img

নতুন অধ্যাদেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অনুমোদন

প্রকাশিত :  ১৫:৩৩, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

নতুন অধ্যাদেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অনুমোদন

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে নতুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের আগে একটা মানবাধিকার কমিশন ছিল, কিন্তু সেটি কার্যত দন্তহীন একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। নিয়োগ পদ্ধতিতে ত্রুটি, এখতিয়ারে ঘাটতি এবং নেতৃত্বের দুর্বলতায় প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। এবার সেটিকে সত্যিকারের এখতিয়ারসম্পন্ন, ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

তিনি জানান, নতুন অধ্যাদেশে মানবাধিকার কমিশনের কাঠামো, এখতিয়ার ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। কমিশন একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সার্বক্ষণিক সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও যোগ্যতা নিশ্চিত করতে আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদন আহ্বান করা হবে এবং প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বাছাই কমিটি সুপারিশ করবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা নিয়োগ পদ্ধতিটা এমনভাবে করেছি যাতে অভিজ্ঞ, যোগ্য ও মানবাধিকার রক্ষায় সক্রিয় মানুষরা কমিশনে জায়গা পান।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ কর্তৃক অনুসমর্থিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি এবং প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত মানবাধিকারগুলোকেও এই কমিশনের এখতিয়ারে আনা হয়েছে। এর ফলে কমিশন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী কাজ করতে পারবে।’

অধ্যাদেশে কমিশনের এখতিয়ার বহুলাংশে বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে শৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাতেও কমিশন তদন্ত করতে পারবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আগের কমিশনের এখতিয়ারে গুরুতর সীমাবদ্ধতা ছিল, বিশেষ করে শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ক্ষেত্রে। এবার সেই সীমাবদ্ধতা দূর করা হয়েছে।’

এ ছাড়া গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা আইনসহ মানবাধিকার সংরক্ষণমূলক যেকোনো আইনের বাস্তবায়নের দায়িত্ব মানবাধিকার কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। আলাদা করে ‘গুম কমিশন’ গঠনের প্রয়োজন হবে না বলে তিনি জানান।

অধ্যাদেশে কমিশনের আদেশ প্রতিপালনকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন থেকে কমিশনের সুপারিশ বা নির্দেশ উপেক্ষা করা যাবে না। এর বাধ্যবাধকতা আইনি কাঠামোয় যুক্ত করা হয়েছে।’


জাতীয় এর আরও খবর

img

জামালপুরে নদীতে ডুবে ভাই-বোনসহ ৩ শিশুর মৃত্যু, নিখোঁজ ২

প্রকাশিত :  ১৮:০০, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

জামালপুরের মাদারগঞ্জে ঝিনাই নদীতে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে ভাই ও বোনসহ তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে আরও দুই শিশু।

মৃতরা হলো- চর ভাটিয়ানি গ্রামের প্রবাসী দুদু মিয়ার মেয়ে মরিয়ম (১১) ও ছেলে সাঈদ (৭) এবং একই এলাকার নুর ইসলামের মেয়ে সাইবা (১০)। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছে একই এলাকার আজাদ মিয়ার মেয়ে কুলসুমসহ দুইজন।

জানা গেছে, আজ শুক্রবার বিকালে শিশুরা খেলাধুলা শেষে পার্শ্ববর্তী ঝিনাই নদীতে গোসল করতে নামলে প্রথমে একজন তলিয়ে যায়। পরে তাকে খুঁজতে গিয়ে অন্য দুজন পানিতে ডুবে মারা যায়।

এলাকাবাসী জানান, তিনজনের লাশ জড়াজড়ি করা অবস্থায় ছিল। ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কাজ চলছে।

ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রিপন মিয়া জানান, নিখোঁজ দুইজনের উদ্ধার কাজ চলমান আছে। তবে আলোর স্বল্পতার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।

মাদারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ সাইফ জানান, খেলাধুলা শেষে সন্ধ্যায় যমুনার শাখা ঝিনাই নদীতে গোসল করতে নামলে তিন শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছে। সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তিন শিশুর লাশ উদ্ধারসহ দুই শিশুর নিখোঁজ থাকার ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।


জাতীয় এর আরও খবর