img

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সা‌বেক স্বামী এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে আপসানার অভিযোগ

প্রকাশিত :  ১০:৩৯, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সা‌বেক স্বামী এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে আপসানার অভিযোগ

ব্রিটেনের হাউস অব কমনসে এক আবেগঘন বক্তব্যে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ স্বতন্ত্র এমপি আপসানা বেগম। বক্তব্যে তিনি তাঁর সাবেক স্বামী ও এন‌সি‌পির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক এহতেশামুল হকের বিরুদ্ধে হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ধরেন। পপলার এবং লাইমহাউসের এই এমপি ‘ডিউটি অব কেয়ার’ বা ‘যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব’ নিয়ে বিতর্কের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নিয়োগকর্তা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত পারিবারিক সহিংসতার শিকারদের সুরক্ষা দেওয়া।

এর প্রতিক্রিয়ায় সাবেক স্বামী এহতেশামুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এটা একান্তই উনার রাজনৈতিক বিষয়।’

এমপির অশ্রুসিক্ত বক্তব্যটি সাবেক এই দম্পতির শেষ হ‌ওয়া সম্পর্কের ব্যাপারে নতুন ক‌রে আ‌লোচনার জন্ম দিয়েছে। ২০১৫ সা‌লে তাঁদের ডি‌ভোর্স হয়। দুজনই লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত পূর্ব লন্ড‌নের পরিচিত মুখ।

আগামী নির্বাচনে তাঁরা একই আসনে আবারও প্রার্থী হবেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে তাঁরা দুজন দুটি ভিন্ন দেশ থেকে দুটি নতুন দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।

গত বছর লেবার পার্টি থেকে বহিষ্কৃত হওয়া আপসানা বেগম পার্লামেন্টের প্রশ্নোত্তর পর্বে বলেন, তাঁর সাবেক সঙ্গী তাঁর বিরুদ্ধে হয়রানির একটি অভিযান পরিচালনা করছেন। তিনি প্রকাশ করেন, তাঁর সাবেক স্বামী তাঁকে ‘উন্মোচন’ করার লক্ষ্য নিয়ে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন।

আপসানা বেগম আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি তাঁর সহযোগীদের একটি চক্র দ্বারা একজন এমপি হিসেবে আমাকে অন্যায়ভাবে অপসারণ করার নিরন্তর চেষ্টার পাশাপাশি এই ধরনের হয়রানি সহ্য করে চলেছি।’ তিনি এর প্রভাবকে ‘বিধ্বংসী’ এবং প্রাতিষ্ঠানিক গ্যাসলাইটিংকে ‘ভয়ংকর’ বলে বর্ণনা করেন।

তাঁর সাবেক স্বামী এহতেশামুল হক এর আগে সব ধরনের নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর প্রার্থিতার সময় তিনি ডেইলি ড্যাজ‌লিং ডন‌কে বলেছিলেন, ‘আপসানার প্রতি আমার কোনো ব্যক্তিগত বিদ্বেষ নেই। আমি তাঁকে সাবেক স্ত্রী হিসেবে সম্মান করি।

কিন্তু এমন কোনো আইন নেই, যা বলে যে আমার সাবেক স্ত্রী আমার আসনের এমপি হওয়ার কারণে আমি একজন সাবেক কাউন্সিলর ও রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে সেখানকার রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে বা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারব না।’

গত বছরের ৪ জুলাই অনুষ্ঠিত যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে লেবার পার্টির এমপি আপসানা বেগম তাঁর সাবেক স্বামী এহতেশামুল হকের স্বতন্ত্র চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন। এহতেশামুল হক এর আগে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদের নির্বাচনে হেরেছিলেন। ওই নির্বাচনে আপসানা বেগম লেবার পার্টি থেকে ১৮ হাজার ৫৩৫ ভোট পান, আর স্বতন্ত্র প্রার্থী এহতেশামুল হক পান মাত্র চার হাজার ৫৫৪ ভোট। তাঁর বর্তমান স্ত্রী লেবার পার্টির কাউ‌ন্সিলর ‌কিছু‌দিন আগে লেবার পা‌র্টি ছে‌ড়ে টাওয়ার হ্যামলেটসের বর্তমান মেয়র লুত্ফুর রহমা‌নের এস্পয়ার পা‌র্টিতে যোগ দেন।

এই ব্রিটিশ বাংলাদেশি দম্পতির ২০১৩ সালের বিয়ে এবং পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। দুজনেরই পৈতৃক নিবাস সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায়। ৩৫ বছর জন্ম ও বেড়ে ওঠা টাওয়ার হ্যামলেটসের শ্যাডওয়‌লে। আফসানার বাবা মনির উদ্দিন টাওয়ার হ্যামলেটসের কাউন্সিলর ছিলেন। ২০১৫ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।

এহতেশামুল হকের বক্তব্য : এহতেশামুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এটা একান্তই উনার রাজনৈতিক বিষয়। ব্রিটেনে তিনি তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়েছেন। ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে উনি তো আমার প্রতিপক্ষ ছিলেন। তবে কখনোই উনি একজন ক্ষমতাশালী নারী হিসেবে ইংল্যান্ডের কোর্টে কিংবা পুলিশে কোথাও কোনো অভিযোগ দেননি। উনি যদি সিরিয়াস হতেন ইংল্যান্ডের যে সিস্টেম আছে, সে সিস্টেম অনুযায়ী তিনি বিচার চাইতে পারতেন এবং আমি তখন আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পেতাম। একান্তভাবে উনি রাজনৈতিকভাবে এ লাইনগুলো ব্যবহার করেন। এসব ব্যবহার করে উনি উনার ক্যারিয়ার তৈরি করেছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘উনার এ অভিযোগগুলো মূলত উঠে আসে উনি যখন হাউসিং ফোর ট্রায়ালের সম্মুখীন হন। অর্থাৎ উনার বিরুদ্ধে ব্রিটিশ সরকার হাউসিং ফোরের অভিযোগ নিয়ে আসে। ওই সময় উনি এই গল্পটা তৈরি করেন। এর আগে উনার সঙ্গে আমার বিচ্ছেদ-পরবর্তী সময়েও স্বাভাবিক সম্পর্ক ছিল। এমনকি বিচ্ছেদের পর আমি যখন ২০১৮ সালে কাউন্সিল নির্বাচন করি, তখনো উনি আমার হয়ে প্রচার করেছেন।’

কমিউনিটি এর আরও খবর

img

ডেঙ্গু কেড়ে নিল আরো ৬ প্রাণ

প্রকাশিত :  ১৪:০৯, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৪:২৮, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরো ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে চলতি বছর এখন পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৫ জনে দাঁড়াল। এ ছাড়া গত একদিনে ডেঙ্গু নিয়ে নতুন করে ৫৮৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে তিনজন মারা গেছে। পাশাপাশি এই সময়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী বিভাগে একজন করে মোট ৩ জন মারা গেছে। অন্যদিকে গত একদিনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী (১৪৪ জন) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে ১০৯ জন ছাড়াও ঢাকা বিভাগে ১০৪, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১০৩, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৮, রাজশাহী বিভাগে ৪৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১২ জন, রংপুর বিভাগে ১০ জন এবং সিলেট বিভাগে ২ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট ১৪৫ জন মারা গেছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু (৭৪ জন) হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে। পাশাপাশি এই সময়ে চট্টগ্রাম বিভাগে ২১ জন ছাড়াও বরিশাল বিভাগে ১৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ৭ জন, খুলনা বিভাগে ৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ জন এবং ঢাকা বিভাগে ২ জন ডেঙ্গুতে মারা গেছে।

কমিউনিটি এর আরও খবর