
বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং জনমত - - আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী

আমার এই লেখাটির শিরোনাম হচ্ছে ''বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং জনমত''। আমার সৌভাগ্য, বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য লাভের সুযোগ পেয়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধেও একজন কলমযোদ্ধা হয়েছিলাম। আর জনমত? বিলাতের এই সাপ্তাহিক পত্রিকাটিতে লিখছি আজ চল্লিশ বছরের বেশি সেময়। পত্রিকাটি বঙ্গবন্ধুর আশীর্বাদ লাভ করেছিলো। ইউরোপে মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র মুখপত্র ছিলো। স্বাধীনতার দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর পর বিলাতে বাংলা মিডিয়ায় যখন মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বিরোধী চক্র এবং জামাতিরা অর্থের জোরে প্রাধান্য বিস্তার করেছে, তখন 'জনমত'ই একমাত্র পত্রিকা, যেখানে তারা প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।
বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং জনমতের মধ্যে আরেকটি সাদৃশ্য লক্ষনীয়। আমরা এখন বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকি উদযাপন করছি। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তি পালন করবো আগামী বছর। জনমতও একটি সুবর্ণ জয়ন্তির কাল, অর্থাৎ ৫০ বছর পার হয়ে এখন গৌরবের ৫২ বছরে চলছে। বাঙালির ভাষা আন্দোলনের সঙ্গেও 'জনমত' ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। ৫২ বছর আগে একুশের ভাষা শহীদ দিবসেই 'জনমত' এর জন্ম। জন্মলাভের পর বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা আন্দোলন থেকে অহিংস অসহযোগিতার আন্দোলন, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ সবটাতেই সমর্থন দিয়েছে জনমত। পুরো প্রচ্ছদ জুড়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছাপা হয়েছে দু' দুবার।
'জনমতের' সঙ্গে আমার পরিচয় বিলাতে আসার আগে। বাংলাদেশে উনসত্তরের গণ অভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার পর একদিন ঢাকায় বত্রিশ নম্বরে গেছি। শেখ ফজলুল হক মনির সঙ্গে দেখা। নানা কথার মধ্যে তিনি বললেন, বিলাতে আমাদের আন্দোলন, বিশেষ করে স্বায়ত্বশাসনের আন্দোলন সম্পর্কে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে বড় ধরনের সমর্থন রয়েছে। তারা দেশের আন্দোলনের খবরাখবর জানতে চায়। কিন্তু আমাদেরতো কোন কাগজ ছিল না বিলাতে। এখন হয়েছে। দেশে স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনের খবর ছাপছে এবং আন্দোলনকে সমর্থন দিচ্ছে পত্রিকাটি।