img

লি‌ডিং ইউ‌নিভা‌র্সি‌টির ট্রাস্টি বোর্ডে ভারতীয় নারী!

প্রকাশিত :  ০৬:৪৫, ১৩ নভেম্বর ২০২৩

 লি‌ডিং ইউ‌নিভা‌র্সি‌টির ট্রাস্টি বোর্ডে ভারতীয় নারী!

নিয়মবর্হিভূতভাবে সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডে এক ভারতীয় নারীকে সদস্য হিসেবে রাখার প্রমাণ পেয়েছে বিশ্ব‌বিদ্যালয় মঞ্জু‌রি ক‌মিশন (ইউজিসি)।

ওই ভারতীয় নাগরিক  ও নাবালক একজনকে বাদ দিয়ে নতুন করে ট্রাস্ট্রি বোর্ড গঠনের জন্য রোববার (১২ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যলয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি প্রদান করেছে ইউজিসি।

ইউজিসির পরিচালক মো. ওমর ফারুখ স্বাক্ষরিত ওই চিঠি পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক কাজী আজিজুল মওলা।

ট্রাস্টি বোর্ডে থাকা ওই ভারতীয় নাগরিক হলেন সাদিকা জান্নাত চৌধুরী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান রাগীব আলীর ছেলে সৈয়দ আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী। সাদিকা জান্নাত চৌধুরী ভারতের আসাম প্রদেশের কাছার জেলার সোনাইমুখ তোলাগ্রামের শাহনেওয়াজ চৌধুরী ও রত্না চৌধুরীর মেয়ে।

জানা যায়, শিল্পপতি রাগীব আলীর ছেলে সৈয়দ আব্দুল হাই প্রথম স্ত্রীর স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদের পর ভারতীয় নাগরিক সাদিকাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর শ্বশুরের প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি লিডিং ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্য হন সাদিকা। ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সিলেট সদর রেজিস্ট্রি অফিসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের রেজিস্ট্রেশনের সময় তার ঠিকানা মালনীছড়া চা-বাগান উল্লেখ করা হয়। যদিও দলিলে শ্বশুর রাগীব আলী ও স্বামী আব্দুল হাইয়ের ঢাকার গুলশান-২-এর ৭৬ নম্বর রোডের ৬ নম্বর বাসার ঠিকানা দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিদেশি নাগরিকের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্য হওয়ার সুযোগ নেই। এজন্য লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে সাদিকার শ্বশুর বা স্বামীর ঠিকানা ব্যবহার করা হয়নি। পরিচয় গোপন করার জন্য অবৈধভাবে তৈরি করা জন্মনিবন্ধনে ব্যবহৃত মালনীছড়া চা-বাগানের ঠিকানা দেওয়া হয়।

জানা যায়,  বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ের ট্রা‌স্টি বোর্ডকে অবৈধ দাবি করে ও লি‌ডিং ইউ‌নিভা‌র্সি‌টি‌তে ট্রেজারার বনমালী ভৌ‌মিকের বিরুদ্ধে দুর্নী‌তির অভিযোগ এনে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য  কাজী আজিজুল মাওলা ইউজিসির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য  সাদিকা জান্নাত চৌধুরী (পাসপোর্ট নং K 3920850) ভারতের নাগ‌রি‌ক বলে উ‌ল্লেখ করেন। অন্য‌দি‌কে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি‌বো‌র্ডের চেয়ারম্যান রা‌গিব আলীও উপাচার্যের বিরু‌দ্ধে ইউ‌জি‌সি‌তে অ‌ভি‌যোগ দেন।

ড. কাজী আবু তাহেরের নেতৃত্বে অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করতে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি ইউজিসির তদন্ত কমিটি গত ২৭ জুলাই ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন। এসময় তারা বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান রাগীব আলী, উপচার্য ড. কাজী আজিজুল মাওলা ও ট্রেজারার বনমালী ভৌমিকর সাথে পৃথক পৃথক বৈঠক করেন।

তদন্ত শেষে ১২ নভেম্বর ইউ‌জি‌সির প‌রিচালক মো. ওমর ফারুক বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চি‌ঠি‌ প্রদান করেন।

সি‌লে‌টের বেসরকা‌রি বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য় লি‌ডিং ইউ‌নিভা‌র্সি‌টির স্থাপত্য বিভা‌গের বহিস্কৃত দুই শিক্ষক‌কে পুনর্বহা‌লের আ‌দেশ দি‌য়ে‌ছে বিশ্ব‌বিদ্যালয় মঞ্জু‌রি ক‌মিশন (ইউজিসি)। সেই সা‌থে ট্রা‌স্টি‌বো‌র্ড থে‌কে ভারতীয় নাগ‌রিকসহ দুজন‌কে ২ মা‌সের ম‌ধ্যে বাদ দি‌য়ে নতুন ক‌রে বোর্ড গঠ‌নেরও নি‌র্দেশনা দি‌য়ে‌ছে।

১২ নভেম্বর ইউ‌জি‌সির প‌রিচালক মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষ‌রিত চি‌ঠি‌তে এসব নি‌র্দেশনা প্রদান করা হয়।

চিঠিতে  ভারতীয় নাগরিক সাদিকা জান্নাত চৌধুরী ও নাবালক সাইদ আজমাইন আবদুল হাই-কে বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ থেকে বাদ দিয়ে আগামী দুই মাসের মধ্যে জ‌য়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা ও আগামী তিন মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির অনিরীক্ষিত অর্থ বছর-এর নিরীক্ষা করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

জানা যায়, কোম্পানি আইনের নিয়মে যৌথ মূলধনী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বোর্ডের নিবন্ধন না করায় দীর্ঘ ১৬ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।

২০০৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতির মেয়াদ শেষে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর ধারা ৯ অনুযায়ী সরকারি সনদ গ্রহণ করা হয়নি।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্প্রতি বহিস্কার প্রসঙ্গে নি‌র্দেশনায় উ‌ল্লেখ করা হয়,  সাম্প্রতিক সময়ে লিডিং ইউনিভার্সিটি\'র বিভিন্ন অনিয়ম এবং বিশ্ববদ্যিালয়টির উপাচার্য এবং ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের পরস্পরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ  তদন্তে গ‌ঠিত ক‌মি‌টির সুপারিশ অনুযায়ী, লিডিং ইউনিভার্সিটি\'র আর্কিটেকচার বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দা জারিনা হোসেইন এবং সহযোগী অধ্যাপক স্থপ‌তি রাজন দাস এর বহিষ্কারাদেশ বাতিল ঘোষণাপূর্বক সকল সুযোগসুবিধাসহ বহিস্কারাদেশ সাক্ষরের তারিখ হতে স্বপদে পূর্নবহাল করার নি‌র্দেশ প্রদান করা হয়। সেইসাথে, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর কোন এখতিয়ারবলে তাদের চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে তার কারনদর্শানো সহ ব্যাখ্য তিন  কার্য দিবসের মধ্যে কমিশনে প্রেরণ করারও আ‌দেশ দি‌য়ে‌ছে ক‌মিশন।

সেই সা‌থে  ইউনিভার্সিটি\'র উপাচার্য অধ্যাপক কাজী আজিজুল মওলাকে চুক্তি অনুযায়ী বেতনভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাদি প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

ইউ‌জি‌সির প‌রিচালক ওমর ফারুক স্বাক্ষ‌রিত চি‌ঠি‌তে সকল বিভাগে আগামী ৩ মাসের মধ্যে যোগ্যতাসম্পন্ন প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ৩৩(৩) ধারা মোতাবেক খণ্ডকালীন শিক্ষক সংখ্যা নিশ্চিত করার জন্যও প্র‌য়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার বনমালী ভৌমিকের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

শিক্ষা এর আরও খবর

img

দক্ষিণ কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষায় রোস্টারভুক্ত ভিসা প্রত্যাশীদের মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি

প্রকাশিত :  ০৬:৩৮, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৯:৫০, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

দক্ষিণ কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষায় পাস করা রোস্টারভুক্ত ডিলিট হওয়া (ইপিএস) কর্মীদের পুনঃরোস্টার ও সব রোস্টারভুক্তকে ভিসা ইস্যু করার লক্ষ্যে ৯ দফা কর্মসূচি নিয়ে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ইপিএস কর্মীরা।

আজ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষায় রোস্টারভুক্ত সকল ভিসাপ্রত্যাশী’র ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করেন তারা।

এ সম্পর্কে রোস্টারভুক্ত ভিসাপ্রত্যাশী'রা বলেন, ‘ভাষা শিক্ষার দুই বছর পার হয়ে গেলে আমাদের বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। কয়েকশ লোক ভাষা শিখেছেন, অথচ এখন মেয়াদ শেষ। এত কষ্ট করে এত টাকা খরচ করে আমরা ভাষা শিখেছি, সেটা কি বিফলে যাবে? আমরা আর কত অপেক্ষা করবো?

ইপিএস কর্মীদের চলমান সংকট নিরসনের জন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ হতে নিম্নোক্ত দাবিসমূহ তুলে ধরা হয়:

১. ২০২২ সাল থেকে শুরু করে যে সকল কর্মী ডিলেট হয়েছে বা হবে সে সকল কর্মীদের রাষ্ট্রীয় কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে পূণঃরোস্টার বাধ্যতামূলক করতে হবে। এবং ২০২৩ সাল সহ যে সকল ইপিএস কর্মী রোস্টারে আছে তাদের ডিলিট না হওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।

২. দুই বছরের ১০টি ইস্যুতে ৭-৮ বার কোম্পানির মালিকের কাছে আমাদের ফাইল বাধ্যতামূলক পৌছাতে হবে এবং সেটা সিরিয়াল/সাল/বছর অনুযায়ী হতে হবে। ৩. বর্তমান রোস্টারকৃত কর্মীদের মধ্যে ৭৫-৮৫ ভাগ কোরিয়াতে প্রবেশ না করা পর্যন্ত সকল প্রকার

সার্কুলার বাণিজ্য বন্ধ রাখতে হবে। ৪. কোরিয়ার প্রত্যেক বানিজ্যিক জোনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক এজেন্ট নিয়োগ বাধ্যতামূলক করতে হবে, কমপক্ষে (৪-৫ জন)। যারা

প্রত্যেক ইস্যুর পূর্বে তাদের নির্ধারিত জোনের আওতাভুক্ত কোম্পানিতে গিয়ে ইস্যুর জন্য কোম্পানির মালিকদের উৎসাহিত করবে। ৫. ভিসা ইস্যুর ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন মুক্ত বাংলাদেশ ইপিএস ঘোষণা করতে হবে। আর্থিক লেনদেনের কোন প্রমান পেলে বোয়েসেল/এইচ.আর.ডি সেই সকল চত্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। তৃতীয় কোন পক্ষ থাকলে তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

৬. নতুন নতুন খাত/সেক্টর খুঁজে বের করে রোস্টারভুক্তদের মধ্য হতে সরকারি প্রশিক্ষনের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী গড়ে তুলে তাদের কোরিয়া যাত্রা নিশ্চিত করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় ও কূটনৈতিক বিচক্ষন্তার মাধ্যমে সকল রোস্টারভূক্তদের কোরিয়ায় প্রবেশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি বেসরকারিভাবে যাতে কোন কর্মী কোরিয়াতে প্রবেশ করতে না পারে সেই নিশ্চয়তা দিতে হবে।

৭. মৎস, কনস্ট্রাকশন, শিপ বিল্ডিং খাতের ভিসা ইস্যু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে। রোস্টারকৃত কর্মীদের ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কোন অঞ্চল থেকে রোস্টারবিহীন কাউকে ভিসা ইস্যু করা যাবেনা, এই বিষয়ে নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। প্রয়োজনে তাদের অন্য খাত/সেক্টরে রোস্টার পরিবর্তন করে হলেও ভিসা ইস্যু নিশ্চিত করতে হবে।

৮. কোরিয়া প্রবাসী কোন কর্মী কোম্পানি পরিবর্তন বা রিলিজ নেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির এজেন্ট স্ব-শরীরে কোম্পানিতে গিয়ে সমস্যা সমাধান করতে হবে।

৯. বর্তমান সংকট নিরসনে দ্রুততার সহিত বোয়েসেলের কর্মকর্তাগন সফল না হলে ব্যার্থতার দ্বায় নিয়ে অতিশীগ্রই তাদের পদত্যাগ করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপে বোয়েসেলকে বিচক্ষণ লোকদের সমন্বয়ে ঢেলে সাজাতে হবে।

শিক্ষা এর আরও খবর