img

এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীতে দর্শকদের মুগ্ধ করছে পারফর্মেন্স আর্ট

প্রকাশিত :  ১৯:৩৯, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীতে দর্শকদের মুগ্ধ করছে পারফর্মেন্স আর্ট

ঢাকায় এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীতে দর্শক-শ্রোতাদের বিপুলভাবে মুগ্ধ করছে বিভিন্ন দেশের খ্যাতিমান শিল্পীদের পারফর্মেন্স আর্ট প্রদর্শনী। বিভিন্ন দেশের শিল্পীরা নানা বিষয়, উপকরণ এবং নিজেদের শিল্প গুণের উপস্থাপনায় উৎসবকে উপভোগ্য করে তুলেছেন।

 

যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পী প্রীচ আর সান যুদ্ধবিরোধী পারফরমেন্সে বেশ কয়েকটি কসরত উপস্থাপন করেন। তার উপস্থাপনা দেখার জন্য জড়ো হয় বিপুলসংখ্যক দর্শক। তাদেরই একজন ঢাকা চারুকলা ইন্সটিটিউটের ছাত্র আহসান কবীর বলেন, পারফরমেন্স আর্ট যে সরাসরি দর্শককে নানা বিষয়ে মাতিয়ে তোলে যুক্তরাষ্ট্রের এই শিল্পী তা দেখিয়ে দিলেন। দুই হাত, অঙ্গভঙ্গি ও মুখের কারুকাজে যুদ্ধের বিরুদ্ধে মানুষকে তিনি জেগে ওঠার আহবান জানিয়েছেন।

 

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মাসব্যাপী ‘১৮তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী’র অংশ হিসেবে এই প্রদশর্নী অনুষ্ঠিত হয়। শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা ভবনের গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশসহ ২৬টি দেশের পারফরমেন্স আর্ট শিল্পীরা এতে অংশ নিচ্ছেন। প্রদর্শনী চলবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। একাডেমি এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীতে এবারই প্রথম পারফরমেন্স আর্ট আয়োজন করেছে।

 

এতে বাংলাদেশের ১৬জন শিল্পীসহ বিভিন্ন দেশের ২৯জন শিল্পী পারফরমেন্স আর্টে অংশ নিচ্ছেন। বাংলাদেশের তরুণ শিল্পী সুমন মাহবুব ‘ সময়ের ক্রীতদাস ’শীর্ষক পারফরমেন্সে চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেন ঘড়ির কাছে মানুষ কিভাবে প্রতিনিয়ত বন্দি থাকেন। আবার সময় মানুষকে কতটা গতিশীল করে। আবার সময়কে অবহেলা করলে মানুষ কিভাবে বিপদে পড়ে।

 

বাংলাদেশের শিল্পী সুমনা আখতার ‘বিষন্ন কাঁথা ’ শীর্ষক পারফরমেন্সে তুলে ধরেন বাঙালি সংস্কৃতিকে। কাঁথার ইতিহাস, কাঁথা কবে থেকে বুনন শুরু হয়। কেন কাঁথা তৈরি হয়েছে, বাঙালি সংস্কৃতি এই শিল্প উপকরণ বর্তমান সময়ে কতটা জরুরী, এ সব বিষয়গুলো তিনি তার পারফরমেন্সে উপস্থাপন করেন। শিল্পী সুমনা বাসসকে জানান, বাঙালি সংস্কৃতির এই শিল্প উপকরণটি অত্যন্ত পুরণো। বিদেশীরা এর গুরুত্ব বুঝেন না। বিশ্বের অসংখ্য শিল্পীরা এসেছেন এই উৎসবে। তাদের সামনে এই পারফরমেন্স করতে পেরে ভাল লাগছে।

 

পারফরমেন্স আর্ট প্রদর্শনে অংশ নিচ্ছেন দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্পী ঝিম চিউল, পার্ক ইয়াং জোয়া, স্পেনের অ্যাবেল এ্যাজকোনা, যুক্তরাষ্ট্রের প্রীচ আর সান, জার্মানীর ম্যারিটা বুলম্যান, জাপানের ম্যাডা ইউজুরো, উকি ক্যুয়েরিসি, তুরকের লীম্যান স্যাভদা, অষ্ট্রেলিয়ার মার্সিয়া গ্যারিকা, বাংলাদেশের শিল্পীরা হচ্ছেন, সুমনা আখতার, সুমন মাহাবুব, জয়দেব ব্যানার্জী ,শুভ সাহা, ফারাহ নাজ, এমরান সোহেল, জাহিদ হোসেন, জুয়েল এ রব, সরকার নাসরিন, আবু নাসের রবি, সৈয়দ আবির, অর্পিতা সিনহা, ইয়াসমিন জাহান নুপুর ও সঞ্জয় চক্রবর্তী প্রমুখ।

img

আজ পর্দা নামছে একুশে বইমেলার

প্রকাশিত :  ০৪:৪৩, ০২ মার্চ ২০২৪

আজ শনিবার (২ মার্চ) পর্দা নামছে অমর একুশে বইমেলার। তবে যে প্রত্যাশা নিয়ে মেলার সময় বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছিল সে অনুযায়ী বই বিক্রি হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা। তাদের ভাষ্য— বেইলি রোডের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানির ঘটনা পাঠকদের আলোড়িত করেছে। এ অবস্থায় মেলা শেষ হওয়ার আগের দিন শুক্রবার হওয়া সত্ত্বেও ভিড় ও বিক্রি ছিল কম।

আবার অনেকে বলছেন, মেলার সময় বাড়ানোর তথ্যটা যে পরিমাণে প্রচার হওয়া দরকার ছিল সেই পরিমাণে হয়নি। তাই অনেকে জানেনই না যে মেলার সময় বেড়েছে।

সাধারণত বইমেলা হয় ২৮ দিনে। তবে এ বছর অধিবর্ষ হওয়ায় মেলা এক দিন বেশি পেয়ে দাঁড়ায় ২৯ দিনে। তার ওপর ২৯তম দিনটি বৃহস্পতিবার হওয়ায় প্রকাশকদের দাবি ছিল মেলার সময় বাড়িয়ে শনিবার পর্যন্ত নেওয়ার। তাদের দাবি মেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অনুমোদনক্রমে ২৭ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা দিয়ে বইমেলার সময় দুদিন বাড়ানো হয়।

এবারের বইমেলা শুরু থেকেই ছিল জাঁকজমকপূর্ণ। প্রথম সপ্তাহের পর থেকে মেলা পুরোদমে জমে ওঠে। এর মধ্যে আবার মেট্রো ট্রেন বইমেলায় যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। দূরত্ব ও যানজট বিবেচনায় আগে যারা বইমেলায় আসতে নিরুৎসাহ বোধ করতেন এবার মেট্রো ট্রেন তাদেরও নিয়ে এসেছে বইমেলায়। ফলে বিগত বছরগুলোর তুলনায় দর্শনার্থীর ভিড় এবং ভালো বেচাবিক্রি হওয়ায় প্রকাশকদের মুখেও ছিল সন্তুষ্টির ছাপ।

এছাড়া আবহাওয়া ভালো থাকায় প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবও পড়েনি মেলায়। ২২ ফেব্রুয়ারি অল্প সময়ের বৃষ্টি মেলার বেচা-বিক্রিতে কিছুটা বিঘ্ন সৃষ্টি করলেও তা প্রকাশক ও পাঠকদের বড় ভোগান্তির কারণ হয়নি। তবে পাঠকের অত্যধিক সমাগমের দিন মেলার ধুলোবালি কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেছে দর্শনার্থীদের।

এদিকে মেলার শেষ সময়েও নতুন বই নিয়ে আসছেন প্রকাশকরা। শুক্রবার বইমেলার ৩০তম দিনেও নতুন বই এসেছে ২১৯টি। শুক্রবার হওয়ায় এদিন মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায় আর শেষ হয় রাত ৯টায়। তবে এদিন ছিল না কোনো শিশুপ্রহর। শনিবারও থাকবে না কোনো শিশুপ্রহর।

মেলার শুরু থেকে মূল মঞ্চে প্রতিদিনই থেকেছে আলোচনা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। লেখক বলছি মঞ্চে থাকতো বই নিয়ে কথোপকথন। বর্ধিত দুই দিনে তা-ও থাকছে না। এই সময়টাতে মূলত বই বিক্রিই মুখ্য বিষয় থাকবে প্রকাশকদের।

শনিবার সমাপনী দিনে মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৫টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’-এর সদস্য সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। অনুষ্ঠানে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার এবং শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হবে।