img

বাংলাদেশের কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা করবে চীন

প্রকাশিত :  ১৮:৫৪, ০১ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা করবে চীন

কৃষি, পাট, সামুদ্রিক মৎস্য ও গবেষণার ওপর বিশেষ নজর রেখে ব্যবসা-বাণিজ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে প্রস্তুত চীন বলে জানিয়েছেন সফররত চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও।

আজ রোববার (১ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্মেলনে অংশ নেওয়া ওয়েনতাও চীনের বিশাল ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে ঢাকা সফর করছেন।

ওয়াং ওয়েনতাও প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমার সঙ্গে আসা চীনা কোম্পানিগুলো খুবই উৎসাহী। আপনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের যে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, তাতে চীনা কোম্পানিগুলো এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী।”

বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ভোক্তা প্রবণতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, রাত ১০টার পরও শপিং মলে ক্রেতাদের উপস্থিতি দেখে তিনি অভিভূত। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে পরিণত হবে—এমন পূর্বাভাস রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে বিশেষ করে কৃষি ও গভীর সমুদ্র ও নদীমাতৃক মৎস্য খাতে এখনো অনেক সুযোগ অবারিত রয়েছে। তিনি বলেন, “চীনের ছোঁয়ায় বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামকেই একটি উৎপাদন ইউনিটে রূপান্তর করা সম্ভব।”

ওয়েনতাও বলেন, আমরা যেমন আলোচনা করেছি, কৃষিতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমরা পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করতে পারি তা জানতে আমরা আগ্রহী। ‌তিনি বিশেষ করে কৃষিজমি উন্নয়ন, জল সংরক্ষণ এবং চাষাবাদের প্রযুক্তির কথা উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, “আমার দৃষ্টিতে কৃষি কেবল একটি শিল্প নয়, এটি একটি সামাজিক সংগঠনেরও রূপ।”

মৎস্য ও সামুদ্রিক অর্থনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে চীনের অভিজ্ঞতা অনেক এবং তিনি বাংলাদেশের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব প্রত্যাশা করেন।

চীন মৎস্য প্রযুক্তিতে, বিশেষ করে গভীর জলের সামুদ্রিক মৎস্য চাষে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে বলেন চীনা মন্ত্রী।

চীনা মন্ত্রী উল্লেখ করেন, অধ্যাপক ইউনূস চীন-বাংলাদেশ সম্মেলনে তার বক্তব্যে পাট খাতকে পুনরুজ্জীবনের যে সম্ভাবনার কথা বলেছেন, তা চীন গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। তিনি জানান, চীন প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পাট আমদানি করে, যা বাংলাদেশের মোট পাট রপ্তানির ১০ শতাংশ। গবেষণা ও পণ্য বৈচিত্র্য আনার মাধ্যমে এই পরিমাণ বহুগুণ বাড়ানো সম্ভব।

ওয়েনতাও বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তৃতার পরপরই সম্মেলনে উপস্থিত চীনা পাট ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যের উপর গবেষণা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন।

তিনি বলেন, “আমাদের সহযোগিতা শুধু ব্যবসায়িক পর্যায়েই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়, গবেষণার ক্ষেত্রেও যৌথভাবে কাজ করা উচিত। যদি বাংলাদেশও এই গবেষণায় অংশগ্রহণ করে, তাহলে পাট আমাদের জন্য একটি অত্যন্ত উপযোগী পণ্য হয়ে উঠবে।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের পাট ডিজাইনাররা চীনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে পারেন। তিনি চীনা মন্ত্রীর আন্তরিকতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবের প্রশংসা করে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা খুব আনন্দিত। আজকের আপনার বক্তৃতা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এত বিনিয়োগকারী এসেছেন—এটা আমাদের জন্য একটি ভালো বার্তা, কারণ পুরো জাতি এটি লক্ষ্য করছে।”

প্রধান উপদেষ্টা তার সাম্প্রতিক চীন সফরের কথাও স্মরণ করেন, যেখানে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা হয়।

অর্থনীতি এর আরও খবর

img

৫ আগস্ট সারাদেশে বন্ধ থাকবে ব্যাংক

প্রকাশিত :  ১৪:৩২, ১৭ জুলাই ২০২৫

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে আগামী ৫ আগস্ট সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এ কারণে সেদিন সারা দেশের তফসিলি ব্যাংক বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রবল গণআন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। দিনটিকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান দিবস’ ও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট সরকারি ছুটির দিন হিসেবে দেশের সব তফশিলি ব্যাংক বন্ধ থাকবে। অতএব, সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে আগেভাগে প্রস্তুতি নিতে এবং আর্থিক লেনদেন পরিকল্পনা করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রবল গণআন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। দিনটিকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান দিবস’ ও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট সরকারি ছুটির দিন হিসেবে দেশের সব তফশিলি ব্যাংক বন্ধ থাকবে। অতএব, সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে আগেভাগে প্রস্তুতি নিতে এবং আর্থিক লেনদেন পরিকল্পনা করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া ছাত্রদের আন্দোলন শেষমেশ সরকার উৎখাতের ইতিহাস গড়ে। ৩৬ দিনের সেই আন্দোলনে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন সাড়ে ১৫ বছর দোর্দণ্ড প্রতাপে দেশ চালিয়ে আসা শেখ হাসিনা।

শুরুতে এ আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পরে তা দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

সরকারের পক্ষে জবাব ছিল- গুলি, টিয়ারশেল আর লাঠি; এককথায় কেবলই বলপ্রয়োগ। প্রথমে ফেসবুক, পরে ইন্টারনেট বন্ধ করে পরিস্থিতি সামাল দিতে চায় সরকার। তাতে হিতে বিপরীত হয়।

আন্দোলনে রক্তপাত শুরু হওয়ার ২০ দিনের মধ্যেই লাশ আর রক্তের বোঝা মাথায় নিয়ে পতন হয় দেড় দশকের আওয়ামী লীগ সরকারের। পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা আর তার অমাত্যরা।