img

জুলাই সনদে এনসিপি কেন স্বাক্ষর করেনি, জানালেন আখতার

প্রকাশিত :  ১২:৩৪, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৫৬, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

জুলাই সনদে এনসিপি কেন স্বাক্ষর করেনি, জানালেন আখতার

জাতীয় জুলাই সনদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর করলেও, এতে অংশ না নেওয়ার কারণ জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিহীনতা এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ধোঁয়াশার কারণেই এনসিপি তাতে আনুষ্ঠানিক স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থেকেছে।

আজ শনিবার (১৮ অক্টোবর) দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে আখতার হোসেন বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি ও বৈধতা নিশ্চিত না করেই এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জাতিকে পরিষ্কার ধারণা না দিয়েই সরকার অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে। জুলাই সনদের কোনো আইন ভিত্তি না দেওয়া, বাস্তবায়ন আদেশ প্রকাশ না করা এবং পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা জাতির সামনে না আনার কারণে আমরা আনুষ্ঠানিকতার জন্য স্বাক্ষর থেকে বিরত থেকেছি।’

অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আহত ও শহীদ পরিবারের প্রতি অসম্মান করা হয়েছে। শহীদ পরিবাররাই জুলাই সনদ আয়োজনের মূল আকর্ষণ হলেও, তাদের মঞ্চ থেকে দূরে বসিয়ে অমর্যাদা করা হয়েছে। শহীদ পরিবার অনুষ্ঠানে প্রাপ্য সম্মান পাননি, বরং প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করা হয়েছে। আহতদের ওপর হামলা চালিয়ে এবং অসম্মান করে জুলাই সনদকে পাওয়ার এলিটের সেটেলমেন্ট বানানোর অপচেষ্টা করা হয়েছে।’

আখতার হোসেন বলেন, “জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে জাতিকে ধোঁয়াশায় রাখা হয়েছে এবং সনদের আইনি ভিত্তি হিসেবে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ’র উল্লেখ নেই। অভ্যুত্থান-পরবর্তী যে কোনো বন্দোবস্তের নৈতিক ও আইনি ভিত্তি থাকতে হবে, কিন্তু সনদে জনগণের সার্বভৌম ও গাঠনিক ক্ষমতার মৌলিক সত্যের উল্লেখ নেই।’

এদিকে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) শহীদ পরিবার ও আহতরা কিছু দাবি নিয়ে অনুষ্ঠানে গেলে ঐক্যবদ্ধ কমিশন পঞ্চম দফা সংশোধনের ঘোষণা দিলেও, শুরুতেই বিষয়টি আমলে নিলে তাদের রাজপথে নামতে হতো না। আহত যোদ্ধাদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান আখতার হোসেন।

এনসিপির এই নেতা সতর্ক করে জানান, যে সনদের আওতাভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধানের এমন কিছু অনুচ্ছেদ পরিবর্তনে সম্মত হয়েছে, যা বিদ্যমান সংবিধানের তথাকথিত ‘বেসিক স্ট্রাকচার’-এর আওতাভুক্ত। ফলে ’৭২ সালের সাংবিধানিক কাঠামোর অধীনে থেকে এই পরিবর্তনগুলো ভবিষ্যতে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে, যা জুলাই সনদকে জনগণের সঙ্গে একটি সাংবিধানিক প্রতারণায় পরিণত করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে এনসিপি সরকারপ্রধান ড. ইউনূসকে গণভোটের পূর্বে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ’ জারির আহ্বান জানিয়েছে, যাতে এর আইন ভিত্তি, বৈধতা ও জুলাই অবস্থান স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে।


img

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শুরু

প্রকাশিত :  ০৬:০৩, ২১ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৬:০৯, ২১ অক্টোবর ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে পুনরায় আপিলের ওপর শুনানি শুরু করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে মামলাটির শুনানি শুরু হয়।

আবেদনের পক্ষে শুনানি করছেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া, আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করবেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।

পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করা হয়। মামলাটিতে আদালত আটজন অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ করে তাদের মতামত শোনেন। এদের মধ্যে পাঁচজন- ড. কামাল হোসেন, টিএইচ খান, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম ও ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে মত দেন।
অন্যদিকে ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি এ ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে মত দেন। ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক ও ড. এম জহির তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে আদালতে তাদের প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। এ ছাড়া তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বজায় রাখার পক্ষে অবস্থান নেন।

সবশেষে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হয়। এরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচন আওয়ামী লীগের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। তবে এরই মধ্যে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়।

জাতীয় এর আরও খবর