img

শেয়ার কারসাজির দায়ে সাকিব আল হাসানের ২.২৬ কোটি টাকা জরিমানা

প্রকাশিত :  ০৫:৪১, ১৫ মে ২০২৫

শেয়ার কারসাজির দায়ে সাকিব আল হাসানের ২.২৬ কোটি টাকা জরিমানা

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আলোচিত কোম্পানি সোনালী পেপারের শেয়ার দাম কারসাজির জন্য বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ২ কোটি ২৬ কোটি টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

কমিশনের এপ্রিল মাসের এনফোর্সমেন্ট অ্যাকশন রিপোর্ট অনুসারে, পর পর দুই পর্যায়ে সোনালী পেপারের শেয়ার সমন্বিত কারসাজির জন্য সাকিব আল হাসানসহ ১৩ জনকে মোট ২৯ কোটি টাকা জরিমানা করেছে বিএসইসি।

জরিমানার তালিকায় আরও রয়েছেন—আবুল খায়ের হিরু, কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাতবর, ডিআইটি কো-অপারেটিভ, কাজী ফুরিদ হাসান, কাজী ফুয়াদ হাসান, কনিকা আফরোজ, সাজেদ মাতবর, মোহাম্মদ বাশার, মোনার্ক হোল্ডিংস, মোনার্ক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস, সফটভিয়ন এবং জাভেদ এ মতিন।

শেয়ার কারসাজি ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ অক্টোবরের মধ্যে এবং একই বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সোনালী পেপারের শেয়ারের দাম ১২৬ শতাংশ বেড়ে ৯৫৭ টাকা ৭০ পয়সায় তোলা হয়। সিন্ডিকেটটি ৩৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা রিয়েলাইজড মুনাফা অর্জন করেছে বলে জানা গেছে এবং অতিরিক্ত ৫৫ কোটি টাকা আন-রিয়ালাইজড মুনাফা করেছে।

বিএসইসির তদন্তে প্রমাণ মিলেছে, একাধিক ব্যক্তি সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করে শেয়ারমূল্য কৃত্রিমভাবে বাড়াতে একটি সিন্ডিকেট গঠন করেছিল।

কমিশনে জমা দেওয়া এক লিখিত বিবৃতিতে আবুল খায়ের হিরু সাকিব আল হাসানের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, \"এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। এটি ইচ্ছাকৃত ছিল না, বরং অজ্ঞতার কারণে হয়েছে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, ভবিষ্যতে শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে আমি আরও সতর্ক থাকব।\"

গত এপ্রিল মাসে শেয়ারবাজারে কারসাজির ঘটনায় চারটি কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে বিএসইসি। এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, সোনালী পেপার, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও জেমিনি সি ফুড—এই চার কোম্পানির শেয়ারদরের কৃত্রিম বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৪ জনকে মোট ৫৪ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এর মধ্যে, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির দায়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সায়াদুর রহমান ও তার সহযোগীদের ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই অপরাধে নূরজাহান বেগম ও তার সহযোগীদের ওপর ৭৬ লাখ টাকার জরিমানা আরোপ করা হয়।

জেমিনি সি ফুডের শেয়ার কারসাজির জন্য পাঁচজনকে মোট ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারমূল্য কৃত্রিমভাবে বাড়ানোর দায়ে আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ১৯ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

অর্থনীতি এর আরও খবর

img

শেয়ারবাজারে কারসাজি: সাকিবসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশিত :  ১৪:৫০, ১৭ জুন ২০২৫

শেয়ারবাজার থেকে শতকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

মামলার বাদি দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন। 

এ মামলার প্রধান আসামি সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক ও শেয়ার বাজারের আলোচিত ব্যক্তি মো. আবুল খায়ের (হিরু)। দ্বিতীয় আসামি সাকিব আল হাসান। অন্যান্য আসামিরা হলেন- কাজি সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজি ফুয়াদ হাসান, কাজি ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ূন কবির ও তানভীর নিজাম।

দুদক জানায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দ্রুত আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে শেয়ারবাজারে প্রচলিত আইন ও বিধি (সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ১৭ ধারা) লঙ্ঘন করেছেন।

তারা নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিও একাউন্টে অবৈধভাবে সিরিজ ট্রানজেকশন,  প্রতারণামূলক একটিভ ট্রাডিং, গেম্বলিং, ও স্পেকুলেশন-এর মাধ্যমে শেয়ারবাজারে কৃত্রিমভাবে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ারের দাম বৃদ্ধি করে বাজারে কারসাজি করেন। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা প্রতারিত হয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হারান।

এই পদ্ধতিতে ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা আত্মসাৎ করা হয়, যা ‘অপরাধলব্ধ অর্থ’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত। এর মধ্যে আবুল খায়ের (হিরু) তার স্ত্রী কাজি সাদিয়া হাসানের সহায়তায় ২৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার ১৮৫ টাকার উৎস গোপন করে বিভিন্ন খাতে স্থানান্তর করেন।

এছাড়া তার নামে পরিচালিত ১৭টি ব্যাংক একাউন্টে মোট ৫৪২ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ টাকার অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

দুদক জানায়, আসামি মো. আবুল খায়ের (হিরু) কর্তৃক শেয়ার বাজারে কারসাজিকৃত প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স লি., ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লি. এবং সোনালী পেপারস লি.-এর শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করেন। এতে সাকিব মার্কেট ম্যানুপুলেশনে সরাসরি সহায়তা করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ২ কোটি ৯৫ লাখ ২ হাজার ৯১৫ টাকা রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইনের নামে শেয়ার বাজার থেকে আত্মসাৎ করেন।

দুদক জানায়, শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হওয়ায় কমিশনের অনুমোদনক্রমে আসামিদের বিরুদ্ধে  ২০১২ এর ৪ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/১২০(বি)/১০৯ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

দুদক জানিয়েছে, তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।