সংবাদ সম্মেলনে এনসিপি

img

জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারীরা গণঅভ্যুত্থান ও জনগণ থেকে ছিটকে গেছে

প্রকাশিত :  ০৯:২০, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১০:২২, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারীরা গণঅভ্যুত্থান ও জনগণ থেকে ছিটকে গেছে

জুলাই সনদে যারা স্বাক্ষর করেছে তারা গণঅভ্যুত্থান ও জনগণ থেকে ছিটকে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

নাহিদ ইসলাম বলেন, গতকালকের ঘটনায় যে জুলাই যোদ্ধারা আহত হয়েছেন, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ তাদের ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের অনুসারী আখ্যা দিয়েছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। হয়তো তিনি ভুলবশত, তথ্য না থাকার কারণে তিনি এ রকমটা বলেছেন। যেহেতু তিনি দীর্ঘদিন দেশে ছিলেন না, যেহেতু তিনি জুলাই অভ্যুত্থানের সময় দেশে ছিলেন না, রাজপথে ছিলেন না, সেহেতু হয়তো তিনি জানেন না যে, কে রাজপথে ছিল, কারা লড়াই করেছিল, কারা বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েছিল। 

তিনি আরও বলেন, আতিকুল গাজী যার হাত কাটা গেছে, তাকে যখন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর বলা হয়, যখন শহীদ মীর মুগ্ধের বাবাকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর বলা হয়, শহীদ ইয়ামিনের বাবাকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর বলা হয়, তাদের যেকোনো দাবির জন্যই দাবির প্রেক্ষিতে সেটা আমাদের জন্য খুবই কষ্টের, খুবই বেদনাদায়ক। আমাদের আহ্বান থাকবে তিনি তার এই বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করবেন এবং আহত যোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারদের কাছে ক্ষমা চাইবেন।

বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিনকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্পটা শোনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের সাথে বসে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্পটা শুনবেন, ইতিহাসটা শুনবেন। কারা লড়াই করেছিল, কিভাবে লড়াই করেছিল, কিভাবে এই দেশ স্বাধীন হয়েছিল এবং আজকে আমরা এখানে কথা বলতে পারছি। 

সংবাদ সম্মেলনে দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ’-এ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা স্বাক্ষর করেছেন গতকাল বিকেলে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ২৪টি রাজনৈতিক দলের নেতারা জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই সনদে স্বাক্ষর করেন। 

জুলাই সনদে স্বাক্ষরের পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আজকের দিনটি পৃথিবীর জন্য বড় উদাহরণ হয়ে থাকবে। আমরা রাজনৈতিক দলের সদস্যদের জন্য এবং আমাদের ঐক্যমত কমিশনের সহসভাপতি এবং সদস্যবৃন্দের জন্য জোরে একটা হাততালি দেই- অসম্ভবকে সম্ভব করার জন্য। তারা ইতিহাসে অক্ষয় হয়ে থাকবে। তাদের নাম অক্ষয় হয়ে থাকবে। লোকে চিন্তা করবে যে তারা কিভাবে এটা করেছিল।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া নেতাদের নিয়ে গঠিত এনসিপি এই সনদে স্বাক্ষর করেনি। তাদের প্রধান আপত্তির কারণ ছিল—সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি বা আইনি ভিত্তি স্পষ্ট করে উল্লেখ না করা। এ ছাড়া সিপিবি, বাসদ, বাংলাদেশ জাসদ এবং বাসদ (মার্ক্সবাদী)-সহ আরও কয়েকটি বাম দল সনদে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত ছিল।

তবে স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে জাতীয় সংসদ ভবনের অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করে মঞ্চের সামনে অবস্থান নেন ‘জুলাই যোদ্ধা’রা। অনুষ্ঠানস্থল থেকে এই বিক্ষোভকারীদের সরানোর সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় লাঠিপেটা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর এবং সড়কে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে পুলিশ ও জুলাই যোদ্ধাসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।    


img

৫ মামলায় জামিন চাইলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক

প্রকাশিত :  ০৬:৫৪, ২০ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৭:২৯, ২০ অক্টোবর ২০২৫

জুলাই আন্দোলনে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলাসহ ৫ মামলায় জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক।

আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে মামলাগুলো শুনানির জন্য কার্যতালিকায় রয়েছে।

এর আগে রোববার (১৯ অক্টোবর) সাবেক এই প্রধান বিচারপতির আইনজীবী আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৫ মামলায় তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

হত্যা মামলার জামিন চেয়ে করা আবেদনে বলা হয়, যে তারিখে হত্যার ঘটনা দেখানো হয়েছে, সেদিন পর্যন্ত সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। আর এই পদে থাকাবস্থায় তিনি পুলিশ প্রোটোকল ছাড়া কোথাও যাননি। পুলিশের মুভমেন্ট ডায়েরি অনুযায়ী তিনি সেদিন বাড়িতে ছিলেন।

অন্যদিকে দুর্নীতির মামলার জামিন আবেদনে উল্লেখ করা হয়, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে মামলায় রাজউকের পূর্বাচল প্লটের জন্য সময়মতো কিস্তি না দিয়ে ৪ লাখ ৭৪ হাজার ২৩০ টাকা সুদ মওকুফের অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তিনি সুদ মওকুফের জন্য আবেদন করেননি। এছাড়াও সুদ মওকুফ আইনি বিষয়, এটি ফৌজদারি অপরাধ নয়।

গত ২৪ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বেআইনি রায় দেওয়া ও জাল রায় তৈরির অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের একটি মামলায়ও খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। 

গত বছরের ২৫ আগস্ট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল বারী ভূঁইয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেন। পরে আরো মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এর আগে গত ১১ আগস্ট হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চে জুলাই আন্দোলনে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি  এ বি এম খায়রুল হকের জামিন ও মামলা বাতিল আবেদনের শুনানিতে আওয়ামীপন্থি এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।

জাতীয় এর আরও খবর