img

মস্তিষ্কের চিন্তাশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে চ্যাটজিপিটি

প্রকাশিত :  ০৯:৪১, ০৭ আগষ্ট ২০২৫

মস্তিষ্কের চিন্তাশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে চ্যাটজিপিটি

এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির আবিষ্কার জীবনকে অনেক সহজ করেছে। যে কোনো প্রশ্ন করলেই সহজে উত্তর দিয়ে দেয় সে। শুধু আলোচনা নয়, সে লিখে দেয় কবিতা। রেসিপি থেকে শুরু করে গণিত সমাধান, ভার্সিটির অ্যাসাইনমেন্ট, রিপোর্টের সব ধরনের কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

যখন যা কিছু মনে আসছে এআই চ্যাটবটের কাছে জানতে চাইছেন। কিংবা সময় বাঁচিয়ে তার কাছ থেকেই সমাধান নিচ্ছেন। কিন্তু খেয়াল করেছেন কি, এতে কিছু আপনার চিন্তা করার ক্ষমতা কমছে। চ্যাটজিপিটির নির্মাতা সংস্থাই জানিয়েছে, চ্যাটজিপিটি ব্যবহারে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

গবেষকরা জানান, চ্যাটজিপিটির মতো এআই টুল ব্যবহার করায় মস্তিষ্কে ক্ষতি হচ্ছে, ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে স্মৃতি। এমনকি, গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ে চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা।   

‘দি কগনিটিভ কস্ট অব ইউজিং লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলস’ স্টাডিতে বলা হয়েছে, চ্যাটজিপিটির মতো টুল মস্তিষ্কের চিন্তাভাবনা, শেখার ক্ষমতা, এমনকি মাথায় কোনো তথ্য রাখার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

এমআইটিতে ৫৪ জন শিক্ষার্থীর ওপরে চার মাস ধরে গবেষণা করা হয়েছে। তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়, এক দল চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে, একদল গুগল এবং আরেকটি দল কোনো কিছুরই সাহায্য না নিয়ে বিভিন্ন কাজ করে। পরে ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাফি (ইইজি) ডিভাইস দিয়ে তাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়।

দেখা যায়, এআই ব্যবহারকারী গ্রুপ প্রথমে দ্রুত রেজাল্ট দেখালেও, দীর্ঘ সময়ে মস্তিষ্ক ধীর-স্থির হয়ে গিয়েছে। শিক্ষার্থীরা যারা চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে, তাদের কোনো কিছু মনে রাখার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। তাদের ব্রেইন কাজ করাও কমিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে, যারা কোনো কিছুর সাহায্য না নিয়ে কাজ করেছেন, প্রজেক্ট লিখেছেন, তাদের পরীক্ষার ফলাফল অনেক ভাল। ভাষাগত দক্ষতাও অনেক বেশি।

এদিকে, যারা গুগল ব্যবহার করেছিল, সেই শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা মাঝারি ছিল। চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীদের তুলনায় তাদের চিন্তাশক্তি বেশি। তারা নিজস্ব আইডিয়া বা ভাবনা ভাবতে সক্ষম।

এ সমীক্ষাতেই ওঠে এসেছে, যারা নিয়মিত চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে, তাদের শুধু কীভাবে ভাববে, তার উপরেই প্রভাব নয়, সামগ্রিক ভাবনাচিন্তার উপরেই প্রভাব পড়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপরে অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা তাদের মস্তিষ্কের সক্রিয়তা কমিয়ে দিয়েছে। তাদের সৃজনশীল চিন্তাভাবনা, লেখার ক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে।


img

ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদন: দেশে বেড়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বাধীনতা

প্রকাশিত :  ১২:০৬, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

মার্কিন সংস্থা ফ্রিডম হাউস জানিয়েছে, বিশ্বে অনলাইনের স্বাধীনতা কমে গেলেও বাংলাদেশে এর উন্নতি হয়েছে । আজ প্রকাশিত ‘ফ্রিডম অন দ্য নেট ২০২৫’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর মূল্যায়নে থাকা ৭২টি দেশের মধ্যে ইন্টারনেট স্বাধীনতায় সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশে।

এ গবেষণায় ২০২৪ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে।

ফ্রিডম হাউস বলছে, ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া অভ্যুত্থানে একটি কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতা হারায়। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ডিজিটাল ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক সংস্কার আনে। এর ফলেই বাংলাদেশের ইন্টারনেট স্বাধীনতা সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১০০-এর মধ্যে ৪৫ হয়েছে। গত বছর এই স্কোর ছিল ৪০। এটি গত সাত বছরের সেরা অবস্থান।

তবে এত উন্নতির পরও বাংলাদেশ এখনো ‘আংশিক মুক্ত’ দেশ হিসেবে তালিকায় রয়ে গেছে—যে অবস্থানে ২০১৩ সাল থেকে রয়েছে।

ফ্রিডম হাউস তিনটি বড় বিষয় দেখে স্কোর নির্ধারণ করে—

(১) ইন্টারনেটে প্রবেশের বাধা,

(২) অনলাইনে প্রকাশিত বিষয়বস্তুর ওপর নিয়ন্ত্রণ,

(৩) ব্যবহারকারীর অধিকার লঙ্ঘন।

এই তিনটি বিভাগে মোট ২১টি সূচক ব্যবহার করে প্রতিটি দেশের অনলাইন স্বাধীনতার মাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা কিছু বড় পরিবর্তন হলো—২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মুহাম্মদ এমদাদ-উল-বারীকে বিটিআরসির চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়। তিনি ইন্টারনেট বন্ধ না করার নীতি গ্রহণ করেন এবং ইন্টারনেট প্রবেশাধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে দেখার কথা বলেন।

২০২৫ সালের মে মাসে সরকার বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন (সিএসএ) বাতিল করে। এর বদলে সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ (সিএসও) জারি হয়।

এতে কিছু ভালো দিক যেমন অনলাইন হয়রানি ও যৌন নির্যাতনবিরোধী সুরক্ষা রয়েছে, তবে আগের মতোই কিছু উদ্বেগজনক বিষয়—যেমন অনলাইনে বক্তব্যের জন্য শাস্তি ও নজরদারি রয়ে গেছে।

এদিকে দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে। তবে ভারত ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে পেছনে রয়েছে। পাকিস্তান ২৭ পয়েন্ট পেয়ে ‘মুক্ত নয়’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। শ্রীলঙ্কা ৫৩ ও ভারত ৫১ পয়েন্ট পেয়ে দুটোই ‘আংশিক মুক্ত’ শ্রেণিতে রয়েছে।


বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এর আরও খবর