাবছিলাম বাসায় ফিরে এনিয়ে কিছু লিখব। এ আমলেই ওসিদের গণপিটুনির ভয়ে পালিয়ে আত্মগোপনে থাকতে হয়! সরকার পরিবর্তন হলে কি ঘটবে তাদের ভাগ্যে! এমন একটি বার্তাও রয়েছে এ নিউজে! 



কিন্তু, রাতে বাসায় ফিরে কম্পিউটারে ইন্টারনেট অন করেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। গণতন্ত্রের প্রতীক ড. মুরসি আদালতে মামলার শুনানীর সময় ইন্তেকাল করেছেন। এ খবরটি দেখার পর ওসির গণপিটুনির ভয়ের কথা মাথা থেকে সরে গেছে। তখনই ভাবছিলাম ড. মুরসিকে নিয়ে একটু লিখি। কিন্তু এতই খারাপ লাগছিল, মনে হল এখন লেখা যাবে না। তাই ঘুমাতে গেলাম। রাতে ঘুমটাও ভাল হয়নি। ভোরেই আবার কম্পিউটার নিয়ে বসলাম। ফেইসবুকে ঢুকে মনে করেছিলাম খেলায় বাংলাদেশের বিজয়ে ভাসবে ফেইসবুক। না, তেমন কিছুই দেখতে পাইনি। মুরসিময় ফেইসবুক। তিনি বাংলাদেশের মানুষের কাছেও কতটা জনপ্রিয় ছিলেন এতেই প্রমান করে! শুধু মিশরে নয়। সারা দুনিয়ায় মুরসি হলেন, গণতন্ত্রের প্রতীক। দেশে দেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকারীদের প্রতীক হলেন তিনি। 



ফেরউনের দেশের ইতিহাসে তিনি ছিলেন প্রথমবারের মত জনগনের ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। হাজারো বছরের ইতিহাসে প্রাচীন মানব সভ্যতার এ দেশটিতে আগে কখনো এভাবে কেউ নির্বাচিত হননি। বলতে পারেন এটা ত মূসা আ:-এরও দেশ তাইলে! হ্যা। মূসা আ:-এরও দেশ। কিন্তু প্রাচীন মানব সভ্যতার দেশ মিশর যে আবার ফেরাউনের চরিত্রে ফিরে এসেছে, ড. মুরসির শাহাদাতের মাধ্যমেই প্রমাণিত। তাই বলছি, ফেরাউনের দেশ মিশর। 



পশ্চিমা গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালারাই তাঁকে ক্ষমতায় থাকতে দেয়নি। ক্ষমতা থেকে সরাতে ফেরাউনের উত্তরসূরিদের সার্বিক সহযোগিতা করেছে গণতন্ত্র আর মানবাধিকারের কথিত ফেরিওয়ালারাই। একজন গণতান্ত্রিক নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। তাকে সরিয়ে সামরিক এক নায়ক সিসিকে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলে সহযোগি তারাই। পশ্চিমা গণতন্ত্র আর মানাবধিকারের কথিত ফেরিওয়ালাই মধ্যপ্রাচ্যে একনায়ক রাজতন্ত্র টিকিয়ে রাখতেও সহযোগিতা করছে। মুরসির বিজয়ের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের রাজতন্ত্রের ভিতে কাপুনি ধরেছিল। এই বুঝি আরব বসন্তের ঢেউ এসে ধাক্কা দিচ্ছে! এমন আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল মধ্যপ্রাচ্যের লুটেরা রাজতন্ত্রে। জনগনের রায়ে ক্ষমতা গ্রহনকারী প্রেসিডেন্টকে তারা সহ্য করতে পারেনি। এজন্য সবাই মিলে ফন্দি আটে কিভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ড. মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করা যায়। খুজে বের করা হয় ফেরাউনের উত্তরসূরিদের। আর এটা তালাশ করতে সময় লেগেছে তাদের মাত্র এক বছর। মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুতই শুধু করা হয়নি। বানোয়াট মামলা দিয়ে নির্জন করাগারে রাখা হয় তাঁকে। ফেরাউনি আদালতে বিচরের নামে তাঁকে কারাদন্ড দেয়া হয়। 



একজন কোরআনে হাফেজ, উচ্চ শিক্ষিত প্রেসিডেন্ট মুরসি জালিমের সাথে আপস করেননি। লড়াই করেছেন, শেষ নি:শ্বাস পর্যন্ত। আদালতের কাটগড়ায় দাড়িয়েও বলেছেন, আমি-ই মিশনের জনগনের ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। ফেরাউনি আদালতে জালেমদের বিচারের প্রতিবাদের জন্য হলেও আল্লাহর দরবারে তিনি শাহাদাতের মর্যাদা প্রাপ্য। আল্লাহ তাঁর এলড়াইকে কবুল করুন। তাঁকে শাহাদাতের মর্যাদায় জান্নাতের মেহমান হিসাবে গ্রহন করুন। 



সবশেষে বলতে হয়, এখনো আমাদের দেশের যারা পশ্চিমাদের পেছনে দৌড়াচ্ছেন গণতন্ত্র আর মানবাধিকারের কথা বলে, মুরসির এ ঘটনা থেকে একটু হলেও শিক্ষা নেয়া উচিত। যেসব দেশে মুসলমানরা সংখ্যাগরীষ্ঠ সেখানে পশ্চিমারা গণতন্ত্র চায় না। মানবাধিকারের কথা সেখানে মানায় না। সংখ্যাগরীষ্ঠ মুসলমানদের দেশে তারা শাসক হিসাবে ফেরাউন খুজে। সুতরাং গণতন্ত্র আর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য পশ্চিমাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে লাভ হবে না। যারা বলেন, বাংলাদেশে ফেরাউনি সরকারকে পশ্চিমারা বেশি দিন মেনে নেবে না। এরকম অগণতান্ত্রিক একটা সরকারকে কতদিন তারা মেনে নেবেন। যারা এমনটা মনে করেন, তাদের বার্তা দিয়ে গেছেন ড. মুরসি।

মতামত এর আরও খবর

img

গাজা যুদ্ধ বন্ধে বাইডেন কেন এতটা মরিয়া

প্রকাশিত :  ১১:৪১, ১২ মে ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১১:৪৮, ১২ মে ২০২৪

জনাথন ফ্রিডল্যান্ড

দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত হবেন কি না তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্বেগ একেবারে প্রান্তে এসে পৌঁছেছে। জো বাইডেনের পরামর্শ বারবার উপেক্ষা করে আসছিলেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এই উপেক্ষার মূল্য কী হতে পারে, এই সপ্তাহে ইসরায়েল সেটা দেখতে পেল।

ইসরায়েলের ৩ হাজার ৫০০ বোমার চালান আটকে দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। এই অস্ত্র ইসরায়েল গাজার দক্ষিণের শহর রাফা আক্রমণে ব্যবহার করবে, সেই বিবেচনায় অস্ত্রের চালানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাফায় এখন ১০ লাখের বেশি শরণার্থীর আশ্রয়শিবির।

ইসরায়েলের প্রতি জো বাইডেন তাঁর ‘লৌহদৃঢ়’ সমর্থন থেকে সরে আসছেন না। কিন্তু ইসরায়েল রাফা হামলার জন্য যে হুমকি দিয়ে চলেছে, সেটা সফল করতে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করবেন না। সিএনএনকে বাইডেন বলেছেন, ‘ইসরায়েলের নিরাপত্তা দেওয়া থেকে আমরা সরে আসছি না। অন্যখানে যুদ্ধ করার সক্ষমতা তৈরির পথ থেকে সরে আসছি আমরা।’

ইসরায়েলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আইজাক রবিন বলতেন, তাঁর দেশের ১ নম্বর কৌশলগত সম্পদ এই সব অস্ত্র, এমনকি পারমাণবিক অস্ত্র নয়; বরং ওয়াশিংটনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক। দশকের পর দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় অস্ত্রের জোগানদাতা ও কূটনৈতিক অভিভাবক। 

কিন্তু মাত্র ছয় সপ্তাহের ব্যবধানে ওয়াশিংটন এমন দুটি পদক্ষেপ নিল, যা পুরোপুরি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গেল। গত মার্চ মাসে নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভেটো দেওয়া থেকে বিরত থাকে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে ইসরায়েল প্রস্তাবটি আটকে দিতে চাইলেও ব্যর্থ হয়। আর এখন তো ওয়াশিংটন অস্ত্রের চালান আটকে দিল।

এর থেকেও বড় বিষয় হলো, এই সিদ্ধান্তগুলো এমন একজন রাজনীতিবিদ নিয়েছেন, যিনি ব্যক্তিগতভাবে ইসরায়েলের খুব নিবেদিতপ্রাণ সমর্থক। বাইডেন সেই যুগের একজন ডেমোক্র্যাট, যখন দুই সহস্রাব্দের নির্বাসন ও শাস্তির পর মধ্যপ্রাচ্যে ইহুদিদের আদি বাড়ি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি গতি পেতে শুরু করেছে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের উদারপন্থীদের চোখ তখন রহস্যজনকভাবে বন্ধ ছিল।  

গোল্ডা মেয়ার থেকে শুরু করে ইসরায়েলের প্রত্যেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাইডেন দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে। ইসরায়েলের প্রতি বাইডেনের টান বাড়ার ক্ষেত্রে এর একটার ভূমিকা আছে। পূর্বতন প্রেসিডেন্টদের মতো বাইডেনের ইসরায়েলের প্রতি ভ্রাতৃত্ববোধ শুধু নির্বাচনী হিসাব-নিকাশের বিষয় নয়।  

গাজা নিয়ে কোনো চুক্তি হচ্ছে না। কেননা, নেতানিয়াহু কিংবা সিনাওয়ারা কেউই বিশ্বাস করেন না, চুক্তি করলে তাঁদের স্বার্থ রক্ষিত হয়। যেমনটা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা অ্যারন ডেভিড মিলার বলেছেন, ‘এই সংঘাত বন্ধে একটি পক্ষেরই কেবল সত্যিকারের তাড়া আছে, সেই পক্ষটি হলেন জো বাইডেন।’

অন্যদিকে ১৯৮০-এর দশকে নেতানিয়াহু প্রথম আলোচনার পাদপ্রদীপে উঠে আসেন। তিনি এমন একজন কূটনীতিক, যিনি আমেরিকানদের সঙ্গে সাবলীলভাবে কথা বলতেন। সে সময় থেকেই তিনি নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে দাঁড় করান। ইসরায়েলের একজন হবু নেতার জন্য এই দক্ষতা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। 

কয়েক দশক ধরে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাঁর ভোটারদের এই বার্তা দিয়ে আসছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যকার সব ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিনিই একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তি।

কিন্তু বাস্তব অবস্থাটা এখন কী দাঁড়াল?  চার দশকের বেশি সময়ের মধ্যে বাইডেনই প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা দেওয়া বন্ধ করলেন। (১৯৮২ সালে ইসরায়েলের লেবানন অভিযানের সময় রোনাল্ড রিগ্যান যুদ্ধবিমান দিতে বিলম্ব করেছিলেন।) বাইডেন কেন এটা করলেন? কারণ, নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের একটি অংশের জনগোষ্ঠীর মধ্যে এমন তিক্ততা তৈরি করেছেন, যেটা আগে দেখা যায়নি।

ইসরায়েলের প্রতি যে যুক্তরাষ্ট্রের সমাজের নিরেট সমর্থন, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেভাবে ছাত্র আন্দোলন আছড়ে পড়েছে, সেটা বিস্ময়করই। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা গ্যালাপের মার্চ মাসের জরিপ বলছে, ৫১ শতাংশ ইসরায়েলের পক্ষে সমর্থন দিয়েছে, ২৭ শতাংশ সমর্থন দিয়েছে ফিলিস্তিনের পক্ষে। কিন্তু ডেমোক্র্যাট ও তরুণ জনগোষ্ঠী—দুই ক্ষেত্রেই ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সমর্থন অনেকটাই বেড়েছে।

জরিপের এই তথ্য বাইডেন ও তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা দলকে চিন্তার মধ্যে ফেলেছে। এই অংশের দ্ব্যর্থহীন সমর্থনই ২০২০ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করতে ভূমিকা রেখেছিল। গাজাবাসীর দুর্ভোগ সেই ভোটারদের সমর্থন অনিশ্চিত করে তুলেছে। হোয়াইট হাউস নেতানিয়াহুর কাছে পরিকল্পনা চেয়েছিলেন, বেসামরিক জনসাধারণকে হতাহত না করে কীভাবে রাফায় অভিযান করতে পারে ইসরায়েল। 

কিন্তু নেতানিয়াহু সেই পরিকল্পনা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সেই কারণে ইসরায়েলকে থামানোর জন্য অস্ত্রের চালান আটকে দেওয়ার সরাসরি পথ বেছে নিয়েছে ওয়াশিংটন।

রাফা বাইডেনের জন্য শক্তি পরীক্ষার জায়গাও হয়ে উঠেছে। বাইডেন রাফাকে বিপদরেখা হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। নেতানিয়াহু যদি সেই বিপদরেখা অতিক্রম করেন, তাহলে বাইডেন দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত হবেন।

কিন্তু নেতানিয়াহু এখন পর্যন্ত রণেভঙ্গ দিতে অস্বীকার করেছেন। ইসরায়েলের স্বাধীনতা আন্দোলনকে সামনে রেখে জনগণের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ছাড়া আমরা একাই লড়ে যাব। প্রয়োজনে আমরা আমাদের নখ দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাব।’ 

নেতানিয়াহু চার্চিলের মতো আওয়াজ তুলতে চাইছেন। কিন্তু তাঁর কথাগুলো দুর্বলের কণ্ঠস্বর, সবলের নয়। ওয়াশিংটন চায়, নেতানিয়াহু যেন রাফা অভিযান থেকে সরে আসেন। কিন্তু জোট সরকারের অতি ডানপন্থী মিত্ররা তাঁকে আরও কঠোর হতে বলছেন, রাফা অভিযানের মাধ্যমে হামাসের বিরুদ্ধে পুরোপুরি বিজয়ের জন্য বলছেন।

এই নিরানন্দ নাটকে বাইডেন ও নেতানিয়াহুই কেবল কুশীলব নন; হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনাওয়ারেরও নিজস্ব হিসাব-নিকাশ আছে, নেতা হিসেবে টিকে থাকার সংকল্প রয়েছে। খুব ঘনিষ্ঠভাবে যাঁরা সিনাওয়ারকেও পাঠ করেছেন তাঁরা বিশ্বাস করেন, নির্দোষ মানুষের জীবন রক্ষা করা তাঁর অগ্রাধিকার নয়; বরং যত বেশি গাজাবাসী নিহত হবেন, আন্তর্জাতিক পরিসরে তাঁর শত্রু ইসরায়েলে অবস্থান ততই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সেই পরিস্থিতি তাঁকে বিজয়ী দাবি করতে সহায়তা করবে। সম্প্রতি হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নেওয়ার ঘোষণার পেছনে সিনাওয়ারের এই ভাবনায় কাজ করেছে। 

সিনাওয়ারা সাময়িক কোনো যুদ্ধবিরতি (তাতে অনেক মানুষের প্রাণরক্ষা হয়, দুর্ভোগ কমে) চান না, তিনি চান স্থায়ী যুদ্ধবিরতি। আর তার জন্য সিনাওয়ারা অপেক্ষা করতেও রাজি।

গাজা নিয়ে কোনো চুক্তি হচ্ছে না। কেননা, নেতানিয়াহু কিংবা সিনাওয়ারা কেউই বিশ্বাস করেন না, চুক্তি করলে তাঁদের স্বার্থ রক্ষিত হয়। যেমনটা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা অ্যারন ডেভিড মিলার বলেছেন, ‘এই সংঘাত বন্ধে একটি পক্ষেরই কেবল সত্যিকারের তাড়া আছে, সেই পক্ষটি হলেন জো বাইডেন।’


জনাথন ফ্রিডল্যান্ড, ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানের খ্যাতিমান কলামিস্ট

মতামত এর আরও খবর