img

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি

প্রকাশিত :  ১০:১৯, ০৪ জুন ২০২৫

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। একই সঙ্গে গতানুগতিক বাজেট প্রক্রিয়া সংস্কার করারও দাবি জানিয়েছে দলটি।  

বুধবার (৪ জুন) বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ কথা বলেন।  আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি। 

আমীর খসরু চৌধুরী মাহমুদ বলেন, দেশে এখন যেহেতু সংসদ বা গণতান্ত্রিক কোনো সরকার নাই- আমরা আশায় ছিলাম অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে এবং সাধারণ মানুষের মতামত নিয়ে বাজেট ঘোষণা করবে। কিন্তু সরকার তা করেনি। বাজেট ঘোষণাটা পুরোপুরি গতানুগতিক বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

খসরু বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে কর আরোপের কোনো যুক্তি নেই। আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতা এলে শিক্ষার কর মওকুফ করা হবে। 

তিনি বলেন, বাজেটে আমাদের আউট অফ বক্স চিন্তা করতে হবে। গতানুগতিক বাজেট থেকে বের হওয়ার সুযোগ ছিল। 

বাজেট প্রক্রিয়া সংস্কার প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, বাজেট অনুমোদনের জন্য প্রচলিত সাংবিধানিক পদ্ধতি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। জবাবদিহিতা এবং বাংলাদেশে সংসদীয় তদারকি শক্তিশালী করার জন্য মৌলিক সাংবিধানিক ও পদ্ধতিগত সংস্কারও করা হবে। সংসদীয় কমিটিকে শক্তিশালী করা, স্বচ্ছতা এবং জনসাধারণের অংশগ্রহণ, নির্বাচনপূর্ব কেয়ারটেকার সরকারের জঞ্জাল পরিষ্কার নির্দেশিকাসহ বিস্তৃত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একদিকে মুলস্ফীতি অন্যদিকে জনগণের আয় কমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ট্যাক্স বাড়িয়ে দিলে জনগণের ওপর প্রভাব পড়বে। তাই জনগণের জীবনযাত্রার মান বাজেটের প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত।  কিন্তু আমরা বৈষম্যের জন্য আন্দোলন করেছি। বাজেট উল্টো দিক দেখছি। 

আমীর খসরু বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসলে আমাদের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করবো। কোনো কিছু বাতিল প্রসঙ্গ আসবে না। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহবুব হোসেন শ্যামল, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।


জাতীয় এর আরও খবর

img

ঢাকায় ভিসা কার্যক্রম ফের চালু করায় অস্ট্রেলিয়াকে ধন্যবাদ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশিত :  ১৫:০৯, ১৭ জুন ২০২৫

ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম পুনরায় চালু করায় দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এই ধন্যবাদ জানান।

হাইকমিশনার রাইল জানান, এখন থেকে ভিসা আবেদন অনলাইনের মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে। বর্তমানে ৬৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন এবং সেখানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ হাজারের বেশি।

সাক্ষাৎকালে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, নির্বাচন, প্রশাসনিক সংস্কার ও রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন,“বিশৃঙ্খল একটি সময় পার করে আমরা সাংবিধানিক, বিচারিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি। একটি শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করছি, যাতে মসৃণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করা যায়।”

তিনি জানান, আগামী জুলাই মাসে ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন করা হবে।

জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন,“এই প্রথমবার জনগণ, বিশেষত তরুণ ভোটাররা স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে। আমি বিশ্বাস করি, এটি একটি উৎসবমুখর ও আশাব্যঞ্জক মুহূর্ত হবে।”

নির্বাচনী সহায়তার অংশ হিসেবে ইউএনডিপির মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের দক্ষতা বৃদ্ধিতে অস্ট্রেলিয়া ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার দেবে বলে জানান হাইকমিশনার রাইল।

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রসঙ্গে তিনি জানান, বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার বাণিজ্য ৫ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে পৌঁছেছে, যা গত পাঁচ বছরে গড়ে বছরে ১৬.২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

রাইল আরও জানান,“অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডসের মাধ্যমে তিন হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এখন অ্যালামনাই নেটওয়ার্কে যুক্ত, যারা দেশের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখছেন।”

প্রফেসর ইউনূস এই বৃত্তির সংখ্যা আরও বাড়াতে অনুরোধ জানান।

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,“বাংলাদেশে অবস্থানরত ১০ লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানবিক সহায়তা আরও বাড়ানো জরুরি।”

এর জবাবে হাইকমিশনার রাইল জানান, ২০১৭ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশে ৫৫৩.৬ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মানবিক সহায়তা দিয়েছে এবং সম্প্রতি আরও ৯.৬ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে।

তিনি বলেন,“মিয়ানমারে পরিস্থিতি অনুকূল হলে, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের পাশে থাকবে।”

বাংলাদেশে নতুন দায়িত্ব পেয়ে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে রাইল বলেন,“বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক গতিশীলতা দীর্ঘদিন ধরে আমাকে আকৃষ্ট করেছে। এখানে এসে আমি সত্যিই রোমাঞ্চিত।”

সাক্ষাতে সিনিয়র সচিব ও এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অনুবিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ নূরে আলম উপস্থিত ছিলেন।