ভারতের ত্রিপুরায় ‘চোর সন্দেহে’ হবিগঞ্জের ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা
প্রকাশিত :
২০:১৮, ১৬ অক্টোবর ২০২৫ সর্বশেষ আপডেট: ২০:১৯, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই এলাকায় তিন বাংলাদেশীকে পিটিয়ে ও তীর মেরে হত্যা করা হয়েছে। পরে সেখানকার পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাতে খোয়াইয়ের কারেঙ্গিছড়া নামক স্থানে তাদের হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৫৫ ব্যাটালিয়ন।
নিহতরা হলেন, জেলার চুনারুঘাট উপজেলার আলীনগর গ্রামের আশ্বব আলীর ছেলে জুয়েল মিয়া (৩২), বাসুল্লা গ্রামের কনা মিয়ার ছেলে পন্ডিত মিয়া (৪৫) এবং কবিলাশপুর গ্রামের কদ্দুস মিয়ার ছেলে সজল মিয়া (২০)।
বিজিবি জানায়- ওই তিন বাংলাদেশী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই এলাকার কারেঙ্গিছড়া নামক স্থানে প্রবেশ করেন। ওই স্থানটি সীমান্তের শূন্যলাইন থেকে ৪/৫ কিলোমিটার ভারতের অভ্যান্তরে।
বিজিবি আরো জানায়- ধারণা করা হচ্ছে তারা গরু পাচারের উদ্যেশ্যে সেখানে গিয়েছিল। পরে চোর সন্দেহে সেখানকার স্থানীয়রা তাদেরকে মারধর করে ও তীর মেরে হত্যা করে। এ ঘটনায় বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তারেকুর রহমান বলেন লাশের ছবি দেখে নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে।
৫৫ বিজিবি (হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন) ক্যাপ্টেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানজিলুর রহমান বলেন, কুপিয়ে ও তীর মেরে হত্যা করা মরদেহগুলো বাংলাদেশি তিনজনের। এ বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। পরে বিস্তারিত জানা যাবে।
পরকীয়ার অভিযোগে মাজার জিয়ারতের কথা বলে সিলেটে এনে স্ত্রীকে খুন!
প্রকাশিত :
০৮:৫৪, ১৯ অক্টোবর ২০২৫ সর্বশেষ আপডেট: ১০:৫৭, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজার জিয়ারতের কথা বলে স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে সুনামেঞ্জের দোয়ারাবাজারের ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে। শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। এর আগের দিন দোয়ারাবাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সিলেটের এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ।
এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ অক্টোবর বিকেলে লাক্কাতুরা চা বাগানের ভাইগণ নামক টিলার উপরে নির্জন ও ঝোপঝাড়ে এক অজ্ঞাতনামা নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতদেহটি আংশিক পচনধরা অবস্থায় ছিল। প্রাথমিকভাবে ওই নারীর বয়স প্রায় ২৫ বছর অনুমান করা হয়। পরনে ছিল নতুন লাল রঙের জমিন ছাপা শাড়ি, হালকা গোলাপি রঙের বোরকা, এবং গলায় হলুদ রঙের ওড়না পেঁচানো ছিল। মৃতদেহের পাশেই পাওয়া যায় একটি লেডিস হ্যান্ডব্যাগ, যার ভিতরে ছিল কয়েকটি জামাকাপড় এবং ব্যাগের পকেটে একটি ছোট মেমোরি কার্ড।
পিবিআই ও সিআইডি কর্তৃক আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করা হলেও, আঙ্গুলে পচন ধরায় পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।পরবর্তীতে মেমোরি কার্ডে থাকা রেকর্ডকৃত মোবাইলের কথোপকথনের অডিও তথ্য বিশ্লেষণ করে এবং সংশ্লিষ্ট নম্বরের সিডিআর সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে পুলিশ মৃত নারীর পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
নিহত নারী হলেন—সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারা বাজার থানার মওলারপাড় গ্রামের মৃত মাহতাব মিয়ার কন্যা রাবেয়া বেগম। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তদন্তে অগ্রগতি ঘটে এবং পুলিশের সন্দেহভাজন হিসেবে উঠে আসে নিহতের স্বামী সুনামগঞ্জ সদর থানার রাঙ্গারচর গ্রামের ওমান ফেরত আব্দুল আজিজের ছেলে ফারুক আহমেদ।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এয়ারপোর্ট থানার একটি আভিযানিক দল দোয়ারা বাজার থানাধীন রাঙ্গারচর গ্রামে অভিযান চালিয়ে ফারুককে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিকভাবে ফারুক হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করলেও, জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করলে সে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে।
আসামি ফারুকের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ফারুক ওমানে অবস্থানকালে তার স্ত্রী রাবেয়া বেগমের পূর্বের বিয়ে গোপন করা, তার সাথে বিয়ের পর অন্য পুরুষের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়া নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্য চলছিল। পরবর্তীতে গত ১৩ অক্টোবর ফারুক স্ত্রীকে নিয়ে হযরত শাহজালাল (রহঃ)-এর মাজার জিয়ারতের কথা বলে সিলেটে আসে। মাজার জিয়ারত শেষে বেড়ানোর কথা বলে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উত্তর-পূর্ব দিকের নির্জন টিলায় নিয়ে যায়। সেখানে বিকেল আনুমানিক চারটার দিকে তার ফুফাতো ভাই আলামিনের সহায়তায় স্ত্রী রাবেয়া বেগমকে গলা টিপে হত্যা করে।
এ ঘটনার বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানায় ফারুক ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ভিকটিমের চাচা রিপন মিয়া অভিযোগ দায়ের করলে এয়ারপোর্ট থানার মামলা নং-১৭ তারিখ-১৭/১০/২৫খ্রিঃ ধারা ৩০২/৩৪।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, শনিবার (১৮ অক্টোবর) ফারুককে আদালতে উপস্থাপন করলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের সম্মুখে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দি প্রদান শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।