img

চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশিত :  ০৬:১৩, ১৪ মে ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমবারের মতো নিজ জেলা চট্টগ্রামে পৌঁছেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বুধবার (১৪ মে) সকাল সোয়া ৯টার দিকে তিনি শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এসময় প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান চট্টগ্রাম প্রশাসনের কর্তারা।

বিমানবন্দর থেকে সরাসরি দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর পরিদর্শনে যান প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে এনসিটি-৫ প্রাঙ্গণে একটি সভায় যোগ দেন এবং বন্দর ও জাহাজ চলাচল খাতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও বাণিজ্য সংস্থার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।

সফরসূচি অনুযায়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বন্দর থেকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে যাবেন। যেখানে তিনি কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করবেন এবং চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা সমস্যা ও অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়কের বাস্তবায়নের অগ্রগতি পরিদর্শন করবেন। সার্কিট হাউসের অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের ২৩ একর জমির নিবন্ধিত দলিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবেন।

দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের উদ্দেশে সার্কিট হাউস ত্যাগ করবেন ড. ইউনূস। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠান। সমাবর্তনে ২০১১ থেকে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের প্রায় ২২ হাজার ৬০০ জন শিক্ষার্থীকে সনদপত্র দেওয়া হবে। এ অনুষ্ঠানে ২০১৫-২৫ সালের ২২ জনকে পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া হবে। চবি কর্তৃপক্ষ ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন এবং বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদানের জন্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ডি লিট ডিগ্রি দেবে।

পরে হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে পৈতৃক বাড়ি পরিদর্শন করার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার। সেখানে তিনি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, এলাকাবাসীর সঙ্গে সময় কাটাবেন। সন্ধ্যায় বিমানে চট্টগ্রাম ত্যাগ করার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার।

জাতীয় এর আরও খবর

img

ঢাকায় ভিসা কার্যক্রম ফের চালু করায় অস্ট্রেলিয়াকে ধন্যবাদ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশিত :  ১৫:০৯, ১৭ জুন ২০২৫

ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম পুনরায় চালু করায় দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এই ধন্যবাদ জানান।

হাইকমিশনার রাইল জানান, এখন থেকে ভিসা আবেদন অনলাইনের মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে। বর্তমানে ৬৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন এবং সেখানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ হাজারের বেশি।

সাক্ষাৎকালে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, নির্বাচন, প্রশাসনিক সংস্কার ও রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন,“বিশৃঙ্খল একটি সময় পার করে আমরা সাংবিধানিক, বিচারিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি। একটি শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করছি, যাতে মসৃণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করা যায়।”

তিনি জানান, আগামী জুলাই মাসে ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন করা হবে।

জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন,“এই প্রথমবার জনগণ, বিশেষত তরুণ ভোটাররা স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে। আমি বিশ্বাস করি, এটি একটি উৎসবমুখর ও আশাব্যঞ্জক মুহূর্ত হবে।”

নির্বাচনী সহায়তার অংশ হিসেবে ইউএনডিপির মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের দক্ষতা বৃদ্ধিতে অস্ট্রেলিয়া ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার দেবে বলে জানান হাইকমিশনার রাইল।

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রসঙ্গে তিনি জানান, বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার বাণিজ্য ৫ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে পৌঁছেছে, যা গত পাঁচ বছরে গড়ে বছরে ১৬.২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

রাইল আরও জানান,“অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডসের মাধ্যমে তিন হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এখন অ্যালামনাই নেটওয়ার্কে যুক্ত, যারা দেশের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখছেন।”

প্রফেসর ইউনূস এই বৃত্তির সংখ্যা আরও বাড়াতে অনুরোধ জানান।

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,“বাংলাদেশে অবস্থানরত ১০ লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানবিক সহায়তা আরও বাড়ানো জরুরি।”

এর জবাবে হাইকমিশনার রাইল জানান, ২০১৭ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশে ৫৫৩.৬ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মানবিক সহায়তা দিয়েছে এবং সম্প্রতি আরও ৯.৬ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে।

তিনি বলেন,“মিয়ানমারে পরিস্থিতি অনুকূল হলে, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের পাশে থাকবে।”

বাংলাদেশে নতুন দায়িত্ব পেয়ে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে রাইল বলেন,“বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক গতিশীলতা দীর্ঘদিন ধরে আমাকে আকৃষ্ট করেছে। এখানে এসে আমি সত্যিই রোমাঞ্চিত।”

সাক্ষাতে সিনিয়র সচিব ও এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অনুবিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ নূরে আলম উপস্থিত ছিলেন।