img

সিলেট নগরীর রাস্তায় আজ থেকে হকার বসতে পারবে না

প্রকাশিত :  ১৮:৩৫, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

সিলেট নগরীর রাস্তায় আজ থেকে হকার বসতে পারবে না

দীর্ঘদিন ধরে সিলেট নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে হকারদের দখলদারিত্বের কারণে নাগরিকরা যে দুর্ভোগে ভুগছেন, সেই পরিস্থিতি মোকাবেলায় অবশেষে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন। নগরীর ব্যস্ততম এলাকায় হকার বসা ও অস্থায়ী দোকান স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

আজ রোববার (১৯ অক্টোবর) থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশে জানানো হয়েছে: বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, লামাবাজার, তালতলা, আম্বরখানা ও চৌহাট্টাসহ নগরীর সব গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল এলাকায় দিন বা রাতের যেকোনো সময় হকারি বা অস্থায়ী দোকান বসানো যাবে না।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, নির্দেশ অমান্য করে কেউ যদি নির্ধারিত এলাকায় হকারি কার্যক্রম চালান, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রযোজ্য আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দীর্ঘদিন ধরে সিলেট নগরীর ফুটপাত ও সড়কের পাশে হকারদের অনিয়ন্ত্রিত দখলদারিত্বে যানজট ও জনদুর্ভোগ নিত্যদিনের চিত্রে পরিণত হয়েছিল। এবার সেই বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে প্রশাসন মাঠে নামছে বলে জানা গেছে।

জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, নগরবাসীর নির্বিঘ্ন চলাচল, শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং পরিচ্ছন্ন নগর পরিবেশ গড়ে তুলতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করে বলেন, প্রশাসনের এ প্রচেষ্টায় যদি সবাই অংশ নেন, তাহলে সিলেট আরও বাসযোগ্য ও সৌন্দর্যমণ্ডিত শহরে রূপ নিতে পারবে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম বলেন, লালদিঘির পাড় মাঠে হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবাইকে সেখানে চলে যেতে হবে। নগরের ব্যস্ততম এলাকার সড়কে হকারদের বসতে দেওয়া হবে না। বসলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে এসএমপির পক্ষ থেকেও রাস্তা ও ফুটপাতে চলাচলে বিঘ্ন ঘটে এমন কোন কর্মকাণ্ড ঘটলে তাদের বিরুদ্ধ ট্রাফিক আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে রাখা হয়েছে।

রোববার সকাল থেকে জলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন ও এসএমপি মিলে ফুটপাত মুক্ত রাখতে নগরীতে অভিযানে থাকবে। তাদের সহায়তায় র‌্যাব-৯ এর পক্ষ থেকে একটি ইউনিট নগরীতে মোতায়েন থাকবে।

সিলেটের খবর এর আরও খবর

img

সিলেট নগরের সড়কে নেই হকার, যানজটও কম

প্রকাশিত :  ০৯:০৭, ২০ অক্টোবর ২০২৫

সিলেট নগরের হকাররা জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা মেনে প্রধান প্রধান সড়ক ও ফুটপাত ছেড়ে দিয়েছেন । রোববার নগরের প্রধান সড়কগুলোতে হকারদের দেখা মিলেনি।

ফলে রোববার এক অন্যরকম নগরের দেখা পান নগরবাসী। দখলমুক্ত সড়ক ও ফুটপাত। কোথাও হকার নেই। ফলে যানজটও কমে গেছে অনেকটা। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নগরবাসী। এই অবস্থা অব্যাহত রাখার দাবি জানেয়েছেন তারা।

দুপুরে নগরীর প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা জিন্দাবাজার, লামাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, বন্দরবাজার ও তালতলা এলাকায় ফুটপাত ও সড়কে হকারদের দেখা মিলেন। তবে এসব এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তারা হেঁটে হেঁটে এসব এলাকায় টহল দিয়েছেন। সন্ধ্যার পর নগরের জিন্দাবাজার এলাকা পরির্দশন করেন পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, রোববার নগরের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে একযোগে অভিযান চালানো হয়। এতে সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অংশ নেন। তবে তার আগেই হকাররা সড়ক ও ফুটপাত ছেড়ে চলে যান।

এর আগে শনিবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রবিবার সকাল থেকে নগরীর কোনো সড়ক বা ফুটপাতে হকার বসতে দেওয়া হবে না। এ নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হকারদের পুণবার্সনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে লালদিঘির পড়ের মাঠ। তবে সড়ক ছাড়লেও রোববার এই মাঠে সামান্য সংখ্যক হকারদের দেখা গেছে। মাঠের বেশিরভাগ জায়গাই ফাঁকা রয়েছে। কয়েকজন দোকান প্রস্তুত করতে দেখা গেছে।

তাদের একজন বলেন, আমরা এর আগেও দুবার এখানে এসেছি। এখানে ক্রেতারা আসেন না। ফলে ব্যবসাও হয় না। এই মাঠে প্রবেশের রাস্তাও খুব সরু।

তিনি বলেন, ব্যবসা না করতে পারলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। তাই প্রশাসনের কাছে দাবি আমাদের যেনো স্থায়ী একটি ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

তবে হকাররা ফুটপাত ছাড়ায় খুশি নগরবাসী। বন্দরবাজার হাসান মার্কেটের ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের মার্কেটের সামনের প্রায় পুরোটা সড়ক তো হকাররা দখল করে নিয়েছিলো। সব সময় এখানে যানজট লেগে থাকতো। ক্রেতারাও ফুকতে পারতো না।

তিনি বলেন, আজ দেখি ফুটপাত ফাঁকা, যানজট নেই। মনে হচ্ছে সত্যিই পরিবর্তন আসছে।

নগরবাসী প্রশাসনের এই কঠোর অবস্থানকে স্বাগত জানালেও তাদের আশঙ্কা—এই অবস্থা কতদিন থাকবে? আবারও কি পুরনো চিত্রে ফিরে যাবে শহর?

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযান একদিনের নয়, চলবে ধারাবাহিকভাবে—যতদিন না পর্যন্ত নগরীর ফুটপাত ও সড়ক পুরোপুরি দখলমুক্ত রাখা যায়।

সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লালদিঘীরপারস্থ হকার মার্কেটের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। চলছে শেষ মুহুর্তের কাজ। এখানে প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার হকারের ব্যবসার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে এবং নির্দিষ্ট পণ্যের জন্য আলাদা এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম বলেন, লালদিঘির পাড় মাঠে হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবাইকে সেখানে চলে যেতে হবে। নগরের ব্যস্ততম এলাকার সড়কে হকারদের বসতে দেওয়া হবে না। বসলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিলেটের খবর এর আরও খবর