img

ইসরায়েলে প্রবল বিক্ষোভের মুখে নেতানিয়াহু, গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবি

প্রকাশিত :  ০৭:০১, ২১ মার্চ ২০২৫

ইসরায়েলে প্রবল বিক্ষোভের মুখে নেতানিয়াহু, গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবি

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু  নিজ দেশে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন। ফিলিস্তিনের গাজায় নতুন করে অভিযান চালানোর বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। যুদ্ধবিরতির দাবিতে ইসরায়েলের রাস্তায় নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভকে ঘিরে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো বন্ধ করা হয়। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। জেরুজালেম ও তেল আবিব থেকে পুলিশ কমপক্ষে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সরকার রাজনৈতিক কারণে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। গাজায় এখনও হামাসের কাছে জিম্মি থাকা ৫৯ জনের পরিণতি নিয়ে ভাবছে না। জিম্মিদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত আছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। খবর- দ্য গার্ডিয়ান

ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বার’কে বরখাস্ত করার প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে এ বিক্ষোভ শুরু হয় মঙ্গলবার। তবে গাজায় প্রাণঘাতী বিমান হামলা চালিয়ে দুই মাসের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ আরও জোরালো হতে থাকে। হাজার হাজার মানুষ ইসরায়েলের রাস্তায় নেমেছেন। সরকারের বিরুদ্ধে তারা তীব্র বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। বুধবার হাজার হাজার মানুষ জেরুজালেমের মধ্যাঞ্চলে নেতানিয়াহুর সরকারি বাসভবনের কাছের সড়কগুলোতে অবস্থান নেন। তাঁদের অনেকের হাতে ছিল পতাকা এবং গাজায় এখনও জিম্মি থাকা মানুষদের সমর্থনে লেখা স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড। ‘এখনই জিম্মি মুক্তির চুক্তি করুন’ এমন স্লোগান দিতে থাকেন লোকজন।  

বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, এখনও গাজায় অন্তত ৫৯ ইসরায়েলি জন বন্দি আছেন, যাদের ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর জিম্মি করে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস। নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতির চুক্তি ভঙ্গ করে নতুন করে গাজায় অভিযান চালানোয় জীবিত জিম্মিদের মেরে ফেলা হবে বলে মনে করছেন বিক্ষোভকারীরা। যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর অধিকাংশ বন্দিকেই হস্তান্তর করেছে হামাস। সকলে ফিরে আসার আগেই নেতানিয়াহু নতুন করে আক্রমণ শুরু করায় বিরক্ত দেশের একটি বড় অংশের মানুষ। সম্প্রতি একটি জনমত সমীক্ষাও করা হয়েছিল। সেখানে দেখা গেছে, দেশের অধিকাংশ মানুষ চান, যুদ্ধ বন্ধ করে জিম্মিদের প্রত্যার্পণ নিয়ে আরও বেশি আলোচনা চালাক সরকার।

বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছেন, হামাসের হাত থেকে সমস্ত বন্দিকে উদ্ধার না করে নতুন করে গাজায় আক্রমণ চালিয়ে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ভুল করেছেন। দ্রুত এই অভিযান বন্ধের দাবি তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা। একইসঙ্গে তারা নেতানিয়াহুর একাধিক সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন। এরই জেরে রনেনকে সরিয়ে দেওয়া হলো বলে মনে করা হচ্ছে। নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে রনেন একটি তদন্তও শুরু করেছিলেন। রোনেন বার’কে বরখাস্তের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদনের জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওঠে। ওই বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে বরখাস্তের পক্ষে মত দেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা।  

বিক্ষোভকারীদের দাবি, নেতানিয়াহু সরকার দেশের গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে। আয়োজকেরা বলছেন, বিক্ষোভ কর্মসূচি যেভাবে গতি পাচ্ছে, তাতে আগামী দিনগুলোতে আরও বেশি বিক্ষোভ হতে পারে। যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখতে বিদেশি সরকারগুলোর আহ্বান উপেক্ষা করে সম্প্রতি আকাশ ও স্থলপথে হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। এর মধ্য দিয়ে গত জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেস্তে গেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গাজায় গত কয়েক দিনে ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ৬০০ মানুষ নিহত হয়েছেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ওরা নাকাশ পেলেড বলেন, ‘ইসরায়েল তুরস্ক নয়, ইসরায়েল ইরান নয়।’ নেতানিয়াহুর নেওয়া বেশ কিছু সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে ইসরায়েলি গণতন্ত্রের জন্য ‘লাল পতাকা’ হিসেবে মন্তব্য করেন তিনি। এর একটি হলো, রোনেন বার’কে বরখাস্ত করার তৎপরতা। আরেকটি হলো, অ্যাটর্নি জেনারেল গ্যালি বাহারাভ মিয়ারাকে বরখাস্ত করার তৎপরতা। মিয়ারা যুক্তি দেখিয়েছেন, বারকে তাঁর পদ থেকে উৎখাত করা হলে তা অবৈধ হতে পারে।

 


আন্তর্জাতিক এর আরও খবর

img

কাশ্মীর সীমান্তে ভারতীয় ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করল পাকিস্তান

প্রকাশিত :  ১০:২৩, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

কাশ্মীর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে পঞ্চমবারের মতো গোলাগুলি হয়েছে। এ নিয়ে তীব্র উত্তেজনার মধ্যে ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। রাষ্ট্র পরিচালিত রেডিও পাকিস্তান এবং পিটিভি নিউজ নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান সেনাবাহিনী মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) আজাদ কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলওসি) কাছে একটি ভারতীয় কোয়াডকপ্টার ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করে। পেহেলগাম হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজের মধ্যে এ ঘটনা ঘটল।

স্থানটি নির্দিষ্ট করে নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তান তার আকাশসীমা লঙ্ঘনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে নিয়ন্ত্রণ রেখায় একটি ভারতীয় কোয়াডকপ্টার সফলভাবে গুলি করে ভূপাতিত করেছে। শত্রু আজাদ কাশ্মীরের ভিম্বের জেলার মানাওয়ার সেক্টরে একটি কোয়াডকপ্টার ব্যবহার করে নজরদারির চেষ্টা করেছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনী সময়মতো পদক্ষেপের মাধ্যমে শত্রুর এই নিকৃষ্ট প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দেয়।

নিরাপত্তা সূত্র এই ঘটনাকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সতর্কতা, পেশাদার দক্ষতা এবং প্রতিরক্ষামূলক প্রস্তুতির স্পষ্ট প্রমাণ হিসেবে অভিহিত করে। এক সামরিক সূত্র বলেছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী সর্বদা শত্রুর যেকোনো আগ্রাসনের তাৎক্ষণিক ও কার্যকর জবাব দিতে প্রস্তুত। সমগ্র জাতি প্রতিটি ফ্রন্টে শত্রুকে যথাযথ জবাব দিতে সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছে।

এর আগে সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাতে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ‘পরিমিত ও কার্যকরভাবে’ জবাব দিয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২৮-২৯ এপ্রিল রাতে পাকিস্তানি সেনারা কুপওয়ারা ও বারামুলা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা এবং আখনুর সেক্টরে অপ্ররোচিতভাবে ছোট অস্ত্রের গুলিবর্ষণ করে। ভারতীয় সেনাবাহিনী এই উত্তেজনার পরিমিত ও কার্যকর জবাব দিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে ভারতীয় সেনাদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। তবে এতে এখনও পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।