img

গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ ও ফল রপ্তানিতে সহায়তার আশ্বাস দিল এফএও

প্রকাশিত :  ০৮:৫৫, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১০:১৩, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ ও ফল রপ্তানিতে সহায়তার আশ্বাস দিল এফএও

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মহাপরিচালক ড. কু দোংইউ বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ শিল্পের উন্নয়ন ও কৃষিজাত পণ্য—বিশেষ করে ফল রপ্তানি বাড়াতে অব্যাহত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

ইটালির রোমে এফএও সদর দপ্তরে আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরাম এবং সংস্থাটির ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (রোম সময়) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি এ আশ্বাস দেন।

বৈঠকের শুরুতে ড. কু অধ্যাপক ইউনূসকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং বাংলাদেশের কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়নে তাঁর ব্যাপক অবদানের প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশকে ‘উচ্চ সাফল্য অর্জনকারী দেশ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে এফএও মহাপরিচালক বলেন, সংস্থাটি প্রযুক্তিগত সহায়তা, উদ্ভাবন এবং দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ত্রিমুখী সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের সহায়তা অব্যাহত রাখব।’

প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস এফএও’র দীর্ঘদিনের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনটি নতুন ক্ষেত্রে সহায়তা চান—গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ ও মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণে সক্ষমতা বৃদ্ধি, ফল রপ্তানি সম্প্রসারণে সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ উন্নয়ন এবং ফসল সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা জোরদার করা, যার মধ্যে সাশ্রয়ী ও বহনযোগ্য কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন অন্তর্ভুক্ত।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমাদের পুরো সমুদ্র রয়েছে, কিন্তু আমরা মাছ ধরি অগভীর জলে। আমরা কখনোই সামুদ্রিক সম্পদ পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারিনি। বিদেশি ট্রলারগুলো আমাদের জলসীমায় মাছ ধরে, অথচ আমরা পর্যাপ্তভাবে প্রস্তুত নই।’

এর জবাবে ড. কু পরামর্শ দেন, বাংলাদেশ যেন চীনের বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানিয়ে গভীর সমুদ্রের মাছের মজুদ নিরূপণ ও টেকসই আহরণ কৌশল প্রণয়নে সহায়তা নেয়।

বাংলাদেশের ফল রপ্তানির বিশাল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, চীন ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের আম, কাঁঠাল ও পেয়ারা আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তিনি ছোট কৃষকদের ফসল সংগ্রহোত্তর ক্ষতি কমাতে মোবাইল কোল্ড স্টোরেজ নকশার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন।

ড. কু বলেন, উচ্চমূল্যের নগদ ফল উৎপাদন কৃষি খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জানান, ১৯৮০-এর দশকে জাপানে ফল রপ্তানির মাধ্যমে চীন কৃষি উন্নয়নে বিশাল সাফল্য অর্জন করেছিল।

আগামী দিনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৬ সালে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির ২০ বছর পূর্ণ হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা তা উদযাপন করব,’—বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে এ কথা বলেন তিনি।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম।

img

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শুরু

প্রকাশিত :  ০৬:০৩, ২১ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৬:০৯, ২১ অক্টোবর ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে পুনরায় আপিলের ওপর শুনানি শুরু করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে মামলাটির শুনানি শুরু হয়।

আবেদনের পক্ষে শুনানি করছেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া, আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করবেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।

পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করা হয়। মামলাটিতে আদালত আটজন অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ করে তাদের মতামত শোনেন। এদের মধ্যে পাঁচজন- ড. কামাল হোসেন, টিএইচ খান, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম ও ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে মত দেন।
অন্যদিকে ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি এ ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে মত দেন। ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক ও ড. এম জহির তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে আদালতে তাদের প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। এ ছাড়া তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বজায় রাখার পক্ষে অবস্থান নেন।

সবশেষে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হয়। এরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচন আওয়ামী লীগের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। তবে এরই মধ্যে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়।

জাতীয় এর আরও খবর