img

১ নভেম্বর থেকে সিলেটে রেলপথ অবরোধের ডাক

প্রকাশিত :  ১০:৪৭, ১১ অক্টোবর ২০২৫

 ১ নভেম্বর থেকে সিলেটে রেলপথ অবরোধের ডাক

সমগ্র সিলেট বিভাগের রেলপথ উন্নয়ন ও অবকাঠামোগত সংস্কারসহ ৮ দফা দাবি আদায়ে ১ নভেম্বর থেকে সিলেট বিভাগে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি আহ্বান করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাতে এ কর্মসূচির ডাক দেন ৮ দফা দাবিতে আন্দোলনরতরা।

এরআগে বিকেলে কুলাউড়া জংশন স্টেশনের ভিআইপি ওয়েটিং রুমে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রেলওয়ের ঢাকা অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মো. মহিউদ্দিন আরিফের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেও আন্দোলনকারীরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।

এরপর আন্দোলনকারীরা জানান, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে ১ নভেম্বর থেকে সিলেট বিভাগের সকল রেলপথে অবরোধ শুরু হবে। বৈঠক শেষে আন্দোলনকারীরা তাৎক্ষণিকভাবে কুলাউড়া রেলস্টেশনে বিক্ষোভ মিছিলও করেন।

বৈঠকে আন্দোলনকারীদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন— সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নওয়াব আলী আব্বাস খান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদিন বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সজল, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মো. জাকির হোসেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা ফজলুল হক খান সাহেদ, ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন আন্দোলনের সমন্বয়ক সাংবাদিক আজিজুল ইসলাম ও আতিকুর রহমান আখই প্রমুখ।

রেলওয়ের পক্ষে বৈঠকে অংশ নেন— ডিসিও ঢাকা মো. মহব্বতজান চৌধুরী, সিলেট রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার নুরুল ইসলাম, কুলাউড়ার টিআই (টি) শাহাজান পাটওয়ারী সাজুসহ রেলওয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা।

আন্দোলনের সমন্বয়ক আজিজুল ইসলাম ও আতিকুর রহমান আখই বলেন, রেলওয়ে কর্মকর্তারা কেবল আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু বাস্তব কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। আমরা এসব আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করছি।

তারা সিলেট বিভাগের সাধারণ জনগণকে ১ নভেম্বর ট্রেন ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

এর আগে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর কুলাউড়ায় অবস্থান ধর্মঘট চলাকালে আন্দোলনকারীরা ট্রেন আটকে দেন। তখন রেলওয়ের ডিআরএম মো. মহিউদ্দিন আরিফ ১৫ দিনের মধ্যে আলোচনা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

আন্দোলনকারীদের আট দফা দাবি গুলো হচ্ছে— সিলেট- ঢাকা, সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে দুটি স্পেশাল ট্রেন চালু। আখাউড়া-সিলেট রেলপথ সংস্কার ও ডাবল লাইনে উন্নীতকরণ। আখাউড়া-সিলেট সেকশনে অন্তত একটি লোকাল ট্রেন চালু। আখাউড়া-সিলেট সেকশনে সব বন্ধ স্টেশন চালু করা। কুলাউড়া জংশন স্টেশনে বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা বৃদ্ধি। সিলেট-ঢাকাগামী আন্তঃনগর কালনী ও পারাবত ট্রেনের আজমপুরের পর ঢাকা অভিমুখী সব স্টেশনের যাত্রা বিরতি প্রত্যাহার। সিলেটের সঙ্গে চলাচলকারী ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রোধে ত্রুটিমুক্ত ইঞ্জিন যুক্ত করা। যাত্রী অনুপাতে প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন করতে হবে।

সিলেটের খবর এর আরও খবর

img

পরকীয়ার অভিযোগে মাজার জিয়ারতের কথা বলে সিলেটে এনে স্ত্রীকে খুন!

প্রকাশিত :  ০৮:৫৪, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১০:৫৭, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজার জিয়ারতের কথা বলে স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে সুনামেঞ্জের দোয়ারাবাজারের ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে। শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। এর আগের দিন দোয়ারাবাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সিলেটের এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ।

এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ অক্টোবর বিকেলে লাক্কাতুরা চা বাগানের ভাইগণ নামক টিলার উপরে নির্জন ও ঝোপঝাড়ে এক অজ্ঞাতনামা নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতদেহটি আংশিক পচনধরা অবস্থায় ছিল। প্রাথমিকভাবে ওই নারীর বয়স প্রায় ২৫ বছর অনুমান করা হয়। পরনে ছিল নতুন লাল রঙের জমিন ছাপা শাড়ি, হালকা গোলাপি রঙের বোরকা, এবং গলায় হলুদ রঙের ওড়না পেঁচানো ছিল। মৃতদেহের পাশেই পাওয়া যায় একটি লেডিস হ্যান্ডব্যাগ, যার ভিতরে ছিল কয়েকটি জামাকাপড় এবং ব্যাগের পকেটে একটি ছোট মেমোরি কার্ড।

পিবিআই ও সিআইডি কর্তৃক আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করা হলেও, আঙ্গুলে পচন ধরায় পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।পরবর্তীতে মেমোরি কার্ডে থাকা রেকর্ডকৃত মোবাইলের কথোপকথনের অডিও তথ্য বিশ্লেষণ করে এবং সংশ্লিষ্ট নম্বরের সিডিআর সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে পুলিশ মৃত নারীর পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

নিহত নারী হলেন—সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারা বাজার থানার মওলারপাড় গ্রামের মৃত মাহতাব মিয়ার কন্যা রাবেয়া বেগম। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তদন্তে অগ্রগতি ঘটে এবং পুলিশের সন্দেহভাজন হিসেবে উঠে আসে নিহতের স্বামী সুনামগঞ্জ সদর থানার রাঙ্গারচর গ্রামের ওমান ফেরত আব্দুল আজিজের ছেলে ফারুক আহমেদ।

এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এয়ারপোর্ট থানার একটি আভিযানিক দল দোয়ারা বাজার থানাধীন রাঙ্গারচর গ্রামে অভিযান চালিয়ে ফারুককে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিকভাবে ফারুক হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করলেও, জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করলে সে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে।

আসামি ফারুকের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ফারুক ওমানে অবস্থানকালে তার স্ত্রী রাবেয়া বেগমের পূর্বের বিয়ে গোপন করা, তার সাথে বিয়ের পর অন্য পুরুষের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়া নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্য চলছিল। পরবর্তীতে গত ১৩ অক্টোবর ফারুক স্ত্রীকে নিয়ে হযরত শাহজালাল (রহঃ)-এর মাজার জিয়ারতের কথা বলে সিলেটে আসে। মাজার জিয়ারত শেষে বেড়ানোর কথা বলে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উত্তর-পূর্ব দিকের নির্জন টিলায় নিয়ে যায়। সেখানে বিকেল আনুমানিক চারটার দিকে তার ফুফাতো ভাই আলামিনের সহায়তায় স্ত্রী রাবেয়া বেগমকে গলা টিপে হত্যা করে।

এ ঘটনার বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানায় ফারুক ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ভিকটিমের চাচা রিপন মিয়া অভিযোগ দায়ের করলে এয়ারপোর্ট থানার মামলা নং-১৭ তারিখ-১৭/১০/২৫খ্রিঃ ধারা ৩০২/৩৪।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, শনিবার (১৮ অক্টোবর) ফারুককে আদালতে উপস্থাপন করলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের সম্মুখে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দি প্রদান শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সিলেটের খবর এর আরও খবর